অথবা, এফ. গিভিংস (F. Giddigngs) ও অন্যান্য সমাজবিজ্ঞানীর গোষ্ঠীর ধরণ আলোচনা কর।
অথবা, এফ. গিডিংস (F. Giddigngs) ও অন্যান্য সমাজবিজ্ঞানীর গোষ্ঠীর প্রকৃতি বর্ণনা কর।
উত্তর৷ ভূমিকা : মানুষকে সামাজিক জীব বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে। সমাজবদ্ধভাবে বাস করতে হলে প্রয়োজন হলো দলগত জীবন বা গোষ্ঠী জীবন। সামাজিক জীব মূলত গোষ্ঠী জীবনের মাধ্যমে গড়ে উঠে। বিভিন্ন সমাজবিজ্ঞানীগণ গোষ্ঠীর বা দলের একটি আলাদা বৈশিষ্ট্য তুলে ধরেছেন।
এফ.গিডিংস (F.Giddigngs): এফ. গিডিংস গোষ্ঠীকে দু’ভাগে ভাগ করেছেন যথা : (ক) বংশগতিক গোষ্ঠী ও (খ) সমাবিষ্ট গোষ্ঠী ।
ক. বংশগতিক গোষ্ঠী (Genetic group) : যে গোষ্ঠী প্রকৃতিগতভাবে অনৈচ্ছিক, সহজাত এবং ব্যক্তির ইচ্ছা- অনিচ্ছার উপর নির্ভরশীল নয় তাকে বংশগতিক গোষ্ঠী বলে। যেমন- পরিবার, রেসিয়াল (Racial group) গোষ্ঠী,
এথনিক গোষ্ঠী ইত্যাদি।
খ. সমাবিষ্ট গোষ্ঠী (Congregate group): যে গোষ্ঠী প্রকৃতিগতভাবে ঐচ্ছিক এবং যে গোষ্ঠীর সদস্যরা গোষ্ঠী গঠন করা ও ভেঙে দেওয়া উভয়ই তাদের ইচ্ছার উপর নির্ভরশীল তাকে সমাবিষ্ট গোষ্ঠী বলে। যেমন- রাজনৈতিক দল, ট্রেড ইউনিয়ন।
কোন কোন সমাজ মনোবিজ্ঞানী গোষ্ঠীকে আবার দু’ভাগে ভাগ করেছেন। যথা : (১) মুক্ত দল বা গোষ্ঠী (Open group) ও বদ্ধ দল বা গোষ্ঠী (Closed group)।
১. মুক্ত দল বা গোষ্ঠী (Open group) : যে গোষ্ঠী নতুন সদস্যদের বরণ করে নেয় এবং যে কেউ যে কোন সময় এ গোষ্ঠীর সদস্য হতে পারে তাকে মুক্ত গোষ্ঠী বলে। যেমন- জনতা।
২. বদ্ধ দল বা গোষ্ঠী (Closed group) : যে গোষ্ঠীর সদস্যদের চারদিকে দেয়ালের মতো আবরণ থাকে এবং ইচ্ছা করলেই যে কেউ এর সদস্য হতে পারে না তাকে বদ্ধ গোষ্ঠী বলে। যেমন- জাতিবর্ণ গোষ্ঠী, বিপ্লবীদের সুপ্ত সমিতি ইত্যাদি।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, গোষ্ঠীর শ্রেণিবিভাজন সর্বজনস্বীকৃত এবং সর্বজনগ্রাহ্য না হলেও এ বিভাজনগুলো পরস্পর বিরোধী নয়। কোন একটি গোষ্ঠী কোন এক শ্রেণিবিভাগের অন্তর্ভুক্ত হলেও এটি অন্য একটি গোষ্ঠীরও অন্তর্ভুক্ত হতে পারে।