উত্তর : ভূমিকা : ইলিয়াস শাহী বংশের প্রতিষ্ঠাতা শামসুদ্দীন ইলিয়াস শাহ। একডালা দুর্গের সাহায্যে ইলিয়াস শাহ শত্রুর মোকাবেলা করতেন। অসাধারণ দক্ষতা ও কৃতিত্বের পরিচয় দিয়ে বাংলার ইতিহাসে ইলিয়াস শাহ চিরস্মরণীয় হয়ে আছেন। একডালা দুর্গ তার কৃতিত্বের স্বাক্ষর বহন করতো।
একডালা দুর্গ : একডালা দুর্গ মধ্যযুগের বাংলার একটি মাটির দুর্গ। বার বার আক্রমণ সত্ত্বেও দিল্লির সুলতান ফিরোজশাহ
তুঘলক এটি অধিকার ক্রতে ব্যর্থ হন। ফিরোজ শাহের আগমনের সময় শামসুদ্দীন ইলিয়াস শাহ এবং তার পুত্র সিকান্দার শাহ এই দুর্গে অবস্থান নিয়ে দিল্লির সুলতানের সকল পরিকল্পনা ব্যর্থ করে দেন। আলাউদ্দীন হোসেন শাহ তার রাজধানী গৌড় হতে
একডালা স্থানান্তর করলে দুর্গটির গুরুত্ব আরও বৃদ্ধি পায়। দুর্গটির শনাক্তকরণ বিষয়ে পণ্ডিত মহলে মতবিরোধ রয়েছে। সিরাত-ই-ফিরোজশাহী অনুসারে একডালা দুর্গটি গঙ্গার একটি শাখা দ্বারা পরিবেষ্টিত। শামস-ই-সিরাজ আফিফ মাটির এই দুর্গটির
অবস্থান একটি দ্বীপে বলে উল্লেখ করেছেন। জিয়াউদ্দীন বারণীয় মতে একডালা দুর্গটি একদিকে পানি এবং অন্যদিকে জঙ্গল দ্বারা
পরিবেষ্টিত ছিল। আধুনিক পণ্ডিতদের মধ্যে ওয়েস্টম্যাশ সর্বপ্রথম দিনাজপুর জেলার ধনজয় পরগনাস্থ একডালা ব্যাম এর সাথে
দুর্গটির অভিন্ন বলে শনাক্ত করেন। গ্রামটি মালদহপুর জেলায় পান্ডুয়া হতে ৩৭ কি.মি. উত্তরে গৌড় হতে ৬৮ কি.মি. পশ্চিমে
ঘোড়াঘাটের ২৪ কি.মি. পশ্চিমে টাঙ্গল নদীর তীরে অবস্থিত। মেজর রেভাটি দিনাজপুর জেলায় দেবকোটকে একডালার সাথে অভিন্ন বলে মনে করেন। মাটির এই একডালা দুর্গের পক্ষে দিল্লি সুলতানদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গড়ে তোলা সম্ভব হয়েছিল কেবল । ভূ-রাজনৈতিক বা সুবিধাজনক অবস্থিতির কারণে দুর্গের
চারপাশে ছিল জলাপূর্ণ পরিখা ও জঙ্গল। যার জন্য দিল্লির সেনাবাহিনী কাছে ঘেষতে পারেনি।
উপসংহার: পরিশেষে বলা যায় যে, বাংলার শাসক আলাউদ্দিন শাহকে হত্যা করে শামসুদ্দীন ইলিয়াস শাহ সুলতান-
ই-বাংলা, শাহ-ই-বাংলা নাম ধারণ করে বাংলায় সিংহাসনে বসেন। শামসুদ্দিন ইলিয়াস শাহ দিল্লিয় সুলতান ফিরোজ শাহ তুঘলকের আক্রমণ প্রতিহত করেছিলেন ।


