উত্তর : ভূমিকা : ইলিয়াস শাহী বংশের আবির্ভাব বাংলার ইতিহাসে এক নবযুগের সূচনা করে। শামসুদ্দিন ইলিয়াস শাহ
বাংলায় যে রাজবংশ প্রতিষ্ঠা করেন তাকে ইলিয়াস শাহী বংশ বলা হয়। এ রাজবংশটি ১৩৪২-১৪১৪ খ্রিস্টাব্দ এবং ১৪৪২- ১৪৮৭ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত শাসনকার্য পরিচালনা করেন। ইলিয়াস শাহী বংশ দীর্ঘ প্রায় ১১৭ বছর শাসনকার্য পরিচালনা করে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে। ইলিয়াস শাহী বংশের অবদান : নিম্নে ইলিয়াস শাহী বংশের অবদান আলোচনা করা হলো :
১. স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা : স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় ইলিয়াস শাহী বংশের শাসকদের অবদান অপরিসীম। ইলিয়াস শাহী বংশ বাংলার রাষ্ট্রীয় স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের যে ঐতিহ্য তা সাফল্যের সাথে বহন করে এবং সুদৃঢ় করে।
২. বাংলাকে একত্রিতকরণ : বাংলাকে একত্রিতকরণে ইলিয়াস শাহী বংশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ইলিয়াস শাহী
বংশের উত্থানের পূর্বে বাংলা বিভিন্ন অংশে বিভক্ত ছিল। বিভক্ত বাংলাকে তারা একত্র করে রাষ্ট্রীয় ঐক্য পুনরুদ্ধার করেন।
৩. শাসন ব্যবস্থার ক্ষেত্রে অবদান : ইলিয়াস শাহী বংশ শাসন ব্যবস্থার ক্ষেত্রে যথেষ্ট অবদান রাখে। তারা প্রতিভাবান লোকদের প্রশাসনের নিয়োগ দেন। ইলিয়াস শাহী বংশের
সুলতানগণ ধর্ম নিরপেক্ষ প্রশাসন স্থাপনের নির্দেশনা রেখে যান।
৪. শিক্ষার ক্ষেত্রে অবদান : শিক্ষাক্ষেত্রে ইলিয়াস শাহী বংশ উল্লেখযোগ্য অবদান রাখেন। শিক্ষা ক্ষেত্রে ইলিয়াস শাহী বংশ
গৌরবের অধিকারী। মুসলমানদের শিক্ষার উন্নতির জন্য তারা মাদ্রাসা খানকাহ প্রভৃতি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তৈরি করেন। বাংলা ভাষায়
সংস্কৃতি মহাকাব্য অনুবাদ তাদের শিক্ষার ক্ষেত্রে প্রধান কৃতিত্ব ।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, ইলিয়াস শাহী বংশ বাংলায় বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদান রেখেছেন। তারা বাংলার স্বাধীনতা ও
সার্বভৌমত্ব রক্ষার যেসব ব্যবস্থা নিয়েছিলেন তা আজো ইতিহাসে চিরস্মরণীয়। নিঃসন্দেহে ইলিয়াস শাহী বংশের রাজত্বকাল বাংলার
ইতিহাসে একটি গৌরবময় অধ্যায়ের সূচনা করেছিল।


