ইবনে বতুতার পরিচয় দাও।

উত্তর ভূমিকা : সুদূর আফ্রিকা মহাদেশ থেকে আগত ইবনে বতুতা যিনি ইতিহাসের বিখ্যাত পর্যটকদের মধ্য অন্যতম। দেশ ভ্রমণের প্রবল ইচ্ছা, আগ্রহ তাকে মানসিকভাবে ব্যাপক সহযোগিতা করেছিল। সুলতানি আমলে ১৩৩৩ সালে মুহাম্মদ- বিন-তুঘলকের আমলে ভারতবর্ষে আগমন করেন। মাত্র ২১ বছর বয়সে তিনি নিজ মাতৃভূমি ত্যাগ করেন।
→ ইবনে বতুতার পরিচয় : ইবনে বতুতা একজন বিশ্ববিখ্যাত পরিব্রাজক ছিলেন। নিম্নে ইবনে বতুতার পরিচয় তুলে ধরা হলো :
পরিচয় : ইবনে বতুতার আসল নাম মুহাম্মদ আবু আব্দুল্লাহ্ এবং তার ডাক নাম ছিল ইবনে বতুতা। তিনি ১৩০৪ সালে মরোক্কোর তাঞ্জিনিয়া শহরে জন্মগ্রহণ করেন। মূলত ইবনে বতুতা নামেই তিনি পৃথিবীতে সমধিক পরিচিত।
২. দেশ ভ্রমণের স্পৃহা : ইবনে বতুতা ভ্রমণ পিপাসু ব্যক্তি ছিলেন। মহান আল্লাহর অমীয়বাণী, রাসূলের পবিত্র হাদীস এর উপর
অনুপ্রাণিত হয়ে তিনি ভ্রমণ পিপাসু ব্যক্তিতে পরিণত হন। পবিত্র মক্কাভূমিতে প্রথম ভ্রমণ করে পৃথিবীকে জানার আগ্রহ প্রকাশ করেন।
৩. ভারতবর্ষ আগমণ : অনেক নদী, সাগর, বন-জঙ্গল, শহর-নগর, জনপদ অতিক্রম করে ১৩৩৩ সালে মুহাম্মদ-বিন- তুঘলকের শাসনামলে ভারতবর্ষে আগমন করেন। ১৩৪৫ সাল পর্যন্ত তিনি ভারতবর্ষে অবস্থান করেন।
৪. দায়িত্বপালন : মুহাম্মদ-বিন-তুঘলকের শাসনামলে ইবনে বতুতা দীর্ঘ ৮ বছর বিচারক হিসেবে দ্বায়িত্ব পালন করেন। মূলত
যোগ্যতার খাতিরে তাকে এ দায়িত্বে অধিষ্ঠিত করা হয়েছিল।
৫. বিখ্যাত গ্রন্থ রচনা : ইবনে বতুতার বিখ্যাত রচনাগ্রন্থ হলো কিতাবুল রেহালা। ভারতবর্ষে দীর্ঘ ৮ বছর অবস্থান করে সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক অবস্থার সাথে ঘনিষ্ঠভাবে পরিচিত হন। তার এই অভিজ্ঞতার আলোকে তিনি ইতিহাসের বিখ্যাত গ্রন্থ, কিতাবুল রেহালা রচনা করেন; যা সুলতানি
আমলের ইতিহাসে উৎস হিসেবে যথেষ্ট ভূমিকা রাখে।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, ইবনে বতুতা, মুহাম্মদ- বিন-তুঘলকের রাজত্বে দীর্ঘ ৮ বছর বিচারকের দায়িত্ব পালনকালে
তিনি যে মেধা, যোগ্যতা এবং মননশীলতার পরিচয় দিয়েছেন, সত্যই তা অনেক প্রশংসার দাবি রাখে। তাই একজন পরিব্রাজক হয়েও তিনি ভারতবর্ষের ইতিহাস অমরত্ব লাভ করেছেন।