Download Our App

আল-গাজালিকে হুজ্জাতুল ইসলাম বলা হয় কেন?

অথবা, আল-গাজালিকে ইসলামেয় রক্ষক বলা হয় কেন?
অথবা, আল-গাজালিকে হুজ্জাতুল ইসলাম বলার কারণ কী?
অথবা, কী কারণে আল-গাজালিকে ইসলামের রক্ষক বলার কারণ লেখ?
উত্তর ভূমিকা :
আল গাযালি ছিলেন একাধারে ধর্মতাত্ত্বিক, দার্শনিক, শিক্ষাবিদ, কবি, সুফি সাধক ও সমাজ সংস্কারক। তিনি ইসলামের সর্বশ্রেষ্ঠ ব্যাখ্যা এবং রক্ষক হিসেবে খ্যাতি লাভ করেন। আল-গাযালির দার্শনিক চিন্তাধারার মূল লক্ষ্য ছিল ইসলামকে ক্রমবর্ধমান অবিশ্বাস হতে রক্ষা করা। ইমাম গাযালি যুক্তির দ্বারা এবং নিজের ইমামি শক্তির দ্বারা.মুসলিম সমাজকে জাগ্রত করতে প্রয়াসী ছিলেন।.নগরীতে জন্মগ্রহণ
আল-গাযালি : আল-গাযালি ১০৫৮ খ্রিস্টাব্দে ইরানের খোরাসান নামক প্রদেশের অন্তর্গত
করেন। তাঁর প্রকৃত নাম আবু হামিদ মোহাম্মদ ইবনে মোহাম্মদ ইবনে তাউস আহমদ আল-তুসী আল শাফী আল নিশাপুরী। অনেকে মনে করেন তার জন্মপল্লী গাজ্জাল এর নামানুসারে তিনি গাযালি উপাধি ধারণ করেন। আবার কোন কোন গবেষক মনে করেন, গাযালি তার বংশগত উপাধি। তাঁর পারিবারিক ব্যবসায় ছিল পশমের। বংশানুক্রমিক পেশার কারণে তাকে গাযালি বলা হয় বলে অনেকের ধারণা।
আল-গাযালিকে হুজ্জাতুল ইসলাম বলার কারণ : মুসলিম ধর্মীয় দার্শনিক চিন্তাধারায় আল-গাযালি এক অনন্য স্থান দখল করে আছে। তিনি ইসলামের প্রমাণ বা Proof of Islam বা হুজ্জাতুল ইসলাম হিসেবে ভূষিত ও অলংকৃত হয়ে থাকেন । ধর্মতাত্ত্বিক, দার্শনিক ও রাজনৈতিক দিক থেকে মুসলমানেরা যখন এক চরম সংকটময় অবস্থায় নিমজ্জিত ছিল সে যুগ সন্ধিক্ষণে প্রজ্ঞার প্রবল শক্তি এবং ইসলামের সত্যবাণী নিয়ে তাঁর আবির্ভাব। এদিক বিবেচনা করে আল-সুফি তাকে
মূল্যায়ন করতে গিয়ে বলেছেন, যদি মুহাম্মদ (স) এর পর আর কোন নবীর আবির্ভাব ঘটতো তবে সম্ভবত আল-গাযালি
হতেন সে ব্যক্তি। [মুসলিম দর্শন : চেতনা ও প্রবাহ, আব্দুল হালিম, পৃঃ ১৮৫] তাঁর গভীর ধর্মীয় জ্ঞান যুক্তিবিদ্যায় পারদর্শিতা এবং সুখবোধ্য লেখনি ও দর্শনে ব্যপকভাবে প্রভাব রাখতে সক্ষম হয়। ইসলামের মৌলিকত্ব অক্ষুণ্ণতা বজায় রাখার ক্ষেত্রে কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের জন্য তাকে হুজ্জাতুল ইসলাম বলা হয়।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, মুসলিম বিশ্বে গাযালির গুরুত্ব অপরিসীম। মুসলিম সমাজে এককভাবে তাঁর.প্রভাব সম্ভবত অন্য যে কোন মুসলিম স্কলাস্টিক ধর্মবিদদের চেয়ে অনেক বেশি। আল-গাযালির শ্রেষ্ঠত্ব এখানেই যে,.ডেকার্ট থেকে শুরু করে বার্গসো পর্যন্ত সমগ্র পাশ্চাত্য দর্শনের প্রধান বিষয় তিনি পূর্বেই আলোচনা করে গেছেন।