উৎস : ব্যাখ্যেয় অংশটুকু প্রকৃতির কবি জীবনানন্দ দাশ বিরচিত ‘বনলতা সেন’ শীর্ষক কবিতা থেকে চয়ন করা হয়েছে।
প্রসঙ্গ : কবির ক্লান্ত মন কীভাবে কোথায় দু’দণ্ড শান্তির সন্ধান পেয়েছিল সে সম্পর্কে এ বর্ণনা দেয়া হয়েছে।
বিশ্লেষণ : কবির প্রেমিক মন হাজার বছর ধরে পৃথিবীর পথে বিচরণ করে চলছে। কাঙ্ক্ষিত নারীর সান্নিধ্য লাভের আশায় সুদূর অতীতের গর্ভ থেকে বর্তমানের পাদপীঠ পর্যন্ত তিনি শান্তির সন্ধান করেছেন। সিংহল সমুদ্র, মালয় সাগর, অশোক বিশ্বিসার জগৎ ও বিদর্ভ নগরী পরিভ্রমণ করে তিনি ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন। এ সুদীর্ঘ পথ পরিক্রমায় তিনি কোথাও শান্তি খুঁজে পাননি, কোথাও দেখা হয়নি তাঁর প্রেমিকার সাথে। অবশেষে জীবন সমুদ্রের সফেন তরঙ্গে দুলতে দুলতে তিনি বাংলাদেশের চিরপরিচিত নাটোর উপস্থিত হয়ে তাঁর দয়িতার সন্ধান পেয়েছেন। নাটোরের কল্পিত বনলতা সেন তাঁকে দু’দণ্ডের জন্য সুখ ও শান্তি দিতে পেরেছে। পুরুষের শ্রমক্লান্ত মন শান্তি পায় তার কাঙ্ক্ষিত নারীর বাহুবন্ধনে। পুরুষ অনাদিকাল থেকে এ শান্তির পশ্চাতে ছুটে চলেছে। নীড়হারা পুরুষ নীড়ের সন্ধানে সারা পৃথিবী তোলপাড় করে ফিরছে। মানুষের জীবনের সার্থকতা ওখানেই। ঐ নারীর প্রেম, ভালোবাসার জন্যই তার এত পথ চলার বিড়ম্বনা।
মন্তব্য: দু’দণ্ডের শান্তি প্রত্যাশী কবি মন নাটোরে এসে তার কাঙ্ক্ষিত নারীসত্তার সন্ধান পেয়ে ক্লান্তি দূর করেছেন। চিরপরিচিত প্রতীকী নাটোর তার শেষ আশ্রয়।