উৎস : বক্ষ্যমাণ অংশটুকু কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘গল্পগুচ্ছ’ গ্রন্থের অন্তর্গত ‘একরাত্রি’ শীর্ষক ছোটগছোটগল্প থেকে চয়ন
প্রসঙ্গ : ঝঞ্ঝাবিক্ষুব্ধ রাতে নায়ক সুরবালাকে কিছু সময়ের জন্য কাছে পেয়েছিল। চিরদিনের জন্য না হলেও কিছু সময়ের জন্য সুরবালাকে কাছে পাওয়ার অনুভূতি আলোচ্য অংশে ব্যক্ত হয়েছে।
বিশ্লেষণ : রামলোচন রায়ের বাড়িতে গল্প করার সময় নায়ক সুরবালার অস্তিত্ব সম্পর্কে নিশ্চিত হয়। তার হৃদয়ে আবার নতুন করে স্থান করে নেয় সুরবালা। শৈশবের সেই মধুময় দিনগুলো নাড়া দিয়ে যায় তার স্মৃতিতে। যে সুরবালাকে সে ইচ্ছে করলেই ‘, সারাজীবন তার কাছে রাখতে পারতো এখন সে অন্যের ঘরের ঘরণী। তার সাথে কথা বলাতো দূরের কথা, তাকে একনজর দেখাও এখন পাপ। এ সমস্ত ভেবে যখন নায়ক নিজেকে ক্ষতবিক্ষত করতে থাকে তখনই এল সেই অবিস্মরণীয় রাত। সেদিন সোমবার সকাল হতে আকাশ মেঘাচ্ছন্ন। রাত্রি একটা দেড়টার দিকে বানের জল ধেয়ে এল। নায়ক ঘর থেকে বেরিয়ে আশ্রয় নিল পুকুর পাড়ের একটি উঁচু অংশে। অপরদিক থেকে সুরবালাও এসে আশ্রয় নিল নায়কের কাছাকাছি। বিচ্ছেদ ভারাক্রান্ত দুটি হৃদয় প্রশ্বাসের কাছাকাছি থেকেও কেউ কাউকে কুশল পর্যন্ত জিজ্ঞাসা করতে পারল না। তারপর ঝড় থেমে গেলে জল নেমে গেলে যে যার গন্তব্যে ফিরে যায়। নায়কের হৃদয়ে সেই রাত্রি মহামিলনের মহানন্দ হয়ে রয়ে গেল।
মন্তব্য: বিরহের মাঝে নায়ক তার প্রেমকে বাঁচিয়ে রাখতে প্রয়াসী হয়েছে।