উৎস : ব্যাখ্যেয় গদ্যাংশটুকু খ্যাতিমান সাহিত্যিক বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় বিরচিত ‘বাঙ্গালা ভাষা’ শীর্ষক প্রবন্ধ থেকে চয়ন করা হয়েছে।
প্রসঙ্গ : এখানে প্রাবন্ধিক সর্বোৎকৃষ্ট রচনা কিরূপ হওয়া উচিত সে সম্পর্কে তাঁর মূল্যবান বক্তব্য প্রসঙ্গে এ কথা বলেছেন।
বিশ্লেষণ : ‘বাঙ্গালা ভাষা’ প্রবন্ধে বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় গদ্যের ভাষা কেমন হওয়া উচিত সে সম্পর্কে বিস্তৃত আলোচনা করেছেন। তিনি প্রাচীনপন্থি ও নব্যপন্থিদের মতামতের খারাপ দিকসমূহকে তীব্র ভাষায় সমালোচনা করেছেন এবং ভালো দিকসমূহের ঘৃণা প্রদর্শনকে তিনি মূর্খতা বলেছেন ও প্রচলিত সংস্কৃত শব্দ গ্রহণে নব্যপন্থিদের আপত্তিকে বাড়াবাড়ি বলে আখ্যায়িত করেছেন। উভয়পক্ষের অভিমতের গঠনমূলক ও যথার্থ সমালোচনা করে তিনি নিজের সুচিন্তিত অভিমত তুলে ধরেছেন। তাঁর মতে লিখনের ভাষা সর্বদা এক হতে পারে না। উভয়পক্ষের ভালোমন্দ বিচার বিশ্লেষণ করে বঙ্কিমচন্দ্র এ সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন যে, বিষয় অনুসারেই রচনার ভাষা নির্ধারিত হওয়া উচিত। রচনার প্রধান ও প্রথম গুণ হলো স্পষ্টতা ও সরলতা। যে রচনা সকলেই বুঝতে পারে এবং পড়ামাত্র যার অর্থ বুঝা যায় সে রচনাই সর্বোৎকৃষ্ট রচনা। যে ভাষা সকলে বুঝে সে ভাষাতেই সাহিত্য রচনা করতে হবে। অর্থহীন শব্দ ও ভাষা সর্বদা পরিত্যাজ্য।
মন্তব্য : রচনার ভাষা হতে হবে বিষয়ানুগ। মূল বিষয়কে সুস্পষ্ট করে তোলার জন্য যথোপযুক্ত শব্দ ব্যবহার একান্তই বাঞ্ছনীয়। যে রচনা পড়ামাত্রই সকলে বুঝতে পারে সে রচনাই সর্বোৎকৃষ্ট।