উত্তর : ভূমিকা : মুঘল যুগের সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় যে সকল ঐতিহাসিক ইতিহাস রচনা করেছেন তাদের মধ্যে আবুল
ফজল ছিলেন অগ্রগণ্য। সরকারি ও বেসরকারি তথ্যাবলির সাহায্যে তথ্যসমৃদ্ধ ও বস্তুনিষ্ঠ ইতিহাস রচনা ইতিহাসে বিশেষ
স্থান দখল করে আছে।
১. আবুল ফজলের সংক্ষিপ্ত পরিচয় : ঐতিহাসিক আবুল ফজল ১৫৫১ সালের ১৪ জানুয়ারি আগ্রায় জন্মগ্রহণ করেন।
তিনি উত্তর প্রদেশের অধিবাসী শেখ মোবারকের দ্বিতীয় পুত্র ছিলেন। এছাড়া তিনি মুঘল আমলের সুপ্রসিদ্ধ কবি ফিজিরের
কনিষ্ঠ ভ্রাতা ছিলেন। আবুল ফজল ১৫ বছর বয়সে তার শিক্ষার সমাপ্তি টানেন। এরপর ২০ বছরের সময় শিক্ষকতা শুরু করেন।
১৫৭৪ সালে আকবরের রাজদরবারের সভাসদ হন। স্বীয় মেধা, প্রজ্ঞা ও প্রতিভা গুণে তিনি আকবরের প্রিয় পাত্র হয়ে ওঠেন।
তিনি রাজ লেখক রাজনীতিবিদ, কূটনীতিক, সেনাপতি ও ঐতিহাসিক হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেন। তবে ঐতিহাসিক হিসেবেই তিনি সর্বাধিক পরিচিত। ১৬০২ সালে মাত্র ৫১ বছর
বয়সে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
২. আবুল ফজলের ইতিহাস গ্রন্থ : আবুল বেশ কয়েকটি গ্রন্থ রচনা করলেও তার অনুপম সৃষ্টি ‘আকবার নামা’ গ্রন্থটি কালজয়ী ইতিহাস গ্রন্থ হিসেবে প্রসিদ্ধ । তিন খণ্ডে লিখিত গ্রন্থটির
প্রথম দুটি খণ্ড ছিল বর্ণনামূলক ও শেষ খণ্ড ছিল তথ্যমূলক যা ‘আইন-ই-আকবরী’ নামে পরিচিত। সম্রাট আকবরের শাসনামলে
লিখিত এ গ্রন্থটি তাকে ঐতিহাসিক খ্যাতি এনে দিয়েছে।
৩. ইতিহাস সম্পর্কে আবুল ফজলের দৃষ্টিভঙ্গি : আবুল ফজল বলেন, ইতিহাস হলো অজানাকে জানার সর্বোত্তম মাধ্যম।
একমাত্র ইতিহাসই কালের গর্ভে বিলিন হয়ে যাওয়া মানুষের কীর্তি ও মূল্যবান প্রতিভাকে বাঁচিয়ে রেখে মানুষকে নতুন চেতনায় উজ্জীবিত করতে সক্ষম।
উপসংহার : বৈচিত্র্যময় এ পৃথিবীতে যারা নিজ প্রতিভায় দক্ষতায় ও কলাকৌশলের দ্বারা ইতিহাসের স্বর্ণাক্ষরে নিজের নাম লিপিবদ্ধ করে গেছেন আবুল ফজল তাদের মধ্যে অন্যতম। তার।কালজয়ী গ্রন্থ ‘আকবরনামা’।তাকে মধ্যযুগের ঐতিহাসিকদের মধ্যে শ্রেষ্ঠত্বের আসনে অধিষ্ঠিত করেন।