অথবা, আদর্শ নারী বলতে কাকে বুঝানো হয়?
অথবা, আদর্শ নারী বলতে তুমি যা জান সংক্ষেপে লিখ।
অথবা, শ্রেষ্ঠত্বের মানদণ্ডে নারী সম্পর্কিত ধারণা সংক্ষেপে আলোচনা কর।
অথবা, আদর্শ নারী কাকে বলা হয়?
উত্তরা৷ ভূমিকা : আদর্শ নারী সম্পর্কিত ধারণা সৃষ্টি হয়েছিল প্রাচীন গ্রিসে। পুরুষের তুলনায় নারীকে যোগ্যতার মানদণ্ডে বিচার করা হতো এবং শ্রেষ্ঠত্ব আরোপ করা হতো। কিন্তু যে নৈপুণ্য ও দক্ষতা অর্জন করতে হতো তা নারীর পক্ষে সম্ভব ছিল না। আর এ অসম্ভবই নারীকে অধস্তন করে রেখেছে হাজার বছর ধরে।
শ্রেষ্ঠত্বের মানদণ্ড : গ্রিক সমাজে নারীর শ্রেষ্ঠত্বের মানদণ্ড নির্ভর করতো নারীর পুরুষসুলভ আচরণের উপর। পুরুষেরা সাহসিকতা, যুদ্ধ নৈপুণ্য, কর্মদক্ষতা ইত্যাদিতে পারঙ্গম ছিল। কিন্তু এগুলো অর্জনের জন্য যে সম্পদ সুযোগ, অবসর প্রয়োজন তা নারীদের ক্ষেত্রে ছিল না। ফলে নারীরা পিছিয়ে পড়ে এবং গৃহকর্মে আবদ্ধ হয়ে পড়ে। গ্রিক পুরুষরা মনে করতো, নারীদের ভালো গুণগুলো হলো- সতীত্ব, সৌন্দর্য, উলের তৈরি পরিধেয় বস্ত্র বুনন ইত্যাদি। তারা মনে করতো এগুলো গৃহেই চর্চা করা সম্ভব এবং এর জন্য বাহ্যিকতা বা বাইরের জগতে প্রতিযোগিতার প্রয়োজন নেই।
আধুনিক সমাজে অর্থনীতি, রাজনীতি, ধর্ম ইত্যাদি নারীকে সতী হিসেবে দেখতে অভ্যস্ত হয়েছে। তাই আদর্শ নারী বলতে এখনো মনে করা হয় যারা গৃহকর্মে কুশল, সন্তান ধারণ ও লালনপালনে যত্নশীল, স্বামীর সেবায় অন্তপ্রাণ এবং সকল অন্যায় অপবাদ সয়ে নিতে পারে তারাই শ্রেষ্ঠ নারী বা আদর্শ নারী। প্রতিবাদী নারী মানেই পুরুষের চোখে অগ্রহণযোগ্য নারী Okiss মনে করতেন, “আদর্শ নারী কম শুনবে, যথাসম্ভব কম দেখবে এবং পারতপক্ষে কোনো প্রশ্ন করবে না।”
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, এভাবেই নারীর প্রতি শ্রেষ্ঠত্ব আরোপ করা হয়েছে এবং আদর্শ হিসেবে স্থির করা হয়েছে। আধুনিক নারী যদিও এগুলো গ্রহণ করে না তবুও এগুলো থেকে পুরুষতন্ত্রকে বিচ্ছিন্ন করা সম্ভব হয়ে উঠছে না। তাই অবশ্যই আদর্শ নারীর ধারণা পরিবর্তিত হওয়া প্রয়োজন।