আত্মীকরণ কাকে বলে?

অথবা, আত্মীকরণ কী?
অথবা, আত্মীকরণ বলতে কী বুঝ?
অথবা, আত্মীকরণের সংজ্ঞা দাও।
উত্তর৷ ভূমিকা : আত্মীকরণ একটি পারস্পরিক ক্রিয়া। বিপরীতধর্মী দুই বা ততোধিক সংস্কৃতি বা ব্যক্তির সামঞ্জস্য বিধানকে আত্মীকরণ বলে।
আত্মীকরণ : সামাজিক বা দলীয় জীবনে প্রত্যেকেই নিজ নিজ বৈশিষ্ট্য বজায় রেখে চলতে চায়। যখন বিভিন্ন ব্যক্তির নিজস্ব স্বাতন্ত্র্য অন্যের উপর প্রভাব বিস্তার করে তখন জীবনে দ্বন্দ্ব দেখা দেয়। সেজন্য প্রয়োজন প্রত্যেক ব্যক্তির বা গোষ্ঠীর আদর্শ বা নীতির সঙ্গে অপরাপর ব্যক্তি ও গোষ্ঠীর আদর্শ বিধান নীতির সামঞ্জস্য রক্ষা করা। সমাজে যখন
বিপরীতধর্মী দুই বা ততোধিক সংস্কৃতি বা ব্যক্তির সামঞ্জস্য ঘটে তখন সমাজবিজ্ঞানের দৃষ্টিকোণ থেকে এরূপ সামঞ্জস্য বিধানকে আত্মীকরণ বলা হয়।
প্রামান্য সংজ্ঞা : বিভিন্ন সমাজবিজ্ঞানী আত্মীকরণের বিভিন্ন সংজ্ঞা দিয়েছেন উল্লেখযোগ্য কয়েকটি নিম্নরূপ: সমাজবিজ্ঞানী অগবার্ন এবং নিমকফ্ (Ogburn and Nimkoff) বলেন, “যে কার্যপ্রক্রিয়ার দ্বারা ব্যক্তি বা গোষ্ঠী অসদৃশ থেকে সদৃশ হয় অথবা স্বার্থ এবং দৃষ্টিভঙ্গির ব্যাপারে তাদের মধ্যে মিল দেখা দেয় তাকেই আত্মীকরণ বলে।”
সমাজবিজ্ঞানী পার্ক ও বার্জেস এর মতে, “যে কার্য অনুসারী এবং অন্যের মনোভাব ও অভিজ্ঞতা অর্জন করতে সক্ষম হয় তাকেই আত্মীকরণ বলা হয়।”
সমাজবিজ্ঞানী বোগারডাস্ (Bogardus) বলেন যে, “আত্মীকরণ কার্যপ্রক্রিয়ার দ্বারা বিভিন্ন ব্যক্তির মনোভাব একীভূত হয়ে পড়ে ক্রমে একত্রীকরণ সম্ভব হয়।”
উপসংহার : উপর্যুক্ত সংজ্ঞাগুলো থেকে একটা ধারণা স্পষ্ট হয়ে উঠে যে, দুই বা ততোধিক ব্যক্তির চিন্তার ও কর্মের সংহতি ও ঐক্যের একটি প্রক্রিয়াই আত্মীকরণ। এই প্রক্রিয়ার মূলে বিভিন্ন সামাজিক কারণ রয়েছে, আবার এমন কতকগুলো কারণ রয়েছে যা সাংস্কৃতিক সংহতি বজায় রাখার পক্ষে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করে।