উত্তরঃ “মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত, তার ব্যক্তিগত জীবনে উচ্চাশার বশবর্তী হওয়ার পরিবর্তে, তিনি নিজ দেশ, ধর্ম, সংস্কৃতি, এবং ভাষা ছেড়ে অন্যান্য ধর্ম, সংস্কৃতি এবং ভাষার অনুষ্ঠানে নিষ্ঠা করেছিলেন। কিন্তু সময়ের সাথে, তার ভুল বুঝে যায়। তার উচ্চাশা পোষণের প্রতি তার অনুভূতি অনুচিত ছিল এবং অবলম্বন করার পরিণামে তার জীবনে অনেক দু: খ হয়েছে।
মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচিত ‘আত্মবিলাপ’ কবিতায় কবির জীবনবোধের বৈশিষ্ট্য:
১. হতাশাবাদ: কবি জীবনের প্রতি তীব্র হতাশাবাদী। ২. আত্ম-অভিযোগ: ব্যর্থতার জন্য নিজেকে দায়ী মনে করেন। ৩. বিষণ্ণতা: তীব্র বিষণ্ণতা ও মানসিক অশান্তি। ৪. জীবনের অর্থহীনতা: জীবনকে অর্থহীন ও তুচ্ছ মনে করেন। ৫. বেদনার তীব্রতা: ব্যক্তিগত বেদনার তীব্র অনুভূতি। ৬. আত্ম-সচেতনতা: নিজের প্রতি সচেতন, ভুলত্রুটি উপলব্ধি করেন। ৭. প্রায়শ্চিত্তের আকাঙ্ক্ষা: ভুলের জন্য প্রায়শ্চিত্ত করতে চান। ৮. আশার আলো: ঈশ্বরের অনুগ্রহে মুক্তির আশা।
মাইকেল মধুসূদন দত্ত মনে করেছিলেন যে, আশা একজন মানুষকে জীবনে উৎসাহ, প্রেরণা, এবং আনন্দ দেয়। হতাশার আবেগ থাকলে মানুষ জীবনের সুখ ও কর্মপ্রবৃত্তি প্রাপ্ত করতে অসমর্থ হয়। আশার পাশাপাশি, তার কবিতায় একটি গভীর দুঃখ ও আত্মবিলাপ অনুভূতির চিত্র উঠেছে, যেটি তার ব্যক্তিগত জীবনের বিকল্প সম্ভাবনার কথা বলছে। অনেক সময়, চলার পথে হতাশা ও ব্যর্থতা একজন মানুষকে উপস্থাপন করতে পারে এবং তার মনে প্রশ্ন তুলতে পারে, জীবনের উদ্দেশ্য কি?
“ আশার ছলনে ভুলি কী ফল লভিনু হায় ,
তাই ভাবি মনে ?
জীবন – প্রবাহ বহি কাল – সিন্ধু পানে ধায় ,
ফিরাব কেমনে ? ”
কবির এ জিজ্ঞাসার ভিতর দিয়েই তাঁর জীবন বোধের পরিচয় বিধৃত । জীবনের ব্যর্থতার গ্লানি তাকে প্রতিনিয়ত রক্তাক্ত করে চলেছে ।
উপসংহার: ‘আত্মবিলাপ’ কবিতাটি কবির জীবনবোধের প্রতিফলন। হতাশা, বিষণ্ণতা, আশার আলো – সকল কিছুরই মিশ্রণ দেখা যায়।