উত্তর : ‘আত্মজা ও একটি করবী গাছ’ হাসান আজিজুল হকের একটি অসামান্য নির্মাণ। অভিন্ন নামের গল্প-সংকলন ‘আত্মজা ও একটি করবী গাছ’ (১৯৬৭) গ্রন্থে এটি গ্রথিত। উদ্বাস্তু ছন্নছাড়া এক শরণার্থী বৃদ্ধের জীবনযাপনের মর্মদাহী এক বৃত্তান্ত ‘আত্মজা ও একটি করবী গাছ’। বস্তুতপক্ষে, বক্ষ্যমাণ গল্পে তেমন কোনো কাহিনি নেই। গ্রামের তিন বখে-যাওয়া যুবক দেশছাড়া এক বুড়োর কন্যাকে ভোগের আকাঙ্ক্ষায় বেরিয়েছে, পৌঁছেছে তারা বুড়োর বাড়িতে এবং অর্থের বিনিময়ে স্ত্রীকে শাসন করে বুড়ো দুই যুবককে পাঠিয়ে দিলো আত্মজার ঘরে-এই-ই হচ্ছে বক্ষ্যমাণ প্রতিবেদনের মৌল ঘটনাংশ। সুতরাং, সার্বিক আলোচনার মাধ্যমে বলা যায় যে, ‘আত্মজা ও একটি করবী গাছ’ গল্পে একদিকে জীবনযুদ্ধে পরাজিত বৃদ্ধের হাহাকার, অপরদিকে নষ্ট সমাজে নষ্ট তরুণের পাশবিক লালসা, জান্তব জীবনযাপন ও অসামাজিক কর্মই সমকালীন সমাজের অস্থিতিশীল চালচিত্রের প্রকাশক। এ গল্পের অপর মূখ্য চরিত্র ভারত থেকে আগত ‘বৃদ্ধ’। সে সুস্থ ও নিশ্চিত জীবনযাপনের লক্ষ্যে ভারত থেকে পূর্বপাকিস্তানে আসে কিন্তু অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা ও জীবনযুদ্ধে ক্রমাগত পরাজয়ের ফলে সমাজের ভ্রষ্ট চরিত্রদের অনুকম্পায় তাকে বেঁচে থাকতে হয় করবীর গাছের বিষ-যন্ত্রণায়’।