আইয়ুব খানের শাসনামলে বাংলা ভাষার হরফ পরিবর্তন বিষয়ক ঘটনাটি সম্পর্কে যা জান লিখ ।

অথবা, ১৯৬৫ সালের পাক-ভারত যুদ্ধ সম্পর্কে পূর্ব পাকিস্তানের মনোভাব আলোচনা কর।
উত্তর৷ ভূমিকা :
১৯৬৫ সালের যুদ্ধ পাক-ভারত যুদ্ধ হলেও এ যুদ্ধ সম্পর্কে পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছিল। এ যুদ্ধ পূর্ব পাকিস্তানের নিরাপত্তাহীনতার ব্যাপারটি ব্যাপকভাবে সামনে এনে দিয়েছিল। ফলে পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ এ যুদ্ধ থেকে শিক্ষা নিয়ে তাদের পাকিস্তান বিরোধী আন্দোলন আরো সামনে এগিয়ে নিয়েছিল। পাক-ভারত যুদ্ধ সম্পর্কে পূর্ব পাকিস্তানের মনোভাব : নিচে পাক-ভারত যুদ্ধ সম্পর্কে পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের মনোভাব আলোচনা করা হলো :
১. বাঙালির যুদ্ধ বিরতিতে সমর্থন : পূর্ব পাকিস্তানের বাঙালি জাতীয়তাবাদী মহল তাসখন্দ যুদ্ধকে স্বাগত জানিয়ে যুদ্ধ ও সাম্প্রদায়িকতার পরিবর্তে কাশ্মির সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধানের উপর জোর দেন। যুদ্ধের সময় পূর্ব পাকিস্তানকে সম্পূর্ণ অরক্ষিত অবস্থায় ফেলে রাখা হয়েছিল। যেটা এ অঞ্চলে আইয়ুব বিরোধী আন্দোলনে এক নতুন মাত্রা যোগ করে।
২. ছয় দফা দাবি উত্থাপন : ১৯৬৬ সালে শেখ মুজিবুর রহমান কর্তৃক ছয় দফা দাবি উত্থাপনের পিছনে পাক-ভারত যুদ্ধের প্রভাব প্রত্যক্ষভাবে কাজ করেছিল। যুদ্ধের সময় পূর্ব পাকিস্তানকে অরক্ষিত করে রাখার কারণেই শেখ মুজিবুর রহমান আধা সামরিক বাহিনী গঠনের দাবি করেছিলেন।
৩. গণআন্দোলন সৃষ্টি ও আইয়ুব খানের পতন : পাক-ভারত যুদ্ধে পরাজিত আইয়ুব খান তার ব্যর্থতাকে আড়াল করার উদ্দেশ্যেই ছয় দফা দাবি উত্থাপনকারী বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা শেখ মুজিবুর রহমানকে গ্রেপ্তার করে তার বিরুদ্ধে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা দেন। এর ফলে গণআন্দোলনের সৃষ্টি হয় এবং আইয়ুব খানের পতন ঘটে।
৪. স্বাধীনতা অর্জনে ভূমিকা : ১৯৬৫ সালে পাক-ভারত যুদ্ধ আইয়ুব খানের পতন সুনিশ্চিত করে এবং স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় এ যুদ্ধ পরোক্ষ ভূমিকা পালন করে।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, ১৯৬৫ সালের পাক-ভারত যুদ্ধ পূর্ব পাকিস্তানে ব্যাপক প্রভাব রেখেছিল। এর ফলে বাঙালি ধীরে ধীরে স্বাধিকার আন্দোলনের দিকে ধাবিত হয়েছিল।