অথবা, অলিগোপলি বাজারে গেম থিওরির উপযোগিতা বর্ণনা কর।
উত্তর : অলিগোপলি বাজারে বিভিন্ন ফার্মের মধ্যে পরস্পরিক নির্ভরশীলতা যেমন থাকতে পারে তেমনি আবার সেই ফার্মগুলোর মধ্যে পারস্পরিক প্রতিক্রিয়াগত অনিশ্চয়তাও থাকতে পারে। সেই পারস্পরিক নির্ভরশীলতা ও প্রতিক্রিয়াগত অনিশ্চিয়তা সম্পর্কে বিশ্লেষণ অর্থনীতির প্রচলিত উপকরণের দ্বারা সম্ভব নয়। অর্থনীতিবিদগণ Collusive Model, Limit pricing models, Managerial Models এবং behavioural Models উদ্ভাবন করেন। কিন্তু অলিগোপলি ফার্মের সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়া সম্পর্কে এ মডেলগুলো পূর্ণব্যাখ্যা দিতে পারেনি। এই ব্যর্থতার কারণে অলিগোপলির সমস্যা Study করার জন্য একটি ভিন্ন পদ্ধতি গড়ে উঠে। সেই পদ্ধতিই হলো গেম থিওরি। অলিগোপলি বাজারের বিশেষ বৈশিষ্ট্য হলো এই যে, বিভিন্ন ফার্মের ব্যবস্থাপককে অন্যান্য ফার্মের গৃহীত সিদ্ধান্তের প্রভাব বিবেচনা করতে হয় এবং আরও অবশ্যই বিবেচনা করতে হয় অন্যান্য ফার্ম বিবেচ্য ফার্মের গৃহীত ব্যবস্থার প্রতি কি ধরনের প্রক্রিয়া ব্যক্ত করে।
সাধারণভাবে অলিগোপলির লক্ষ্য হলো প্রতিপক্ষকে কোন ঠাসা করে অধিক মুনাফা অর্জন করা। সেই লক্ষ্যের প্রেক্ষিতে অলিগোপলি বাজার গেম থিওরি সংক্রান্ত পদ্ধতি প্রয়োগ ও বিকাশ লাভ করে। নিম্নে আলোচনার গেম থিওরির পাঁচটি সুনির্দিষ্ট প্রয়োগ বিবেচনা করা যায়-
১. অসহযোগিতামূলক গেমঃ বন্দিত্বের সংকট যার মাধ্যমে অলিগোপলিতে সকল অংশগ্রহণকারী ফার্মের অ-কাম্য পরিস্থিতি মেনে নেওয়ার প্রসঙ্গ বিবেচিত হয়।
২. সহযোগিতামূলক গেম: কার্টেল গঠনে বাধ্যকরণ যার মাধ্যমে অলিগোপলি বাজারে অংশগ্রহণকারী ফার্মগুলো সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে একত্রিত হয়ে কার্টেল গঠন করতে পারে।
৩. রিপিটেড গেম (পুনরাবৃত্ত বা পুন:সঙ্গঠিত ক্রীড়া): প্রবঞ্চনাকারীদের প্রতি আচরণ যার মাধ্যমে অলিগোপলিতে প্রবঞ্চনাকারীদের সম্মুখীন হওয়া যায়।
৪. সিকোয়েন সিয়াল গেম (অনুবর্তী বা অনুক্রমি বা ধারাবাহিক ক্রীড়া) ও প্রথম হওয়ার সুবিধা যার মাধ্যমে ব্যবসার শুরুতে সূচনাকারী হিসেবে ফার্মের অর্জিত সুবিধা বিশ্লেষণ করা যায়।
৫. বাজার প্রবেশে বাধা সংক্রান্ত গেম: যার মাধ্যমে বাজার প্রবেশ করতে নতুন ফার্মকে কিভাবে বাধা দেওয়া যায় তার উপর আলোকপাত করা যায়।