প্রশ্নের উত্তর

সে তার নিজের স্বর্গটি নিজেই সৃষ্টি করে নেয়। বাইরের স্বর্গের জন্য তাকে হা করে তাকিয়ে থাকতে হয় না।”— ব্যাখ্যা কর।

উৎস : ব্যাখ্যেয় গদ্যাংশটুকু মননশীল প্রাবন্ধিক মোতাহের হোসেন চৌধুরী বিরচিত ‘সংস্কৃতি কথা’ শীর্ষক প্রবন্ধ থেকে চয়ন
প্রসঙ্গ : এখানে প্রাবন্ধিক ধার্মিক ও সংস্কৃতিবান দুই দলের মানুষের পার্থক্য নির্দেশ করতে গিয়ে আলোচ্য অভিমত ব্যক্ত করেছেন।
বিশ্লেষণ : ধর্ম ও সংস্কৃতির মধ্যে সুস্পষ্ট পার্থক্য বিদ্যমান। ধর্ম মানুষকে পাপ থেকে, পতন থেকে রক্ষা করে। সংস্কৃতি মানুষকে পাপপুণ্যের ভিতর দিয়ে বিকশিত করে তোলে। ধর্ম বিকাশের পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। সংস্কৃতিবান ব্যক্তি শিল্প, সাহিত্য ও সঙ্গীত চর্চার মাধ্যমে নিজের ভিতর একটি ঈশ্বর বা আল্লাহ সৃষ্টি করে। আর ধার্মিক ব্যক্তি ধর্মের সৃষ্ট ঈশ্বরকে পাওয়ার জন্য জীবনপাত করে। ধার্মিকের জীবন নিয়ন্ত্রণ করে ভয় আর পুরস্কারের লোভ। সংস্কৃতিবান মানুষের জীবনে ওসবের বালাই নেই। তারা সবকিছু করে ভালোবাসার তাগিদে। ধার্মিকের কৃতকর্মের পুরস্কারটি থাকে বহু দূরে, ঈশ্বরের হাতে স্বর্গে বা বেহেশতে। আর সংস্কৃতিবান মানুষ তার পুরস্কারটি পায় হাতে হাতে, একেবারে নগদ। কারণ কাজ করে সে যে আনন্দ পায় সে আনন্দই তার পুরস্কার। সে তার নিজের স্বর্গটি নিজেই সৃষ্টি করে নেয়। ধার্মিকদের মত ঈশ্বরের স্বর্গের জন্য তাকে হা করে তাকিয়ে থাকতে হয় না।
মন্তব্য : সংস্কৃতিবানের স্বর্গ তার অন্তর। কল্পিত স্বর্গ লাভের জন্য সে হা হুতাশ করে না- যা ধার্মিক ব্যক্তিরা করে থাকে।

হ্যান্ডনোট থেকে সংগ্রহীত

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!