Download Our App


ডিগ্রী অনার্স মাস্টার্স পরীক্ষার রকেট স্পেশাল সাজেশন পেতে পেতে Whatsapp এ ম্যাসেজ করুন। Whatsapp 01979786079

ডিগ্রী অনার্স বই App এ পেতে Whatsapp এ nock করে User ID নিয়ে Login করুন। আমাদের সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ।

প্রশ্নের উত্তর

সামাজিক গবেষণার ক্ষেত্রে মূল্যবোধের সম্পর্ক সংক্ষেপে বর্ণনা কর ।

অর্থবা, সামাজিক গবেষণার ক্ষেত্রে মূল্যবোধের সম্পর্ক আলোচনা কর।
অথবা, সামাজিক গবেষণার ক্ষেত্রে মূল্যবোধের সম্পর্ক বিশ্লেষণ কর।
উত্তর৷ ভূমিকা :
ভালো-মন্দ, ঠিক-বেঠিক, কাঙ্ক্ষিত-অনাকাঙ্ক্ষিত বিষয় সম্পর্কে সমাজের সদস্যদের যে ধারণা তার নামই মূল্যবোধ । আর কোনো কাজের বা বস্তুর নৈতিক মূল্য নিরূপণ করাই হলো মূল্যবোধ বিচার (Value Judgement) । বৈজ্ঞানিক গবেষণার তুলনায় সামাজিক গবেষণার ক্ষেত্রে মূল্যবোধের বিষয়টি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।
সামাজিক গবেষণার ক্ষেত্রে মূল্যবোধের সম্পর্ক : সামাজিক গবেষণার ক্ষেত্রে মূল্যবোধের সম্পর্কটি দুটি কারণে তাৎপর্য বহন করে।
প্রথমত, মানুষের সামগ্রিক কর্মকাণ্ড, ভাবের আদান-প্রদান, পারস্পরিক ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও বৈশ্বিক মূল্যবোধ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। অর্থাৎ মানুষের সামাজিক জীবনযাপন মূল্যবোধ দ্বারা প্রভাবিত ও নিয়ন্ত্রিত । সুতরাং গবেষণার জন্য সংগৃহীত উপাত্তও মূল্যবোধ দ্বারা প্রভাবিত ।
দ্বিতীয়ত, সামাজিক গবেষণায় সংগৃহীত উপাত্ত এবং পর্যবেক্ষণলব্ধ জ্ঞান প্রভাবিত হতে পারে ব্যক্তির বিশ্বাস, পছন্দ অপছন্দ ও আদর্শ দ্বারা। এক্ষেত্রে সঠিক ও পুঙ্খানুপুঙ্খ সত্য/ সত্য উদ্ধার করা সম্ভব হয়ে উঠে না। তাই সামাজিক বিজ্ঞানের বিজ্ঞান চরিত্র বজায় রাখার জন্য মূল্যবোধ নিরপেক্ষতা (Value free) একটি অবশ্য পালনীয় বিধি হিসেবে সামাজিক বিজ্ঞানীদের কাছে প্রতিভাত হয়। সামাজিক গবেষণার ক্ষেত্রে উপাত্তের উৎস, উপাত্ত সংগ্রহ এবং উপাত্ত বিশ্লেষণ দারুণভাবে মূল্যবোধ দ্বারা আক্রান্ত হবার সম্ভাবনা থাকে। সমাজ গবেষক একজন মানুষ। তিনি বিভিন্ন ধ্যানধারণা, পূর্বসংস্কার, বিশ্বাস এবং মূল্যবোধ দ্বারা প্রভাবিত হন বিধায় মানুষ হিসেবে তার পক্ষে পরিপূর্ণভাবে মূল্যবোধ নিরপেক্ষ থাকা সম্ভব নয়। তথাপি বস্তুনিষ্ঠ, যথার্থ ও সুষ্ঠু গবেষণার স্বার্থে গবেষককে নৈতিকভাবে নিরপেক্ষ (Ethically neutral) হতে হয়। কেননা পক্ষপাতহীন ও
যুক্তিনির্ভর উপাত্ত সংগ্রহের উপর ভিত্তি করে গবেষণা কর্ম সুষ্ঠুভাবে পরিচালিত হয় । সমাজ গবেষকগণ যেসব সমস্যা নিয়ে আলোচনা করেন তা মূল্য নিরপেক্ষ হতে হয়। তা না হলে একজন গবেষকের পক্ষে সমাজের বাস্তব চিত্র তুলে ধরা সম্ভব নয়। সমাজ গবেষকগণ মানুষের সর্বপ্রকার সামাজিক কর্মকাণ্ড নিয়ে গবেষণা করে থাকেন । কিন্তু তারা গবেষণা সম্পর্কে কোনোরূপ ভালো-মন্দ, উচিত-অনুচিত, বাঞ্ছনীয়-অবাঞ্ছনীয় মন্তব্য করতে পারেন না । সামাজিক গবেষণায় কার্যত সবচেয়ে বেশি মাত্রায় যে পন্থা অবলম্বন করা হয়ে থাকে, তাহলো মূল্যবোধের সব ধরনের প্রকাশ, প্রপঞ্চ ও প্রভাব যতদূর সম্ভব বস্তুনিষ্ঠভাবে অধ্যয়ন করা এবং এ ব্যাপারে প্রচলিত পদ্ধতিতাত্ত্বিক সুবিধাদি গ্রহণ করা। ‘ব্যক্তি গবেষকে’র মূল্যবোধ যাই হোক না কেন “বৈজ্ঞানিক গবেষক’ অবশ্যই মূল্যবোধ নিরপেক্ষকরণ পন্থা (Value neutralization approach) অবলম্বন করবেন। ব্যক্তি হিসেবে গবেষকের পক্ষে যদিও মূল্যবোধের ঊর্ধ্বে উঠা
সম্ভব নয়, তথাপি প্রকৃত গবেষক হিসেবে কোনো নীতি প্রণয়নে বা নীতি সুপারিশ করার ক্ষেত্রে কোনো মূল্যবোধ আশ্রয়ী মন্তব্য করা সমীচীন নয়।
উপসংহার : উপর্যুক্ত আলোচনার প্রেক্ষিতে বলা যায় যে, প্রতিটি সমাজের একটি মূল্যবোধ আছে। সমাজ গবেষকরা হয়তো সমাজকে নিয়ে গবেষণা করতে গিয়ে সমাজের সেই মূল্যবোধের সাথে কিছুটা সম্পৃক্ত হয়ে সমাজ সম্পর্কে তথ্যসংগ্রহ করার চেষ্টা করেন। কিন্তু তাই বলে কোনো সমাজ গবেষক কোনো সমাজকে গবেষণা করতে গিয়ে মূল্যবোধ আরোপ করেন না ।

হ্যান্ডনোট থেকে সংগ্রহীত

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!