প্রশ্নের উত্তর

“সমস্ত দিনের শেষে শিশিরের শব্দের মতন সন্ধ্যা আসে, ডানার রৌদ্রের গন্ধ মুছে ফেলে চিল।”— ব্যাখ্যা কর।

উৎস : আলোচ্য পদ্যাংশটুকু প্রকৃতির কবি জীবনানন্দ দাশ বিরচিত ‘বনলতা সেন’ শীর্ষক কবিতা থেকে চয়ন করা হয়েছে।
প্রসঙ্গ : কবি এখানে একটি অপরূপ উপমার সাহায্যে মানুষের জীবন সায়াহ্নের বাস্তব অবস্থার চিত্রটি তুলে ধরেছেন।
বিশ্লেষণ : মানুষ সারাজীবন ধরে পৃথিবীর বুকে শাস্তির সন্ধ্যান করে বেড়ায়। দিক থেকে দিগন্তরে স্থান থেকে স্থানান্তরে সে খুঁজে বেড়ায় তার কাঙ্ক্ষিত সত্তাকে। অবশেষে ক্লান্ত-শাস্ত হয়ে সে যখন তাঁর কাঙ্ক্ষিত সত্তার সন্ধ্যান পায় তখন জীবন শেষ হয়ে আসে। দিন শেষে যেমন শিশিরের শব্দের মতো অর্থাৎ নিঃশব্দে সন্ধ্যা নামে, মানুষের জীবনও তেমনি নিঃশব্দের মধ্যে থমকে দাঁড়ায়। যখন পৃথিবীর বুকে সন্ধ্যা নামে তখন চিল তার ডানা থেকে রৌদ্রের গন্ধ মুছে ফেলে; অর্থাৎ সূর্যের আলো এ সময় লুপ্ত হয়ে যায়। এমনি আলো-আঁধারীর মধ্যে নিস্তব্ধ পরিবেশে কবি তাঁর দয়িতা বনলতা সেনের মুখোমুখি হয়েছিলেন। এ সময় তাঁর সামনে থেকে সবকিছু লুপ্ত হয়ে কেবল অন্ধকারের মধ্যে বনলতা সেনই মুখোমুখি অবস্থান করছিলেন। মানুষের জীবনের শেষ অধ্যায়ে মানুষ এরকমই কামনা করে থাকে।
মন্তব্য : জীবন সায়াহ্নে মানুষ নয়, নিঃশব্দ অন্ধকারে যেন তার কাঙ্ক্ষিত জন তাকে সঙ্গ দেয়। এছাড়া মানুষের আত্মা তৃপ্ত হতে পারে না।

হ্যান্ডনোট থেকে সংগ্রহীত

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!