সংশ্লেষাঙ্ক কী? তা কিভাবে পরিমাপ করা হয়? বিস্তারিত আলোচনা কর ।

অথবা, সহসম্পর্ক সহগ কাকে বলে? সহসম্পর্ক সহগ কিভাবে পরিমাপ করা হয়? ব্যাখ্যা কর।
অথবা, সহসম্বন্ধ বলতে কী বুঝ? সহসম্বন্ধ কিরূপ ভাবে পরিমাপ করা যায়? বিশ্লেষণ কর।
অথবা, সংশ্লেষাঙ্কের সংজ্ঞা দাও। সংশ্লেষাঙ্ক নির্ণয়ের পদ্ধতি আলোচনা কর।

উত্তর : ভূমিকা : সামাজিক পরিসংখ্যানের একাধিক চলকের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক নির্ণয়ে সহসম্বন্ধ একটি বহুল ব্যবহৃত ও আলোচিত পরিসংখ্যক পদ্ধতি। দুটি চলক পরস্পরের মধ্যে কিভাবে এবং কি পরিমাণে সম্পর্কযুক্ত সেটা সহসম্বন্ধ নির্দেশ করে । সহ সম্বন্ধের ক্ষেত্রে পরস্পর সম্পর্কযুক্ত দুটি চলকের একটির মান বৃদ্ধি পেলে অপরটি বৃদ্ধি পায় বা একটির মান হ্রাস পেলে অপরটির হ্রাস পায়। অথবা একটির মান বৃদ্ধি পেলে অপরটি হ্রাস পায় যা একটির মান হ্রাস পেলে অপরটি বৃদ্ধি পায় ।
সহসম্পর্ক সহগ বা সংশ্লেষাঙ্ক : দুই বা ততোধিক চলকের মধ্যে যে সম্পর্ক বিদ্যমান তার গাণিতিকপরিমাণকে সহসম্পর্ক সহগ বা Co-efficient of Correlation বলে। এটি একটি সিরিজকে বিশ্লেষণ করে না, বরং নমুনার দুটি চলকের মধ্যকার সম্পর্ক নিয়েই শুধু সহসম্পর্ক কাজ করে । একে “r” দ্বারা সূচিত করা হয়। এর মান ১ হতে শুরু করে ১ এর মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে। তবে ‘o’ দ্বারা সহসম্পর্কের অনুপস্থিতিকে বুঝায়। সহসম্পর্ক সহগের কোন একক নেই । গোষ্ঠীর সহসম্পর্ক সহগকে p (রো) দ্বারা প্রকাশ করা হয় ।
১. যদি দুটি চলকের মধ্যে ধনাত্মক সম্পর্ক বিদ্যমান থাকে, অর্থাৎ একটি চলকের মান বৃদ্ধির সাথে সাথে অপর চলকের মান সমানুপাতিক হারে বৃদ্ধি পায় অথবা উভয়ের মান একই হারে হ্রাস পায়, তবে সে ধরনের পরিবর্তনকে ধনাত্মক সহসম্পর্ক বলে । অর্থাৎ, দুটি চলকের পরিবর্তন একইমুখী হবে। এখানেr এর মান হবে শূন্য অপেক্ষা বড় তবে ১ পর্যন্ত ।
২.যদি দুটি চলকের মধ্যে যে কোনো একটি চলকের মান বৃদ্ধির সাথে সাথে সমানুপাতিক হারে অপর চলকের মান হ্রাস পায় অথবা একটি চলকের মান হ্রাসের সাথে সাথে সমানুপাতিক হারে অপর চলকের মান বৃদ্ধি পায় তবে তাদের মধ্যে পরিবর্তনকে ঋণাত্মক সহসম্পর্ক বলে। অর্থাৎ, দুটি চলকের পরিবর্তন বিপরীতমুখী হবে। এক্ষেত্রে r এর মান ০ থেকে কম তবে -১ পর্যন্ত ।
৩. দুটি চলকের মধ্যে কোনো প্রকার সহসম্পর্ক না থাকলে r এর মান শূন্য (০) হবে। অর্থাৎ, এক্ষেত্রে দুটি চলকই স্বাধীন হয় ।

চিত্রে উপস্থাপনের জন্য আমরা সাধারণত বিক্ষেপ চিত্র পদ্ধতিই ব্যবহার করি। অপরদিকে গাণিতিক পদ্ধতির মধ্যে কার্ল পিয়ারসনের সহসম্পর্ক সহগ পদ্ধতি এবং স্পিয়ারম্যানের র‍্যাঙ্ক পদ্ধতি সহসম্পর্ক বিশ্লেষণে বেশি ব্যবহার হয়।
উপসংহার : উপর্যুক্ত আলোচনা থেকে বলা যায় যে, মানুষের জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহসম্বন্ধ বিদ্যমান। সামাজিক অর্থনৈতিক ব্যবসায়িক সকল ক্ষেত্রেই অবাধ বিচরণ বিশেষভাবে লক্ষ্য করা যায়। বস্তুত জাগতিক প্রপঞ্চসমূহ একে অপরের সাথে বিভিন্ন মাত্রায় সম্পর্কিত। এগুলোর একটির পরিবর্তন হলে অপরটির পরিবর্তন হয়।