শীতকে অতিক্রম করে বসন্তের কাছে আত্মসমর্পণ করায় প্রকৃতি যে অর্বাচীনতার পরিচয় দেয় না তার পরিচয় ফলে।”— ব্যাখ্যা কর।

উৎস : ব্যাখ্যেয় গদ্যাংশটুকু সুসাহিত্যিক প্রমথ চৌধুরী বিরচিত ‘যৌবনে দাও রাজটিকা’ শীর্ষক প্রবন্ধ থেকে চয়ন করা হয়েছে।
প্রসঙ্গ : প্রাবন্ধিক এখানে শীতের তুলনায় বসন্তের প্রয়োজনীয়তা যে বেশি সে প্রসঙ্গে এ মন্তব্য করেছেন।
বিশ্লেষণ : আলোচ্য উক্তিতে প্রাবন্ধিক শীতকে বার্ধক্য এবং বসন্তকে যৌবনের প্রতীক হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। প্রকৃতিতে শীতের পরেই আসে বসন্ত। শীত জড়তার প্রতীক। শীতে প্রকৃতি ক্লান্ত, অলস, নির্জীব ও অচল হয়ে পড়ে। শীতের সময় প্রাণী, উদ্ভিদ ও প্রকৃতি বিষণ্নতায় নিমগ্ন হয়ে যায়। মানুষের প্রাণচাঞ্চল্য হঠাৎ করে থেমে যায়। শীত প্রকৃতির প্রাণশক্তিকে নির্জীব করে দেয়। প্রকৃতি শীতের প্রভাব কাটিয়ে উঠতে প্রয়াস পায়। শীতকে অতিক্রম করে সে বসন্তের কাছে আত্মসমর্পণ করে। বসন্তকে বরণ করে প্রকৃতি আবার প্রাণশক্তি ফিরে পায়। তেমনি মানবজীবনে শৈশবের অপকৃতা আর বার্ধক্যের নিষ্ক্রিয়তাকে পায়ে ঠেলে যৌবন মানুষকে প্রাণচাঞ্চল্যে অভিষিক্ত করে। প্রকৃতি শীতের পর বসন্তে প্রবেশ করে নিজেকে ফুলে ফলে সার্থক করে তোলে। শীতকে ত্যাগ করার জন্য তার মনে কোন আপসোস থাকে না। এ আত্মসমর্পণের ভিতর প্রাপ্তির আনন্দ আছে। আর এ প্রাপ্তি হলো ফল।
মন্তব্য : প্রকৃতিতে বসন্তের আগমন যেমন প্রয়োজন তেমনি মানবজীবনে যৌবনের আগমনও অত্যন্ত জরুরি। অন্যথায় জীবন পূর্ণতা পায় না।

https://topsuggestionbd.com/%e0%a6%af%e0%a7%8c%e0%a6%ac%e0%a6%a8%e0%a7%87-%e0%a6%a6%e0%a6%be%e0%a6%93-%e0%a6%b0%e0%a6%be%e0%a6%9c%e0%a6%9f%e0%a6%bf%e0%a6%95%e0%a6%be-%e0%a6%aa%e0%a6%ac%e0%a6%a8%e0%a7%8d%e0%a6%a7-%e0%a6%aa/