শিল্প জাতীয়করণের বিপক্ষে যুক্তি দেখাও ৷

[ad_1]

✍️শিল্প জাতীয়করণের বিপক্ষে যুক্তি দেখাও ৷

উত্তর ৷ ভূমিকা : বিভিন্ন অর্থনীতিবিদ ও রাষ্ট্রবিজ্ঞানী শিল্প জাতীয়করণের বিপক্ষে মতামত দিয়েছে ।

শিল্প জাতীয়করণের বিপক্ষে যুক্তি : নিম্নে তা আলোচনা করা হলো :

কর্মসূচি ১. পুঁজি বিনিয়োগে অচল অবস্থা : শিল্প জাতীয়করণের ফলে শিল্পক্ষেত্রে বিনিয়োগ হ্রাস পায় । শিল্প জাতীয়করণের অনেক সময় দেশে বেসরকারি পুঁজি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে অচল অবস্থা সৃষ্টি হয় । জাতীয়করণের ফলে বেসরকারি পুঁজি বিনিয়োগ কমে যায় ।

২. দক্ষ ব্যবস্থাপনার অভাব : রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্প পরিচালনার জন্য যে দক্ষ প্রশাসন কাঠামোর প্রয়োজন তা আমাদের দেশে নেই । এ কারণে আমাদের দেশের শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো উৎপাদন বাড়াতে পারছে না ।

৩. উৎসাহ ও উদ্দীপনার অভাব : অধিক মুনাফা লাভের আশায় ব্যক্তিমালিকানা শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠে । ফলে ব্যক্তি লাভের আশায় আরো পরিশ্রমী ও উৎসাহী হয়ে উঠে । যার কারণে অধিক উৎপাদন সম্ভব হয় । অপরপক্ষে , সরকারি মালিকানায় পরিচালিত শিল্প কারখানা মুনাফা প্রবৃত্তি দ্বারা পরিচালিত নয় বলে অধিক উৎসাহ ও উদ্দীপনা দেখা দেয় ।

৪. ব্যক্তিস্বাধীনতার উপর হস্তক্ষেপ : শিল্পকে জাতীয়করণের বিপক্ষে অন্য একটি যুক্তি হলো এটা মানুষের ব্যক্তি স্বাধীনতার উপর হস্তক্ষেপ করে । এছাড়া ব্যক্তিস্বাধীনতার উপর হস্তক্ষেপ করলে গণতন্ত্র ও জাতীয়করণের পাশাপাশি টিকে থাকতে পারে না ।

৫. শ্রমিক অসন্তোষ : শ্রমিক অসন্তোষ শিল্প জাতীয়করণের বিপক্ষে অন্যতম যুক্তি । শিল্পকে রাষ্ট্রায়ত্ত করা হলে শ্রমিকের অংশীদারিত্বের অভাব দেখা দেয় । ফলে শ্রমিকগণ তাদের দাবিদাওয়া আদায়ের সংগ্রাম করে থাকে । এভাবে শ্রমিকের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দেয় ।

৬. রাজনৈতিক চাপ ও প্রভাব : সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো রাজনৈতিক দলগুলোর চাপ ও প্রভাব থেকে মুক্ত হতে পারে না । যখন যে দল ক্ষমতায় আসে তখন সে দল দলীয় স্বার্থ বজায় রাখার জন্য ব্যক্তির যোগ্যতা বিচার না করেই কর্মচারী নিয়োগ করে থাকে । ফলে স্বাধীন ও নিরপেক্ষ এ প্রতিষ্ঠানসমূহ কাজ চালিয়ে যেতে পারে না । তাই শিল্পকে জাতীয়করণের সমর্থন যুক্তিযুক্ত নয় ।

৭. প্রতিযোগিতার অভাব : শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোকে জাতীয়করণ করা হলে প্রতিযোগিতার অভাব দেখা দেয় । কারণ ব্যক্তিমালিকানার উদ্দেশ্য হলো মুনাফা লাভ । ফলে তাদের মধ্যে প্রতিযোগিতা বৃদ্ধি পায় । কিন্তু রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে কোন প্রতিযোগিতা হয় না ।

৮. ব্যক্তিকে প্রাধান্য না দিয়ে সমষ্টিকে প্রাধান্য দেয়া : শিল্পকে জাতীয়করণের মাধ্যমে ব্যক্তিকে প্রাধান্য না দিয়ে সমষ্টিকে প্রাধান্য দেয়া হয় । তাই কেউ অধিক উদ্যোগী ও উৎসাহী হয়ে নতুন অধিকারের কোন প্রচেষ্টা চালায় না ।

৯. স্বৈরশাসন প্রতিষ্ঠিত হয় : শিল্প জাতীয়করণের একটি নেতিবাচক দিক হলো স্বৈরশাসন প্রতিষ্ঠা । জাতীয়করণ কর্মসূচি কার্যকর হলে স্বৈরশাসন প্রতিষ্ঠিত হয় । স্বৈরশাসনে জনগণের স্বার্থ বিচার করা হয় না । ফলে জনগণের সুষ্ঠু বিকাশ সম্ভব হয় না । বরং জনগণের উন্নতি ব্যাহত হয় ।

১০. চরিত্রবান ও উদারমনা ব্যক্তির অভাব : মানুষ সবসময় তার নিজের ভাগ্য ফিরাতে চায় । দেশের উন্নতির জন্য চরিত্রবান ও উদারমনা লোকের সংখ্যা খুবই কম । শিল্পে জাতীয়করণ করা হলে দেশের এ ধরনের লোকের সংখ্যা দেখাই যায় না ।

১১. অর্থনৈতিক উন্নয়ন সমম্ভব হয় না : শিল্পে জাতীয়করণের মাধ্যমে যে অর্থনৈতিক উন্নয়ন আশা করা হয় তা আদৌ বাস্তবায়িত হয় না । কারণ এতে বৈদেশিক পুঁজি বিনিয়োগের সুযোগ থাকে না ।

উপসংহার : উপর্যুক্ত আলোচনা শেষে বলা যায় যে শিল্প জাতীয়করণের প্রয়োজনীয়তা আছে ।

[ad_2]