যে পথের শেষ নেই, সে পথে চলে লাভ নেই।”- ব্যাখ্যা কর।

উৎস : ব্যাখ্যেয় গদ্যাংশটুকু খ্যাতিমান কথাসাহিত্যিক সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ বিরচিত ‘নয়নচারা’ শীর্ষক ছোটগল্প থেকে চয়ন করা হয়েছে।
প্রসঙ্গ : এখানে শহরের পথের অন্তহীনতার কথা ভাবতে গিয়ে আমু এ পথে চলার অর্থহীনতা খুঁজে পেয়েছে
বিশ্লেষণ : নয়নচারা গ্রামের আমু বানভাসি মানুষদের সাথে শহরে এসেছে দু’মুঠো ভাতের জন্য। এখানে আমু দুর্ভিক্ষপীড়িত উদ্বাস্তুদের সাথে আশ্রয় নিয়েছে শহরের খোলা আকাশের ছাদের নিচে রাস্তার ফুটপাতে। সারাদিন তাকে পেটের তাগিদে শহরের অলিতে-গলিতে ঘুরে বেড়াতে হয়। সব হারিয়ে তারা আজ পথের মানুষ। শহরের মানুষগুলো আমুদের দেখে দূর দূর করে তাড়িয়ে দেয়। আমু ওদের চোখে দেখতে পায় পাশবিক হিংস্রতা। ওরা আমুকে মানুষ বলে জ্ঞান করে না। আমু ওদের নিষ্ঠুর আচরণে ক্ষুব্ধ হয়, কষ্ট পায়। ভিক্ষার জন্য, খাদ্যের জন্য আমু পথে পথে ঘোরে। শহরের অগণিত রাস্তাঘাট ও অলি-গলির শেষ খুঁজে পায় না সে। পথের এ বিচিত্র অন্তহীনতা দেখে আমু বুঝতে পারে এখানে পথের শেষ নেই, এখানে ঘরে পৌছানো যায় না। ঘুরতে ঘুরতে আমু কোন পথ থেকে কোন পথে চলে যায় তা বুঝতে পারে না। পথের ধারের একটা খাবার হোটেলের গন্ধ শুঁকতে গিয়ে বেদম মার খায় আমু। সে নিজেও লোকটার উপর ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। এ উত্তেজনাকর ঘটনার পর উত্তেজিত মাথা ঠাণ্ডা হতে সময় লাগে। তারপর রাস্তায় চলতে চলতে হঠাৎ এক সময় সে থমকে দাঁড়ায়। রাস্তায় দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে আমু দার্শনিকের মতো ভাবে, যে পথের শেষ নেই সে পথে চলে লাভ নেই। শহরের বিচিত্র পথ ও বিচিত্র মানুষের গতিবিধি দেখে বিস্মিত আমু এমন সিদ্ধান্তে আসতে বাধ্য হয়।
মন্তব্য : যে পথ অন্তহীন সে পথে চলাও যে কোন মানুষের জন্যই অর্থহীন।

https://topsuggestionbd.com/%e0%a6%a8%e0%a6%af%e0%a6%bc%e0%a6%a8%e0%a6%9a%e0%a6%be%e0%a6%b0%e0%a6%be-%e0%a6%97%e0%a6%b2%e0%a7%8d%e0%a6%aa-%e0%a6%b8%e0%a7%88%e0%a6%af%e0%a6%bc%e0%a6%a6-%e0%a6%93%e0%a6%af%e0%a6%bc%e0%a6%be/