যুক্তফ্রন্ট বলতে কি বুঝায়

যুক্তফ্রন্ট হলো পাকিস্তানের পূর্ববঙ্গ প্রাদেশিক পরিষদের ১৯৫৪ খ্রিস্টাব্দের নির্বাচনে, মুসলিম লীগকে ক্ষমতাচ্যুত করার লক্ষ্যে অন্যান্য বিরোধী দল মিলে গঠিত একটি সমন্বিত রাজনৈতিক মঞ্চ। ১৯৫৩ সালের ১৪ নভেম্বর, যুক্তফ্রন্ট গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও পরবর্তীতে আওয়ামী মুসলিম লীগ (মাওলানা ভাসানী) ১৯৫৩ সালের ৪ ডিসেম্বর তারিখে কৃষক শ্রমিক পার্টি (শের-ই-বাংলা এ কে ফজলুল হক), নেজামে ইসলাম পার্টি (মাওলানা আতাহার আলী), বামপন্থী গণতন্ত্রী পার্টি (হাজী মোহাম্মদ দানেশ এবং মাহমুদ আলি সিলেটি) ও পাকিস্তান গণতন্ত্রী দল একসাথে মিলে যুক্তফ্রন্ট গঠন করে।

যুক্তফ্রন্টের প্রধান তিন নেতা ছিলেন মওলানা ভাসানী, শেরে বাংলা একে ফজলুল হক এবং হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী। এই যুক্তফ্রন্ট ২১ দফার একটি নির্বাচনী ইশতেহার প্রকাশ করে। ঐ ইশতেহারের মধ্যে প্রধান দাবি ছিল লাহোর প্রস্তাবের ভিত্তিতে পূর্ববঙ্গকে পূর্ণ স্বায়ত্তশাসন প্রদান করা, বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা হিসাবে স্বীকৃতি দেয়া, ২১শে ফেব্রুয়ারি শহীদ দিবস ও সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা, ভাষা শহীদদের স্মৃতিরক্ষার্থে শহীদ মিনার নির্মাণ করা ইত্যাদি। যুক্তফ্রন্টের নির্বাচনী প্রতীক ছিল “নৌকা” আর মুসলিম লীগ এর নির্বাচনী প্রতীক ছিল “হারিকেন”।

“যুক্তফ্রন্ট” একটি পর্যায়ক্রম বা গঠনের নাম, যা সাধারণভাবে একটি সমাগত সম্মেলনে বা একটি পর্যায়ক্রমে সময় কাটানোর জন্য ব্যবহৃত হয়। যুক্তফ্রন্ট বিভিন্ন সংগঠন, দল, বা দেশের সাথে যোগদান করে একটি পর্যায়ক্রম বা সম্মেলনে যোগদান করতে পারে, যাতে তাদের আপেক্ষিক লক্ষ্যের দিকে যাওয়ার সুযোগ থাকে।

এই পর্যায়ক্রমে যোগদানকারী সংগঠন বা দেশের মধ্যে স্থির সম্ঝোতা বা সম্পর্ক গড়ে তোলার জন্য যোগদান করে, এবং এই যোগদানের মাধ্যমে তাদের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যের সাথে সম্মিলিত থাকে। এই প্রক্রিয়াটি সাধারণভাবে পোলিটিক্স বা আন্তর্জাতিক সাধারণমন্ত্রী সম্প্রদায়ের মধ্যে সম্পাদিত হতে পারে, যাতে তারা তাদের আপেক্ষিক লক্ষ্যের দিকে সাধারণ দক্ষতা স্থাপন করতে সক্ষম হতে পারেন।

এই প্রকারের যোগদান বাস্তবজুড়ে কোনও নির্দিষ্ট সাধারণ প্রতিষ্ঠানের পর্যায়ক্রম বা গঠনের মাধ্যমে ঘটতে পারে এবং সামাজিক, রাজনৈতিক, বা আন্তর্জাতিক উদ্দেশ্যের সাথে সম্পর্ক গড়ে তোলার জন্য ব্যবহার করা হতে পারে।

যুক্তফ্রন্ট : ১৯৫৪ সালের নির্বাচনে মুসলিম লীগকে মোকাবিলা করার জন্য যুক্তফ্রন্ট গঠন ছিল একটি ঐতিহাসিক ঘটনা। প্রধান বিরোধী দলগুলোর সমন্বয়ে এ যুক্তফ্রন্ট গঠিত হয়। যুক্তফ্রন্ট গঠনের উদ্যোক্তা ছিল তৎকালীন বিরোধী দল ও জনপ্রিয় রাজনৈতিক দল পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ। ১৯৫৩ সালের মে মাসে ময়মনসিংহ শহরে অনুষ্ঠিত পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগের বিশেষ কাউন্সিল অধিবেশনে যুক্তফ্রন্ট গঠনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। ফলে ১৯৫৩ সালের ৪ ডিসেম্বর কয়েকটি বিরোধীদলের সমন্বয়ে নির্বাচনি জোট হিসেবে যুক্তফ্রন্ট গঠিত হয়। যুক্তফ্রন্টের অন্তর্ভুক্ত দলগুলো ছিল
১. ভাসানী-সোহরাওয়ার্দীর নেতৃত্বাধীন পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ।
২. শেরে বাংলা এ. কে. ফজলুল হকের কৃষক প্রজা পার্টি।
৩. মাওলানা আতাহার আলীর নেজামে ইসলাম।
৪. হাজী দানেশের নেতৃত্বাধীন গণতন্ত্রী দল ।
হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, শেরে বাংলা এ. কে. ফজলুল হক এবং মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী ছিলেন যুক্তফ্রন্টের প্রথম সারির নেতা। যুক্তফ্রন্টের প্রধান অফিস ছিল সদরঘাটের সিমসন রোডে। নৌকা প্রতীক নিয়ে যুক্তফ্রন্ট প্রার্থীগণ নির্বাচনে অবতীর্ণ হন। নির্বাচনের প্রাক্কালে যুক্তফ্রন্ট ২১ দফা কর্মসূচি ঘোষণা করে।