ময়রার দোকানের বর্ণনা দাও।

অথবা, ময়রার পরিচয় দাও।
অথবা, ময়রার দোকানে আমুকে কেন্দ্র করে যে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছিল তার বর্ণনা দাও।
অথবা, ‘ক-কাড়ি কলাকে’ দুর্ভিক্ষপীড়িত মানুষদের কাছে ‘হলুদ রঙা স্বপ্ন ঝুলছে’ বলে মনে হয় কেন?
উত্তর :
সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ্ রচিত ‘নয়নচারা’ গল্পে দুর্ভিক্ষের ভয়াবহতা ফুটে উঠেছে। নয়নচারা গ্রামের দুর্ভিক্ষপীড়িত মানুষগুলো শহরে আসে খাদ্যের সন্ধানে কিন্তু শহরেও তারা জীবনধারণের মতো পর্যাপ্ত পরিমাণ খাদ্য পায় না। ময়রার দোকানে কাচের গ্লাস দেওয়া খাদ্যে মাছি বোঁ-বোঁ করে কিন্তু সেই দোকানের খাদ্যসামগ্রী দেখে আত্মতৃপ্তি হওয়া ছাড়া আর কোনো উপায় থাকে না বুভুক্ষু মানুষদের। ময়রার চোখে নেই কোমলতা, সে-চোখময় পাশবিক হিংস্রতা সেই হিংস্রতার মধ্যে মনে হয় দুটি চোখ ধকধক করছে। ময়রার দোকানে ঝোলানো কলা দেখে তাদের নয়ন জুড়ায় কিন্তু সেই ‘ক-কাড়ি কলাকে’ তাদের কাছে ‘হলুদ রঙা স্বপ্ন ঝুলছে’ বলে প্রতীয়মান হয়। তাদের সামনে খাবার থাকলেও তা ভোগ করার অধিকার তাদের নেই- তাই কলাকে তাদের কাছে সবুজ রঙা স্বপ্ন বলেই মনে হয়। আমুকে দেখে ময়রার দোকানের একজন তেড়ে আসে। আমু প্রথমে বুঝেছিল হয়ত কুকুর তাড়তে এসছে। যখন সে বোঝে তাকে অকথ্য-কর্কশ ভাষায় গালাগাল করছে সেও প্রতিবাদী ভঙ্গিতে দাঁড়িয়ে থাকে। আরেকজন ভিতর থেকে বেরিয়ে এসে আমুর উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে, আমুও তার উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে কিন্তু বুভুক্ষু শরীরে আমু তার সাথে পেরে ওঠে না। পরে অসহ্য ব্যথা এবং শরীরে প্রহৃত হওয়ার চিহ্ন নিয়ে সে স্থান ত্যাগ করে।মূলত শহরে খাদ্যের অভাবের থেকে মানুষের মানবিকতার অভাব। তাছাড়া খাদ্যের সুষম বণ্টনের কারণে বুভুক্ষু মানুষের জীবন আরও বিষিয়ে উঠেছিল।

https://topsuggestionbd.com/%e0%a6%a8%e0%a6%af%e0%a6%bc%e0%a6%a8%e0%a6%9a%e0%a6%be%e0%a6%b0%e0%a6%be-%e0%a6%97%e0%a6%b2%e0%a7%8d%e0%a6%aa-%e0%a6%b8%e0%a7%88%e0%a6%af%e0%a6%bc%e0%a6%a6-%e0%a6%93%e0%a6%af%e0%a6%bc%e0%a6%be/