অথবা, বাস্তবমুখী জেল্ডার চাহিদা বলতে কী বুঝ?
অথবা, বাস্তবমুখী জেন্ডার চাহিদা কাকে বলে?
অথবা, ব্যবহারিক জেন্ডার চাহিদা বলতে কী বুঝ?
অথবা, ব্যবহারিক জেন্ডার চাহিদা কাকে বলে?
উত্তরঃ ভূমিকা : জীবনধারণের জন্য অত্যাবশ্যকীয় উপকরণের প্রয়োজনীয়তাকেই সাধারণ অর্থে চাহিদা বলা হয়। যেমন- খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা, চিকিৎসা এগুলো হলো মানুষের মৌলিক চাহিদা। কিন্তু এ মৌলিক চাহিদা ও জেন্ডার চাহিদার মধ্যে সুস্পষ্ট পার্থক্য রয়েছে। মৌলিক চাহিদা সকল মানুষের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য, কিন্তু জেন্ডার চাহিদা হয়ে থাকে শুধু নারীদের ক্ষেত্রে। সমগ্র বিশ্বে এখনো নারীরা পুরুষের তুলনায় পশ্চাৎপদ। যদিও এ পশ্চাৎপদতা এক এক অঞ্চলে এক এক ধরনের হতে পারে। এ পশ্চাৎপদতা মূলত দুটি কারণে হয়ে থাকে।
বাস্তবমুখী বা ব্যবহারিক জেন্ডার চাহিদা : নারীর প্রতিদিনের জীবনযাপন এবং কাজকর্ম সম্পাদন করতে গিয়ে বাস্তব সমস্যা থেকে উদ্ভূত হয় বাস্তবমুখী জেন্ডার চাহিদা। অর্থাৎ, নারীরা তাদের তিন ধরনের ভূমিকা পালন করতে গিয়ে যেসব সমস্যার সম্মুখীন হয় তার সবই এ বাস্তবমুখী জেন্ডার চাহিদার অন্তর্গত এবং তা প্রচলিত জেন্ডার ভূমিকা পালনে সহায়তা করে। নারীর জীবনযাত্রার মান এ চাহিদা পূরণের ফলে খানিকটা উন্নত হয়, তার দৈনন্দিন কাজের বোঝাও কিছুটা হালকা হয়ে আসে এবং তারা আরো ভালোভাবে কাজগুলো করতে পারে। বাস্তবমুখী জেন্ডার চাহিদা পূরণের মধ্য দিয়ে যদিও নারীর অবস্থার কিছুটা উন্নয়ন ঘটে কিন্তু তা সাধারণত সমাজে নারীর মর্যাদা বৃদ্ধি করে না।
ব্যবহারিক বা বাস্তবমুখী জেন্ডার চাহিদা হচ্ছে :
১. নারী যে বাস্তব অবস্থা দেখতে অভিজ্ঞ, সে অবস্থার আলোকে সূত্রায়িত করা হয়।
২. একটি নির্দিষ্ট প্রসঙ্গের সীমারেখার মধ্যে নারী কর্তৃক চিহ্নিত তাৎক্ষণিক অভাব বোধের প্রতিক্রিয়া ।
৩.জেন্ডার কর্মবিভাজন পরিধি রেখার মধ্যে নারীর অবস্থান থেকে উদ্ভূত।
৪. বেঁচে থাকার পরিবেশের অপূর্ণতার সাথে সম্পৃক্ত। যথা : পানির ব্যবস্থা, স্বাস্থ্যসেবা এবং কর্মসংস্থান।
৫. জেন্ডার কর্মবিভাজনকে সংরক্ষণ ও জোরদার করে। ব্যবহারিক বা বাস্তবমুখী জেন্ডার চাহিদাগুলোর মধ্যে আছে-
ক. খাদ্যের ব্যবস্থা,
খ. পানির ব্যবস্থা
গ. অর্থকরী কর্মকাণ্ড, কর্মসংস্থান ও চাকরি,
ঘ. শিশুস্বাস্থ্য,
ঙ. বসবাসের গৃহ, আশ্রয় ও
চ. গার্হস্থ্য মৌলিক সেবা।
উপসংহার : উপর্যুক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায় যে, সংক্ষেপে বাস্তবমুখী জেন্ডার চাহিদা হলো খাদ্য, আশ্রয়, পানি। এগুলো কেবল নারীর নয়, পুরুষেরও চাহিদা। কিন্তু এগুলোকে নারীর চাহিদা বলে জাহির করে নারীকে কৌশলগত জেন্ডার চাহিদা থেকে আড়াল করে রাখার প্রচেষ্টা নেয়া হয়। নারীর ব্যবহারিক জেন্ডার চাহিদা মিটানোর নামে জেন্ডার কর্মবিভাজন অক্ষত রেখে স্ত্রী ও মাতার উন্নয়ন কৌশল অবলম্বন করা হয়।