বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে কৃষি ও শিল্পখাতের আপেক্ষিক ভূমিকা আলোচনা কর ।

[ad_1]

✍️বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে কৃষি ও শিল্পখাতের আপেক্ষিক ভূমিকা আলোচনা কর ।

উত্তর ভূমিকা : বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের কৌশল নির্ধারণের জন্য কৃষি ও শিল্পখাতের আপেক্ষিক ভূমিকা যাচাই করা প্রয়োজন । অর্থনৈতিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত করার উদ্দেশ্য কৃষি ও শিল্পখাতের মধ্যে কোনটি অগ্রাধিকার পাবে ডাও নির্ণয় করা প্রয়োজন ।

ক . বাংলাদেশের অর্থনীতিতে কৃষি ও শিল্পের আপেক্ষিক অবস্থান : বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর প্রকাশিত পরিসংখ্যান অনুযায়ী ১৯৯৭/৯৮ সালে বাংলাদেশের জি.ডি.পি. তে কৃষির অবদান ছিল ৩২ % এবং শিল্পখাতের অবদান ছিল ১১.২ % । অবশ্য শিল্পখাতে কি কি উপখাত অন্তর্ভুক্ত হবে সে সম্পর্কে পার্থক্যের কারণে কোন কোন সমীক্ষায় শিল্পখাতের জি.ডি.পি. তে অবদান প্রায় ১৬ % বলা হচ্ছে । অতএব শিল্পখাতের তুলনায় কৃষিখাতের জি.ডি.পি.তে অবদান বিগুণের বেশি । প্রবৃদ্ধির হার বিবেচনা করলে দেখা যায় যে , ১৯৭৩-৯৩ সময়কালে কৃষিখাতের মূল্য সংযোজন বার্ষিক ২.৭ % হারে বৃদ্ধি পায় । পক্ষান্তরে , ঐ সময়কালে শিল্পখাতের মূল্য সংযোজন বার্ষিক ৩ % হারে বৃদ্ধি পায় , ঐ সময়ে সার্ভিস খাতের উচ্চতর প্রবৃদ্ধির হারের কারণে জি.ডি.পি. প্রবৃদ্ধির হার হয় বার্ষিক ৪ % ।

উপযুক্ত পরিসংখ্যান থেকে একথা বলা যায় যে , বাংলাদেশের অর্থনীতিতে কৃষিখাতের আপেক্ষিক আকার ক্রমে হ্রাস পেলেও তা এখনো শিল্পখাতের তুলনায় অধিক গুরুত্বপূর্ণ । স্বাধীনতার পর জি.ডি.পি.তে কৃষির অবদান প্রায় ৬০ % ছিল যা হ্রাস পেয়ে ৩২ % হয়েছে । পক্ষান্তরে , জি.ডি.পি তে শিল্পখাতের অবদান স্বাধীনতার পরে প্রায় ৪ % ছিল যা হ্রাস পেয়ে ১২ % হয়েছিল । অতএব অর্থনীতির প্রত্যাশিত কাঠামোগত পরিবর্তন অনুযায়ী ক্রমে কৃষিখাতের অবদান হ্রাস পাচ্ছে এবং ধীরগতিতে শিল্পের অবদান বাড়ছে ।

খ . কৃষি ও শিল্পের পারস্পরিক নির্ভরশীলতা : বাংলাদেশ একটি উন্নয়নশীল দেশ । তাই এর অর্থনৈতিক কাঠামো বর্তমানে পরিবর্তনশীল । এ পর্যায়ে কৃষিখাত ও শিল্পখাত উভয়ই বাংলাদেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ । এ দুই খাত পরস্পর নির্ভরশীলতার সম্পর্কে আবদ্ধ ।

নিম্নে শিল্প ও কৃষিখাতের পারস্পরিক নির্ভরশীলতা বর্ণনা করা হলো :

কৃষির উপর শিল্পের নির্ভরশীলতা : বাংলাদেশে শিল্পখাতের উৎপন্ন দ্রব্যের বাজার প্রধানত কৃষিখাতের উপর নির্ভরশীল । বাংলাদেশের শিল্পজাত দ্রব্য প্রধানত অভ্যন্তরীণ বাজারের জন্য উৎপন্ন হয় । কৃষিভিত্তিক আয়ের অধিকারী মানুষই এ শিল্পজাত দ্রব্যের ক্রেতা । এ কারণে এক সমীক্ষাতে শিল্পখাতের মূল্য সংযোজন এবং অন্যান্য খাতের মূল্য সংযোজনের মধ্যে সহ সম্পর্কের সহগ প্রায় ০.৯৫ পাওয়া গেছে । বিগত প্রায় দুই দশকব্যাপী কৃষিখাতের প্রবৃদ্ধির হার ছিল মাত্র ২.৭ % । কৃষিখাতের এ মন্থর প্রবৃদ্ধি শিল্পখাতের স্থবিরতার অন্যতম কারণ বলে চিহ্নিত হয়েছে ।

১. বাংলাদেশের শিল্পখাত কাঁচামালের জন্য কৃষিখাতের উপর নির্ভর করে । যেমন – পাট , চিনি , কাগজ ইত্যাদি শিল্পের কাঁচামাল সরাসরি কৃষিখাত থেকে আসে ।

২ . শিল্পখাত শ্রমের যোগানের জন্য কৃষিখাতের উপর নির্ভরশীল । বাংলাদেশে কৃষিখাতে অতিরিক্ত শ্রমিক নিয়োজিত আছে , যাদের ছদ্মবেশী বেকার বলা হয় । কিন্তু কৃষির কাঠামোগত পরিবর্তন সাধিত হলেই এ অতিরিক্ত শ্রমশক্তি বিমুক্ত হয়ে শিল্পে স্থানান্তরিত হতে পারে ।

৩. শিল্পখাতের উন্নয়নের জন্য প্রচুর মূলধন প্রয়োজন । কিন্তু তার জন্য অর্থনীতির অন্য খাতে উদ্বৃত্ত সৃষ্টি করা প্রয়োজন । বাংলাদেশে কৃষিখাতে উদ্বৃত্ত সৃষ্টি হলে তা শিল্পে বিনিয়োজিত হতে পারে । অতএব পুঁজির জন্য শিল্পখাতের উপর নির্ভরশীল ।

৪. শিল্পখাতের উন্নয়নের জন্য বিদেশ থেকে মূলধন দ্রব্য আমদানির উদ্দেশে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা প্রয়োজন । এ বৈদেশিক মুদ্রা এ পর্যায়ে কৃষিজাত দ্রব্য রপ্তানির মাধ্যমে অর্জন করা সম্ভব । অতএব বৈদেশিক মুদ্রার যোগানের জন্য শিল্পখাত কৃষিখাতের উপর নির্ভরশীল ।

৫. কৃষিখাত সমগ্ৰ অর্থনীতির জন্য খাদ্যের যোগান দেয় । শিল্পখাতে ব্যাপক হারে শ্রমিক নিয়োগ তখনই সম্ভব যখন খাদ্য সহজলভ্য হয় । খাদ্যের সহজলভ্যতা শ্রমিকের প্রকৃত মজুরি বাড়ায় । অতএব কৃষি পর্যাপ্ত খাদ্য উৎপাদন হলেই শিল্প খাতে শ্রমিক নিয়োগ সম্ভব ।

শিল্পের উপর কৃষির নির্ভরশীলতা ;

১. কৃষিপণ্যের বাজার সৃষ্টি করে শিল্পখাত । শিল্পখাত চাঙ্গা হলে কৃষিপণ্যের বাজার বিস্তৃত হয় এবং কৃষক অধিক আয় করে । অতএব বাজার সৃষ্টির জন্য কৃষি শিল্পখাতের উপর নির্ভরশীল ।

২ . আধুনিক কৃষি উপকরণের যোগান দেয় শিল্পখাত । রাসায়নিক সার , কীটনাশক , শ্যালো , পাম্পের যন্ত্রাংশ , নিড়ানি যন্ত্র ইত্যাদি শিল্পখাতে উৎপাদিত হয় । অতএব কৃষিখাত আধুনিক উপকরণের জন্য শিল্পখাতের উপর একান্তভাবে নির্ভরশীল ।

৩ . কৃষিপণ্য প্রক্রিয়াজাত হয় শিল্পখাতে । যেমন- ধান প্রক্রিয়াজাতকরণের জন্য রয়েছে অসংখ্য রাইস মিল , তেমনি পাট প্রক্রিয়াজাতকরণের জন্য আছে পাটকল , চামড়ার জন্য আছে ট্যানারি ইত্যাদি ।

৪ . কৃষি উন্নয়নের জন্য অতিরিক্ত শ্রমে ভারাক্রান্ত কৃষিজাত থেকে শ্রমিকের অন্যত্র স্থানান্তর অত্যাবশ্যক । শিল্পখাতে কর্মসংস্থান সৃষ্টি হলেই কৃষিখাতের অতিরিক্ত শ্রমিক শিল্পে স্থানান্তরের মাধ্যমে কৃষি উন্নয়ন সম্ভব হবে ।

উপসংহার : উপরের আলোচনা থেকে বলা যায় যে , বাংলাদেশে কৃষি ও শিল্প অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত । এটি বাংলাদেশের অর্থনীতির একটি দ্বৈততা বলে পরিচিত । উভয় খাতের সমৃদ্ধি পরস্পর নির্ভরশীল । অতএব বাংলাদেশের অর্থনীতিতে কৃষি ও শিল্পের বর্তমান আপেক্ষিক অবস্থান এবং তাদের পারস্পরিক নির্ভরশীলতার প্রেক্ষপটে একথা স্পষ্ট হয়ে উঠে যে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে কৃষি ও শিল্প উভয় খাতের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ ।

✍️কৃষি ও শিল্প পরস্পর নির্ভরশীল ” তোমার উত্তরের সপক্ষে যুক্তি দাও ।

উত্তর ভূমিকা : কৃষি ও শিল্প পরস্পর নির্ভরশীল । কৃষির উন্নয়নের দ্বারা শিল্প খাতের উন্নয়ন সম্ভব আবার শিল্প খাতের উন্নয়ন দ্বারা কৃষি খাতের উন্নয়ন সম্ভব । দুটি খাতই একে অপরের পরিপূরক । কৃষি উন্নয়ন বনাম শিল্প উন্নয়ন : কৃষি উন্নয়ন ও শিল্প উন্নয়ন যে কোন দেশের জন্য একে অপরের পরিপূরক হিসেবে কাজ করতে পারে । আর এ জন্যই শিল্পোন্নয়ন যেমন কৃষি উন্নয়নের উপর নির্ভরশীল তেমনই কৃষি উন্নয়নও শিল্পোন্নয়নের উপর নির্ভরশীল হয়ে দ্বৈত উন্নয়ন ধারায় উন্নয়নের গতি হওয়া উচিত ।

বিষয়টি একটি চক্রাকারে ছকে উল্লেখ করা হলো : দ্রব্য ও সেবার মূল্য শিল্পে উৎপাদিত দ্রব্য ও সেবা জনগণ বা আত্মতোষণ খাত শিল্পখাত কাঁচামাল ও শ্রমিক সরবরাহ কাঁচামালের মূল্য + মজুরি + সুদ + মুনাফা কৃষি উন্নয়ন বনাম শিল্পোন্নয়ন কৃষির উপর শিল্পের নির্ভরশীলতা ( Dependency of industry on agriculture ) : কৃষি ও শিল্প একে অপরের পরিপূরক । কৃষিতে উৎপাদিত দ্রব্য সামগ্রিকে রূপান্তরিত করে বিভিন্ন ধরনের পণ্য বা দ্রব্য তৈরি করাকে শিল্প বলে । যেমন- পাট উৎপন্ন করে তা থেকে বিভিন্ন ধরনের পাটজাত দ্রব্য উৎপন্ন করাকে বুঝায় । তাই কৃষি উন্নয়ন ব্যাতীত শিল্প উন্নয়ন চিন্তা করা কঠিন ।

নিম্নে কৃষির উপর শিল্পের নির্ভরশীলতা ব্যাখ্যা করা হলো :

১. কৃষি শিল্পের কাঁচামাল যোগান : কৃষি শিল্প কারখানায় কাঁচামাল যোগান দেয় । কৃষিজাত কাঁচামালের উপর নির্ভর করেই চিনি শিল্প , কাগজ শিল্প , পাট শিল্পগুলো গড়ে উঠেছে । কাজেই কৃষি প্রসারতার উপর শিল্পের প্রসারতা নির্ভর করে ।

২. কৃষিপণ্য রপ্তানি দ্বারা শিল্পের যন্ত্রপাতি আমদানি : কৃষিপ্রধান দেশগুলোর শিল্পোন্নয়নের প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি জন্য বিদেশের উপর নির্ভর করতে হয় । সাধারণত এ যন্ত্রপাতি ক্রয় করার জন্য প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রার প্রয়োজন হয় । এসব কৃষিপণ্য বিদেশে রপ্তানি করে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা হয় যা শিল্পে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি ক্রয়ে সাহায্য করে থাকে । সুতরাং শিল্পোন্নয়নের জন্য কৃষির উন্নয়ন একান্ত অপরিহার্য ।

৩. কৃষি খাদ্যের যোগান , বৈদেশিক মুদ্রা সংরক্ষণ ও শিল্পে বিনিয়োগ বৃদ্ধি : এমন অনেক উন্নয়নশীল দেশ আছে যাদের প্রতি বছর বিদেশ থেকে খাদ্য আমদানি করে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা খরচ করতে হয় । এসব দেশে কৃষি উন্নয়ন দ্বারা দেশীয় খাদ্যের চাহিদা মিটাতে পারে এবং বৈদেশিক মুদ্রা সংরক্ষণ করতে পারে । এসব উদ্বৃত্ত অর্থ শিল্পে বিনিযোগ করে শিল্পকে সম্প্রসারণ করা সম্ভব ।

৪. কৃষি উন্নয়ন শিল্পের শ্রমিক যোগান দেয় : কৃষি উন্নয়নের ফলে শিল্পের শ্রমিকের চাহিদা বাড়বে । কারণ কৃষি উন্নয়নের ফলে শিল্পোন্নয়ন হয় , ফলে শিল্পে অতিরিক্ত শ্রমিক চাহিদা দেখা দেয় । এতে বেকারত্ব হ্রাস পায় । Prof. W. Arthur Lewie 1954 সালে তাঁর ‘ Economic Development with Unlimited Supplies of Labour ‘ , গ্রন্থে উল্লেখ করেন যে , “ অনুন্নত দেশের অর্থনীতিতে অসীম শ্রমিক কৃষিখাত হতে শিল্পখাতে নিয়োগের মাধ্যমে অনুন্নত দেশের বিশেষ করে কৃষিপ্রধান দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন করা সম্ভব ।

৫. কৃষি উন্নয়ন ও শিল্পজাত পণ্যের পরিমাণ বৃদ্ধি করে : কৃষি উন্নয়ন ঘটলে কৃষকের মাথাপিছু আয় বাড়বে এবং শ্রমিকের ক্রয় ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে । ফলে গ্রামাঞ্চলে শিল্পপণ্যের চাহিদা ও যোগান বৃদ্ধি পাবে । সুতরাং শিল্পজাত পণ্যের বাজার বিস্তৃত করতে হলে কৃষি উন্নয়ন একান্ত আবশ্যক ।

৬. কৃষি উন্নয়নে শিল্পের কাঁচামালের খরচ কম হয় : অধিক কৃষি উন্নয়ন ঘটলে কৃষিজাত কাঁচামালের মূল্য হ্রাস পাবে । ফলে শিল্পে উৎপাদিত পণ্যের গড় খরচ কম পড়বে । এতে কম মূল্যে শিল্পপণ্য পাওয়া যাবে । ফলে ভোগ উদ্বৃত্ত সৃষ্টি হবে । যার দ্বারা অতিরিক্ত বিনিয়োগ সম্ভব । শিল্পের উপর কৃষির নির্ভরশীলতা ( Depnedncy of agricultural on industry ) : কৃষির উপর যেমন শিল্প নির্ভরশীল তেমনি শিল্পের উপরও কৃষি নির্ভরশীল । শিল্পে উৎপাদিত সার , কৃষি যন্ত্রপাতি ইত্যাদি বর্তমান সময়ে কৃষি ক্ষেত্রে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে । এসব দ্রব্য ব্যবহারের ফলে কৃষিতে উৎপাদন বৃদ্ধি পাচ্ছে ।

নিম্নে শিল্পের উপর কৃষির নির্ভরশীলতা ব্যাখ্যা করা হলো :

১. বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির প্রবর্তন ও কৃষি উন্নয়ন : আধুনিক অর্থনীতিতে কৃষিক্ষেত্রে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির প্রবর্তন ছাড়া কৃষি উন্নয়ন সম্ভব নয় । কিন্তু বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে চাষাবাদের জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি দেশের শিল্পোন্নয়নের উপর নির্ভর করে । এছাড়া রাসায়নিক সার , কীটনাশক ঔষধ ইত্যাদি প্রস্তুতের যন্ত্রপাতি , পানি সেচের যন্ত্রপাতির জন্য শিল্পের প্রয়োজন । কাজেই কৃষি শিল্পের উপর নির্ভর করে ।

২. শিল্প ও গ্রামীণ ছদ্মবেশী বেকারত্ব : কৃষি ক্ষেত্রে অধিক শ্রমিক সরবরাহ আছে বলে বেকারত্ব , ছদ্মবেশী বেকারত্ব বিদ্যমান রয়েছে । W. Artur Lewis , Fei and Ranis এর মতে , শিল্পের উন্নয়ন ও কারিগরি কৌশলিক উন্নয়নের ফলে শিল্পের প্রসারতা ঘটে । ফলে শিল্পক্ষেত্রে অধিক শ্রমিকের প্রয়োজন হয় । কাজেই শিল্পের উন্নয়ন কৃষিক্ষেত্রে সমস্যা সমাধান করতে পারে ।

৩. শিল্প , কৃষিপণ্যের পূর্ণ ব্যবহার : শিল্পোন্নয়ন না হলে কৃষির উৎপাদিত পণ্য অপচয় , অপূর্ণ ব্যবহার ঘটে । অর্থাৎ সংরক্ষণের অভাবে অনেক পচনশীল পণ্য নষ্ট হয় । এ ক্ষেত্রে শিল্পের উন্নয়ন ঘটলে কৃষির কাঁচামাল , কৃষিজাত উৎপাদিত পণ্যের সুষ্ঠু ও সঠিক ব্যবহার দ্বারা কৃষিক্ষেত্রে উৎপাদনে নিশ্চয়তা দিতে পারে ।

৪. শিল্পোন্নয়ন ও কৃষিপণ্যের রপ্তানি : অনেক উন্নয়নশীল দেশ আছে যারা কৃষিপণ্য কাঁচামাল রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করে । শিল্পজাত দ্রব্য রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সহজ ।

৫. শিল্পোন্নয়ন কৃষিপণ্যের চাহিদা বৃদ্ধি : শিল্পোন্নয়নের ফলে কৃষিজাত কাঁচামালের চাহিদা বৃদ্ধি পায় । এর ফলে কৃষকদের কাঁচামালের যোগান দেয়া বেড়ে যাবে এবং কৃষকদের আয় বৃদ্ধি পাবে । এরূপ পরিস্থিতিতে তারা কৃষিতে অধিকতর বিনিয়োগ সমর্থ হবে । ফলে শিল্পোন্নয়নের দরুন কৃষি উন্নয়নের গতিবেগ ত্বরান্বিত হবে ।

উপসংহার : উপর্যুক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে এটা সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয় যে , কৃষি যেমন শিল্পের উপর নির্ভরশীল তেমনই শিল্পও কৃষির উপর নির্ভরশীল । একটিকে বাদ দিয়ে অপরটি কল্পনা করা যায় না । অর্থাৎ কৃষি ও শিল্প নিবিড় সম্পর্কে আবদ্ধ । কৃষিতে উৎপাদিত দ্রব্য শিল্পে ব্যবহার করা হয় । আবার শিল্পে উৎপাদিত দ্রব্য কৃষিতে ব্যবহার করা হয়ে থাকে । কোন দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে কৃষি ও শিল্প বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে ।

[ad_2]