ঐকতান” বলতে কবি কী বুঝিয়েছেন?

উত্তর : বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্রের সমন্বয়ে সৃষ্ট সুর, সমস্বর। এখানে বহু সুরের সমন্বয়ে এক সুরে বাঁধা পৃথিবীর সুরকে বুঝানো হয়েছে। বিপুলা এ পৃথিবীর সবকিছু মানুষের পক্ষে জানা সম্ভব নয়। দেশে দেশে কত নগর, রাজধানী, কত নদী, কত মরু-পাহাড়- পর্বত, কত সাগর-মহাসাগর ও গ্রহ নক্ষত্র জানার অগোচরে থেকে যায়। সাহিত্যের সকল শাখা প্রশাখায় বিচরণ করার পরও কবি
জীবনসায়াহ্নে নিজের অপূর্ণতার কথা ব্যক্ত করেছেন। জীবন সায়াহ্নে এসে কবি অনুভব করেছেন যে, চাষি, তাঁতী, জেলে প্রভৃতি শ্রমজীবী মানুষ তাঁর কবিতায় স্থান পায়নি। সমাজের উচ্চাসনে বসে তিনি কবিতা রচনা করেছেন। মাঝে মাঝে সাধারণ শ্রেণির মানুষদের পাড়ায় গেলেও ভিতরে প্রবেশের সুযোগ হয়নি। তাঁর কবিতা বিচিত্র পথে বিচরণ করলেও সর্বত্রগামী হতে পারেনি। মাটি ও মানুষের কথা তাঁর কাব্য জগতে খুব একটা দেখা যায় না। তাই কবি নিজেই আক্ষেপ করে সে কথা বলেছেন। নবীন কবিদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন চাষি, তাঁতী ও কামারের কথা কাব্যে স্থান দিতে। তাঁদের বাণী শুনার জন্য কবি কান পেতে আছেন। কারণ সাহিত্যের আনন্দ আসরে নিজে যা দিতে পারেননি, কবি তা কান পেতে শোনার জন্য অপেক্ষা করে আছেন। সার্বিকভাবে বলা যায়, কবি সব কিছুর সমবায়ে তাঁর কবিতায় কিংবা ভবিষ্যতের কবিদের কবিতায় একটি ঐকতান শুনতে আগ্রহী যা আলোচ্য কবিতায় ফুটে উঠেছে।