প্রশ্নঃ বাংলাদেশে স্বল্প মজুরির হারের কারণসমূহ বর্ণনা কর ।

[ad_1]

প্রশ্নঃ বাংলাদেশে স্বল্প মজুরির হারের কারণসমূহ বর্ণনা কর ।

উত্তর- ভূমিকা : বাংলাদেশ পৃথিবীর দরিদ্রতম দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম । তাই বাংলাদেশের শ্রমিকদের মজুরির হার পৃথিবীর অনেক উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশ অপেক্ষা কম ।

বাংলাদেশে স্বল্প মজুরির হারের কারণ : বাংলাদেশে স্বল্প মজুরি হারের কারণগুলো নিয়ে আলোচনা করা ।

১. অর্থনীতির দারিদ্র্য : পৃথিবীর অন্যান্য দেশের তুলনায় আমাদের দেশের অর্থনীতি খুবই দুর্বল । মাথাপিছু উৎপাদন ও আয় কম । আর এ কারণে বাংলাদেশে শ্রমিকদের মজুরি কম ।

২. শ্রমিকদের অদক্ষতা : শিক্ষার অভাব , শারীরিক দুর্বলতা , প্রতিকূল পরিবেশ , কারিগরি শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের অভাব এবং উন্নত যন্ত্রপাতি ও কলাকৌশলের অভাবে এদেশের শ্রমিকরা অদক্ষ আর এ কারণে বাংলাদেশের শ্রমিকদের মজুরির হার কম ।

৩. শারীরিক দুর্বলতা : পুষ্টিকর খাদ্য , স্বাস্থ্যকর বাসস্থান ও প্রয়োজনীয় চিকিৎসার অভাবে এদেশের শ্রমিকরা দুর্বল স্বাস্থ্যের অধিকারী । এর ফলে এদের উৎপাদন ক্ষমতা কম আর এ কারণে তাদের মজুরিও কম ।

৪. স্বল্পজাতীয় উৎপাদন : বাংলাদেশে মোট জাতীয় উৎপাদন ও প্রবৃদ্ধির হার খুবই কম । এ কারণে বাংলাদেশে সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের পক্ষে উচ্চ হারে মঞ্জুরি প্রদান করা সম্ভব হয় না ।

৫. শূনের সহজলভ্যতা : বাংলাদেশ একটি জনবহুল দেশ । এদেশে শ্রমিকের চাহিদার তুলনায় যোগান বেশি । ফলে শ্রমিকদের মজুরিও কম ।

৬. শিশু ও নারী শ্রমিকের আধিক্য : দরিদ্রতার কারণে এদেশের অনেক পিতা – মাতা ছেলেমেয়েদের স্কুলে না পাঠিয়ে শ্রম নিয়োগে বাধ্য করে । আবার নারী শ্রমিকগণ কাজের সুযোগের অভাবে সপ্তায় শ্রম বিক্রয় করে । আর শিশু ও নারী শ্রমিকের আধিক্যের কারণে শ্রমিকের মজুরি হার কম হয় ।

৭. ত্রুটিপূর্ণ নিয়োগ পদ্ধতি : বাংলাদেশে শ্রমিক নিয়োগের ক্ষেত্রে দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতি লক্ষ্য করা যায় । এর ফলে অদক্ষ শ্রমিকরা নিয়োগ পায় । অদক্ষ শ্রমিকের কারণে উৎপাদন কম হয় ফলে শ্রমিকের মজুরিও কম হয় ।

৮. অসংগঠিত শুনবাজার : বাংলাদেশের অধিকাংশ শ্রমিক অশিক্ষিত , নিরক্ষর এবং অসংগঠিত । আর শ্রম বাজারের অসংগঠিত অবস্থার সুযোগ নিয়ে শিল্পকারখানার মালিকরা শ্রমিকদের যথাসম্ভব কম মজুরি প্রদান করে ।

৯. ত্রুটিপূর্ণ মজুরি কাঠানো : এদেশে মঞ্জুরি কাঠামো ত্রুটিপূর্ণ । এ ত্রুটিপূর্ণ মজুরি কাঠামোর সুযোগ নিয়ে মালিকরা শ্রমিকদের কম মজুরি প্রদান করে থাকে ।

১০. শক্তিশালী শ্রমিক সংক্ষের অভাব: আমাদের দেশের শ্রমিকরা অশিক্ষিত । ফলে তাদের মধ্যে মিলের অভাব রয়েছে । ফলে সাংগঠনিক ভিত্তি দুর্বল থাকায় শ্রমিকরা ন্যায্য মজুরি আদায়ে তেমন শক্তিশালী কোন ভূমিকা পালন করতে পারে না । এ কারণে তাদের মঞ্জুরির হার খুবই কম ।

১১. কর্মসংস্থানের অভাব : দেশের জনসংখ্যা অনুপাতে পর্যাপ্ত কলকারখানা গড়ে না উঠার শ্রমিকরা কম মজুরিতে কাজ করতে বাধ্য হয় ।

১২. শ্রমিকদের হারিত্বের অভাব : এদেশের অধিকাংশ স্থানে সারা বছর কাজ থাকে না । ফলে শ্রমিকরা কাজের সম্মানে গ্রাম থেকে শহরে আবার শহর থেকে গ্রামে ফিরে যায় । এ কারণে স্বল্প মজুরিতে তাদের কাজ করানো সম্ভব ।

১৩. কৃষি শুনিবের আধিক্য : এদেশ কৃষিপ্রধান দেশ । এদেশের অধিকাংশ মানুষ কৃষিকাজে নিয়োজিত থাকে । আর কৃষিতে ছদ্মবেশী ও মৌসুমি বেকারত্ব অনেক বেশি । এ কারণে এদেশে মজুরির হার কম ।

১৪. প্রযুক্তি আনো অভাব : প্রযুক্তিগত জ্ঞানের অভাবে এদেশে শ্রমিকদের উৎপাদন ক্ষমতা কম । ফলে তাদের মজুরিও কম ।

উপসংহার : সুতরাং বলা যায় এদেশের শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধিকল্পে সবাইকে সচেতন হতে হবে । তবেই দেশের উন্নয়ন দ্রুপ্ত হবে ।

[ad_2]