পৌরসভার সাথে জনগণের সম্পর্কের প্রকৃতি নিরূপণ কর।

অথবা, পৌরসভার কার্যক্রমে জনগণ কিভাবে সম্পৃক্ত থাকে?
অথবা, পৌরসভার কার্যক্রমে জনগণের অংশগ্রহণ প্রক্রিয়া উল্লেখ কর।
অথবা, পৌরসভার কার্যক্রমে জনগণের সম্পৃক্ততা তুলে ধর।
অথবা, পৌরসভার সাথে জনগণের সম্পর্কের প্রকৃতি নির্ণয় কর।
অথবা, পৌরসভার সাথে জনগণের ঘনিষ্ঠতা প্রকৃতি বর্ণনা কর।
ভূমিকা :
ইউনিয়ন পরিষদ যেমন গ্রামীণ পর্যায়ে দায়িত্বশীল শাসনব্যবস্থা গঠনের লক্ষ্যে স্থাপিত তেমনি পৌরসভার শহর এলাকায় স্থানীয় স্বায়ত্তশাসন গড়ে তােলার লক্ষ্যে স্থাপিত। শহর এলাকার সমস্যা স্থানীয় ভিত্তিতে সমাধানপূর্বক শহর জীবনের শ্রীবৃদ্ধি সাধন, গণসহায়তা বৃদ্ধি এবং শহরভিত্তিক দায়িত্বশীল নেতৃত্বের বিকাশ ঘটানাে।
পৌরসভার উদ্দেশ্য।
পৌরসভার জনগণের অংশগ্রহণ : শহর এলাকার জনগণের নিজেদের ও নিকট প্রতিষ্ঠান হলাে পৌরসভা। শহর এলাকার মানুষ কর্মব্যস্ত বেশি। তারপরেও তারা নানাভাবে পৌরসভার কাজে অংশগ্রহণ করে থাকে। পৌরবাসী। তাদের সুযােগ সুবিধা ও সুখ-দুঃখের সাথি হিসেবে নিজেরা পছন্দ করে যােগ্য ও দক্ষ মেয়র এবং কাউন্সিলর নির্বাচন। করেন। তারা যাতে পৌর সুবিধাসহ তে ও স্বস্তিতে শাসন করতে পারে সেটাও তাদের চাওয়াপাওয়া। এর জন্য নির্বাচনের প্রাক্কালে প্রার্থীদের পক্ষে ও বিপক্ষে তারা প্রচার করে। এভাবে পৌর এলাকার জনগণের অংশগ্রহণের ভিত্তিতে পৌরসভা গঠিত হয় । পৌরসভার সাথে জনগণের অংশগ্রহণ বাস্তবভিত্তিক হয় তখন, যখন জনগণ সময়মত ও নিয়মিত পৌরকর পরিশােধপূর্বক পৌরসভাকে তার গৃহীত রক্ষণাবেক্ষণ ও উন্নয়নমূলক কাজ সম্পন্ন করতে সহযােগিতা করে। পৌর এলাকার বাসিন্দাদের দেয় করের উপর ভিত্তি করে পৌরসভা বাজেট তৈরি করে। এই বাজেটের বাস্তবায়ন নির্ভর করে জনগণের প্রদত্ত করের টাকার উপর। এক্ষেত্রে পৌরসভা ও জনগণের অংশগ্রহণ প্রত্যক্ষভাবে গড়ে ওঠে। পৌরসভার উন্নয়নমূলক কাজের সময় জনগণের সহযােগিতার প্রয়ােজন হয় বেশি। পৌরসভা যখন উন্নয়নের জন্য শহর পরিকল্পনা গ্রহণ করে তখন পৌরসভাকে ব্যাপক কাজ কতে হয়। এসব কাজে জনগণ বিভিন্নভাবে অর্থবল, জনবল ও পরামর্শ দিয়ে সহযােগিতা করে। এভাবে পৌরসভার সাথে জনগণের গভীর সম্পর্ক গড়ে উঠে। জনগণের স্বাস্থ্য সুবিধার জন্য পানীয় জলের ব্যবস্থা, ভেজাল প্রতিরােধ করা, পচা ও বাসী খাবার নিয়ন্ত্রণ, হােটেল ও রেস্তোরার ওপর খবরদারি করা, মাতৃসদন, শিশু সদন, মাতৃসদন প্রতিষ্ঠান, প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য ক্লিনিক নির্মাণ ও পরিচালনার কাজ পৌরসভা করে থাকে। পৌরবাসী বিনা খরচে ও স্বল্প খরচে এসব ব্যবস্থার সুফল পেয়ে উপকৃত হয় এবং পৌরসভার সাথে তাদের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায়, উপরােক্ত বিষয়গুলাে ছাড়াও বিনােদনের জন্য পার্ক নির্মাণ, খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক কার্যক্রম পরিচালনার মাধ্যমে জনগণের সাথে পৌরসভার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রাখে। এভাবে জনগণ এবং পৌরসভা ও জনগণ একে অপরের সহযােগী হিসেবে নিবিড় বন্ধনে আবদ্ধ হয়।