পতিত ভারতের চাঁদা আদায়কার্যে ব্যস্ত ছিলাম, এ সংবাদ অত্যন্ত তুচ্ছ বোধ হইল।”- ব্যাখ্যা কর।

উৎস : আলোচ্য অংশটুকু বাংলা সাহিত্যের সার্থক ছোটগল্পকার রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অনন্য ছোটগল্প ‘একরাত্রি’ থেকে
প্রসঙ্গ : নায়কের দেশপ্রেমিক হওয়ার স্বপ্নে বিভোর থেকে সুরবালার সঙ্গে বিয়ের প্রস্তাব ফিরিয়ে দেয়া প্রসঙ্গে আলোচ্য উদ্ভি
বিশ্লেষণ : নায়ক তার উচ্চাকাঙ্ক্ষা চরিতার্থ করার জন্য পালিয়ে আসে কলকাতায়। কলকাতায় পড়ালেখার পাশাপাশি তার জীবনে যোগ হয় একটি নতুন অধ্যায়। নায়ক এখানে পরাধীন ভারতবর্ষের দূরবস্থা দেখে দেশের জন্য কাজ করাকে অগ্রগণ্য বলে মনে করলো। সে স্বদেশী আন্দোলনে যোগ দিল। নিয়মিত মিটিং মিছিলে যোগদান করে দেশের জন্য নিজেকে একজন একনিষ্ঠ কর্ম হিসেবে গড়ে তোলার কাজে লেগে গেল। ঠিক সেই সময়ে নায়কের পিতা এবং সুরবালার পিতা মিলে সুরবালার সাথে তার বিয়ের প্রস্তাব করলে নায়ক তা অবজ্ঞাভরে প্রত্যাখ্যান করে। দেশোদ্ধারের নেশা তাকে এতটাই পেয়ে বসেছিল যে, সে আজীবন বিবাহ করবে না বলে সিদ্ধান্ত নেয়। যথাসময়ে সুরবালার সাথে নোয়াখালীর সরকারি উকিল রামলোচন রায়ের বিয়ে হয়ে যায়। কলকাতার নায়কের কানে এ খবরটি পৌছালে তা তার কাছে অতি তুচ্ছ মনে হয়। কেননা নায়ক তখন পতিত ভারতের চাঁদা আদায়কার্যে ব্য ছিল। নিঃস্বার্থ আত্মত্যাগী নেতা হওয়ার সাধনায় বাল্যসখী সুরবালাকে হারানো তার কাছে তুচ্ছ বলে মনে হলো।
মন্তব্য : নায়ক ভাবকল্পনায় এতটাই বিভোর ছিল যে বাস্তব এবং অবাস্তবের মধ্যে পার্থক্য করা তার পক্ষে সম্ভব ছিল না।

https://topsuggestionbd.com/%e0%a6%8f%e0%a6%95%e0%a6%b0%e0%a6%be%e0%a6%a4%e0%a7%8d%e0%a6%b0%e0%a6%bf-%e0%a6%97%e0%a6%b2%e0%a7%8d%e0%a6%aa-%e0%a6%b0%e0%a6%ac%e0%a7%80%e0%a6%a8%e0%a7%8d%e0%a6%a6%e0%a7%8d%e0%a6%b0%e0%a6%a8/