প্রশ্নের উত্তর

তোমার তো ইহকালও নেই, পরকাল ও নেই, চুরি করতে, ডাকাতি করতে যা ইচ্ছে কর, কিন্তু মেয়েটাকে আবার এর মধ্যে নিয়ে গিয়ে ওর মাথা খাওয়া কিসের জন্য।”- ব্যাখ্যা কর।

উৎস : ব্যাখ্যেয় অংশটুকু প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় বিরচিত ‘পুঁইমাচা’ শীর্ষক ছোটগল্প থেকে চয়ন করা হয়েছে।
প্রসঙ্গ : উক্তিটি সহায়হরির স্ত্রী অন্নপূর্ণার। অন্নপূর্ণা স্বামীর দুষ্কর্মের তিরস্কার করে ভর্ৎসনাপূর্বক কথাটা বলেছেন।
বিশ্লেষণ : একদিন সকালবেলা খাওয়া দাওয়ার পর অন্নপূর্ণা ঘাটে কাজ করতে গেলে সেই ফাঁকে সহায়হরি একটা লোহার বড় শাবলসহ বড় মেয়ে ক্ষেন্তিকে নিয়ে খিড়কির দরজা দিয়ে বাইরে বেরিয়ে গেলেন। তাদের উদ্দেশ্য বরজপোতার জঙ্গল থেকে মেটে আলু তুলে আনা। তারা যখন বরজপোতার জঙ্গলে ঢুকে শাবল দিয়ে মাটি খুঁড়ে মেটে আলু তুলছিল, তখন অন্নপূর্ণা ঐ পথ দিয়ে ওপাড়ায় দুর্গাদের বাড়ি যাচ্ছিলেন। তিনি জঙ্গলের মধ্য থেকে মাটি খোঁড়ার খুপ খুপ শব্দ শুনতে পেয়েছিলেন। তখন তিনি আসল ব্যাপারটা বুঝতে না পারলেও বাড়ি ফেরার পর যখন উঠানে বড় আকারের মেটে আলুটি দেখতে পেলেন তখন সমস্ত ঘটনাটা তাঁর কাছে দিবালোকের মত স্পষ্ট হয়ে গেল। সহায়হরি মেটে আলুটির ব্যাপারে মিথ্যা গল্প বানাতে চাইলে অন্নপূর্ণা তা ঝাঁঝের সাথে নাকচ করে দিয়ে উল্লিখিত উক্তিটি করেছিলেন। তাঁর মতে, সহায়হরি চুরি-ডাকাতি করতে চাইলে করুন; কিন্তু তার সাথে মেয়েকে জড়িয়ে ওর মাথা খাওয়া একান্তই অনুচিত।
মন্তব্য : অন্নপূর্ণা স্বামীর কোন দুষ্কর্মকে সমর্থন করতেন না। এ কারণেই তিনি তীব্র ভৎসনায় স্বামীকে জর্জরিত করেছেন।

হ্যান্ডনোট থেকে সংগ্রহীত

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!