General Knowledge

তত্ত্বাবধানের ৪টি নীতি আলোচনা কর।

অথবা, তত্ত্বাবধানের ৪টি নীতিমালা ব্যাখ্যা কর।
অথবা, তত্ত্বাবধানের নীতিমালা ব্যাখ্যা কর।
অথবা, তত্ত্বাবধানের নীতিসমূহ উল্লেখ কর।
উত্তরা।। ভূমিকা :
সমাজকল্যাণ প্রশাসন সমাজস্থ বিভিন্ন উপাদান নিয়ে কাজ করে। কিন্তু সামাজিক উপাদান, নিয়ত পরিবর্তনশীল এবং সমাজস্থ মানুষের ব্যক্তিত্ব, দৃষ্টিভঙ্গি ও মূল্যবোধের পার্থক্যের কারণে প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্যার্জনের জন্য বিভিন্ন দক্ষতাসম্পন্ন কর্মচারী নিয়োগ করতে হয়। ফলে বিভিন্ন দক্ষতা ও গুণাবলিসম্পন্ন কর্মচারীদের গতিশীল ভূমিকা তদারকির জন্য সর্বজনীন নীতি অনুসরণ করা অনেকাংশে অসম্ভব বরং অনেকক্ষেত্রে বাস্তবতার আলোকে তত্ত্বাবধায়ক তার সুবিধামতো নীতি অনুসরণ করে থাকে।
তত্ত্বাবধানের নীতিমালা সার্বিকভাবে তত্ত্বাবধানের ক্ষেত্রে যেসব সাধারণ নীতিমালা অনুসরণ করা হয় তা নিম্নরূপ :
১. কর্মীদের ভূমিকা সম্পর্কে অবহিত করানো : তত্ত্বাবধানের অন্যতম নীতি হলো কর্মচারীদের দায়িত্ব এবং কর্তব্য সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা দেয়া, যাতে তারা তাদের করণীয় অর্থাৎ, এজেন্সির লক্ষ্য, উদ্দেশ্য, তার সঠিক কাজ কি, সে কিভাবে কাজ করবে, সহকর্মীদের সাথে তার কাজের কি সম্পর্ক, কার প্রতি সে দায়িত্বশীল, কোথা হতে সে প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা পাবে, কোন আইনকানুনের আওতায় কাজ করতে হবে এবং তার কাজ কিভাবে মূল্যায়িত হবে ইত্যাদি বিষয় সম্পর্কে অবগত হয়ে তার ভূমিকা পালনে সক্ষম হয়।
২. সুনির্দিষ্ট ফর্ম নির্দেশনা : তত্ত্বাবধানে অবশ্যই সুনির্দিষ্ট কর্ম নির্দেশনা থাকতে হবে, যাতে সে অনুযায়ী তার ভূমিকা পালনে সক্ষম হয়। এ নীতি একদিকে কর্মীদেরকে শিক্ষিত এবং উন্নত করে তোলে। অন্যদিকে, এপ্লেসির কাজের গুণগত মানকে উন্নত করে তুলতে সাহায্য করে। তাছাড়া তত্ত্বাবধানমূলক নির্দেশনার মধ্যে থাকে কাজে সম্পর্কিত তথ্য,কাজকে আক্রান্ত করছে এমন ঘটনাবলি, প্রতিষ্ঠানের নীতি, পরিকল্পনা ও কৌশল সম্পর্কে নতুন কোন তথ্য যা তাদের কাজের সাথে সম্পর্কযুক্ত।
৩. গঠনমূলক সমালোচনা : প্রতিষ্ঠানের সাথে সংশ্লিষ্ট যেসব কর্মচারী তাদের প্রতাশিত ভূমিকা পালনে সক্ষম হচ্ছে না, তাদের কর্মদক্ষতা বৃদ্ধির জন্য গঠনমূলক সমালোচনা করতে হবে। অর্থাৎ, উত্তম ভূমিকা পালনের ন্যায় দুর্বল ভমিকারও যথাযথ স্বীকৃতি প্রদান করতে হবে, যাতে তারা তাদের দুর্বলতা ও অক্ষমতা কাটিয়ে উঠার অনুপ্রেরণা লাভ করে।
৪. ভালো কাজের স্বীকৃতি : এটি তত্ত্বাবধানের একটি গুরুত্বপূর্ণ নীতি। কেননা, ভালো কাজের স্বীকৃতি কর্মীকে নাহন যোগায়, অনুপ্রাণিত করে, প্রবল উৎসাহ উদ্দীপনার সৃষ্টি করে। একজন সফল তত্ত্বাবধায়ক এ নীতির প্রতি সর্বোচ্চ সচেতন থাকেন। তিনি কর্মীদের কৃত ভালো কাজকে প্রশংসা করেন এবং যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে তাকে পুরস্কৃত করার জন্য সুপারিশ করেন।
উপসংহার : উপর্যুক্ত আলোচনা থেকে বলা যায় যে, প্রাতিষ্ঠানিক ক্রিয়া বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি প্রয়োগ যত বেশি বিস্তৃত হচ্ছে, প্রতিষ্ঠানের কার্যাবলিতে তত্ত্বাবধানের গুরুত্ব তত বেশি বৃদ্ধি পাচ্ছে। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানের একটি ছোট ভুল সমগ্র কর্মসূচিকে নস্যাৎ করে দিতে পারে। এজন্য কর্মসূচির পরিকল্পনা গ্রহণ, কর্মচারী নিয়োগ, নীতিনির্ধারণ, বাজেট নির্ধারণ এবং সর্বোপরি কর্মসূচির প্রথম থেকে শুরু করে একটা সার্থক ফলাফল আনয়ন পর্যন্ত তত্ত্বাবধানের গুরুত্ব অত্যধিক।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!