General Knowledge

ট্রাইবাল সমাজের বৈশিষ্ট্য লিখ।

অথবা, ট্রাইবাল সমাজের প্রকৃতি উল্লেখ কর।
অথবা, উপজাতি সমাজের বৈশিষ্ট্য লিখ।
অথবা, উপজাতি সমাজের প্রধান প্রধান বৈশিষ্ট্য উল্লেখ কর।
অথবা, ট্রাইবাল সমাজের প্রধান প্রধান বৈশিষ্ট্য উল্লেখ কর।
উত্তর৷ ভূমিকা :
গ্রামীণ সমাজবিজ্ঞান গ্রাম জীবন সম্পর্কে একটা সুনির্দিষ্ট জ্ঞান। আর এ বিজ্ঞান গ্রাম সমাজের সংগঠন, কাঠামো, প্রক্রিয়া, এর মৌলিক সামাজিক ব্যবস্থাসমূহ এবং পরিবর্তন বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে আলোচনা ও বিশ্লেষণ করে থাকে। সাধারণত কৃষিনির্ভর সমাজকেই আমরা গ্রাম সমাজ বলে থাকি। সহজ কথায় যে বিজ্ঞান কৃষকদের সমাজকে
অধ্যয়ন করে তাই গ্রামীণ সমাজবিজ্ঞান ।
ট্রাইবাল সমাজ : ট্রাইব বলতে বুঝায় এমন একটি জনগোষ্ঠী যারা মোটামুটিভাবে একটা অঞ্চলে সংগঠিত এবং যাদের মধ্যে রয়েছে সাংস্কৃতিক ঐক্য এবং যার সদস্যরা মনে করে যে, তারা একই সাংস্কৃতিক এককের অন্তর্ভুক্ত। ট্রাইবাল সমাজের প্রধান প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলোকে নিম্নে পর্যায়ক্রমে উল্লেখ করা হলো
১. অভিন্ন অঞ্চল : ট্রাইব সাধারণত একই অঞ্চলে বসবাস করে। খাদ্য সংগ্রহ শেষে প্রায়ই ট্রাইবাল লোক একটি নির্দিষ্ট এলাকায় ফিরে আসে অথবা নতুন কোনো এলাকায় তারা আপেক্ষিক অর্থে স্থায়ী বসবাস শুরু করে।
২. অভিন্ন ভাষা : প্রতিটি ট্রাইবাল গোষ্ঠীর সদস্যরা একই ভাষায় কথা বলে।
৩. অন্তর্গোষ্ঠী বিবাহ : ট্রাইবাল সমাজে অন্তঃগাষ্ঠী বিবাহ প্রচলিত থাকে। গোষ্ঠীর সদস্যদের মধ্যে রক্তের সম্পর্ক বা দৃঢ় আত্মীয়তার বন্ধন বর্তমান থাকে।
৪. ঐক্যের চেতনা : ট্রাইবের সব সদস্যের মধ্যে একটা ঐক্যের অনুভূতি বিদ্যমান, সংহতি বোধও তীব্র
৫. ধর্মের গুরুত্ব : ট্রাইবরা একই পূর্বপুরুষে পূজা করে থাকে।
৬. রাজনৈতিক সংগঠন : প্রত্যেক ট্রাইবাল সমাজের নিজস্ব রাজনৈতিক সংগঠনও থাকে। সব ট্রাইবাল সমাজই অবশ্য কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের অধীনে সংগঠিত নয় ।
ট্রাইবাল সমাজের সামাজিক কাঠামো : প্রতিটি ট্রাইবের নিজস্ব সমাজব্যবস্থা তথা সমাজকাঠামো রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ
বলা যায়, গারো সমাজের মধ্যে মাতৃপ্রধান, মাতৃসূত্রীয় এবং মাতৃবাস প্রথা লক্ষ্য করা যায়। অথচ চাকমা সমাজ ঠিক এর বিপরীত রীতি অনুসরণ করে। উল্লেখ্য যে, ট্রাইবাল সমাজের বৈশিষ্ট্যের মধ্যেই এর সামাজিক কাঠামোর স্বরূপ নিহিত।
ট্রাইবাল সমাজের অর্থনৈতিক কাঠামো : ট্রাইবাল জনগোষ্ঠী যে অর্থনৈতিক জীবনযাত্রা নির্বাহ করে তা বিশেষভাবে প্রকৃতিনির্ভর। এরা প্রধানত শিকার ও খাদ্য সংগ্রহের উপর নির্ভরশীল। কিছু কিছু ক্ষেত্রে অতিসাধারণ প্রকৃতির লেনদেনের ব্যবস্থাও এদের মধ্যে প্রচলিত। কোনো ট্রাইব এখনও জুম চাষের উপর নির্ভরশীল, কোনোটি আবার হালচাষ এবং ফলমূল চাষের উপর নির্ভরশীল।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, কোনো সমাজের সীমানা ঠিক করা যাবে না, যদি না কোনো সমাজ বাহ্যিকভাবে অন্য সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়। কোনো সমাজই অবশ্য অন্য সমাজ থেকে সম্পূর্ণভাবে বিচ্ছিন্ন নয়।
গ্রামীণ সমাজের আলোচনায় কৃষক সমাজ, কৃষিভিত্তিক সমাজ ও ট্রাইবাল সমাজের অবিচ্ছিন্নতা বা সম্পর্ক বিশেষভাবে লক্ষণীয় হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!