প্রশ্নের উত্তর

জরিপ পদ্ধতির অসুবিধাগুলো বর্ণনা কর।

অরিপ পদ্ধতির সীমাবদ্ধতা লিখ।
অরিপ পদ্ধতির দুর্বল দিকগুলো লিখ।
অথবা,
জরিপ পদ্ধতির অসুবিধাগুলো কি কি?
অথবা, জরি: পদ্ধতির সীমাবদ্ধতাসমূহ ব্যাখ্যা কর।
অথবা, জরিপ .তির অসুবিধাসমূহ উল্লেখ কর।
উত্তরঃ ভূমিকা :
বর্তমানে সামাজিক বিভিন্ন জরিপের বহুল প্রচলনের পিছনে যে বিষয়টি বিশেষভাবে কাল্প করছে তা হলো সামাজিক জরিপের সার্থক উপযোগিতা। তবে বহুল প্রচলিত, উপযোগী ও জনপ্রিয় হওয়া সত্ত্বেও সামাজিক জরিপ সম্পূর্ণভাবে ত্রুটিমুক্ত নয়। অর্থাৎ সামাজিক জরিপের কতকগুলো সীমাবদ্ধতা বা দুর্বল দিক রয়েছে।
জরিপ পদ্ধতির অসুবিধাগুলো : সামাজিক গবেষণার ক্ষেত্রে জরিপ পদ্ধতি অত্যন্ত জনপ্রিয়, কার্যকরী এবং বহুল ব্যবহৃত একটি পদ্ধতি। তথাপি এর কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে। নিম্নে তা উল্লেখ করা হলো :
১. ব্যয়বহুল পদ্ধতি : যেখানে ব্যাপক পরিসরে জরিপ কাজ পরিচালনা করা হয়, সেখানে প্রচুর অর্থের প্রয়োজন হয় । সেক্ষেত্রে জরিপের সাহায্যে তথ্যসংগ্রহের জন্য গবেষণা চালানো উন্নত দেশে সহজ হলেও বাংলাদেশের মতো তৃতীয় বিশ্বের দরিদ্র দেশগুলোতে যথেষ্ট অসুবিধাজনক।
২. অশিক্ষিত জনগণ : অশিক্ষিত জনগোষ্ঠীর মধ্যে জরিপ পদ্ধতিতে তথ্যসংগ্রহ করা যথেষ্ট অসুবিধাজনক। যেমন- বাংলাদেশের শিক্ষিত জনগণের চেয়ে অশিক্ষিত জনগণ বেশি হওয়ায় তারা গবেষণা ও জরিপের প্রয়োজনীয়তা ও গুরুত্ব অনুধাবনে অক্ষম। তাই তারা সঠিক তথ্য প্রদান করে গবেষণায় সহযোগিতা করতে ব্যর্থ হয়।
৩. ভুল তথ্য পাওয়ার সম্ভাবনা : অজ্ঞতা, অপসংস্কৃতি, কুসংস্কার, ধর্মীয় গোঁড়ামি ইত্যাদি কারণে উত্তর দাতাদের নিকট থেকে জরিপ পদ্ধতির মাধ্যমে সঠিক তথ্য পাওয়া যায়। বিশেষ করে উত্তরদাতা ভুল উত্তর দিয়ে গবেষণার কাজকে জটিল করে তুলতে পারে। তাছাড়া নিরুত্তরজনিত সমস্যা তো রয়েছেই।
৪. পক্ষপাতিত্ব : জরিপ পদ্ধতির ক্ষেত্রে যিনি তথ্যসংগ্রহ করেন তিনি অনেক সময় ব্যক্তিগত মূল্যবোধ দ্বারা প্রভাবিত হতে পারেন। ফলে এক্ষেত্রে পক্ষপাতিত্বের একটা সম্ভাবনা থেকে যায়।
৫. দরিদ্রতা দরিদ্রতা সামাজিক জরিপের অন্যতম প্রতিবন্ধক। যেমন- দরিদ্র ব্যক্তি সবসময় কিছু প্রাপ্তির আশায় কাজ করে। তাই যেসব ক্ষেত্রে প্রাপ্তির আশা থাকে না সেখানে তার উৎসাহ কম থাকে। ফলে সঠিক উত্তর তার কাছ থেকে অনেক সময় পাওয়া যায় না।
৬. উত্তরদাতার আবেগ অনুপস্থিতি: জরিপ পদ্ধতিতে যখন কোন গবেষক উত্তরদাতার নিকট থেকে তথ্য সংগ্রহ করেন তখন উত্তরদাতার মনোভাব সঠিকভাবে ব্যক্ত হয় না। অর্থাৎ উত্তরদাতার আবেগের যথাযথ প্রতিফলন ঘটে না।
৭. নমুনায়নের সমস্যা : নমুনায়নের সফলতা ও নির্ভরযোগ্যতার উপরই নির্ভর করে জরিপ পদ্ধতির সাফল্য। কিন্তু আধেয় জনগোষ্ঠীর মধ্যে নানামুখী সমস্যার কারণে সঠিক নমুনায়ন কষ্টকর এবং সম্পাদিত নমুনায়ন প্রায়শই প্রতিনিধিত্বশীল হয় না ।
৮. ক্ষণস্থায়ী : জরিপ পদ্ধতির ফলাফল অনেক ক্ষেত্রেই ক্ষণস্থায়ী হয়। কেননা অধিকাংশ সময়ই পরিবর্তনশীল বিষয়
নিয়ে জরিপ কার্য পরিচালনা করা হয়। ফলে স্বল্প সময়ের ব্যবধানে সংগৃহীত তথ্য খুব বেশি সময় কার্যকর থাকে না।
উপসংহার : উপর্যুক্ত আলোচনার প্রেক্ষিতে বলা যায় যে, জরিপ পদ্ধতির মাধ্যমে কোন একটি বিষয়ের অন্তর্গত সমগ্রক সম্পর্কে একটি সামগ্রিক চিত্র পাওয়ার চেষ্টা করা হয়। এর বিভিন্ন সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও মানবসভ্যতার অতি প্রাচীনকাল থেকেই বিভিন্ন গোষ্ঠীভিত্তিক পরিকল্পনার ক্ষেত্রে তা কার্যকর অবদান রেখে আসছে ।

হ্যান্ডনোট থেকে সংগ্রহীত

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!