General Knowledge

গারো সমাজের ধর্মের বিবরণ দাও ।

গারো সমাজের ধর্মের বিবরণ দাও ।
গারোদের ধর্ম ব্যবস্থা সম্পর্কে আলোচনা কর।
অথবা, গারোদের ধর্ম ব্যবস্থা কেমন?
অথবা, গারোদের ধর্ম সম্পর্কে লিখ।
উত্তরা৷ ভূমিকা : বাংলাদেশে যেসব উপজাতি রয়েছে তাদের মধ্যে গারোরা অন্যতম। ময়মনসিংহ জেলার বিভিন্ন অঞ্চলে টাঙ্গাইল জেলার মধুপুর অঞ্চলে গারোরা বাস করে। বাংলাদেশ ছাড়াও ভারতের মেঘালয় রাজ্য আসাম ও পার্বত্য ত্রিপুরা রাজ্যের গারোদের এক বিশাল জনগোষ্ঠী বাস করে। গারোদের ধর্ম : বাংলাদেশের বর্তমান গারোদের ৯০% ধর্মান্তরিত খ্রিস্টান। প্রায় ২% মুসলিম ও হিন্দু, বাকি
প্রায় ৮৮% এর মধ্যে ঐতিহ্যবাহী ধর্মই প্রাধান্য পাচ্ছে। গারোদের ঐতিহ্যবাহী ধর্মের নাম সংসারেক, এর অর্থ স্পষ্ট নয়।
গারোরাও এর অর্থ জানে না। তবে গবেষক খালেক এর মতে গারোরা যখন অন্যান্য ধর্মের সংস্পর্শে আসে তখন নিজেদের
ধর্মের একটি নাম দিয়ে নিয়েছে নতুবা অন্যরা তাদের ধর্মের নাম দিয়েছে সংসারেক। খালেক মনে করেন যে, সম্ভবত
ধর্ম। । শাংলা সংসার থেকে সংসারেক শব্দটি এসেছে। এখানে সংসার বলতে সম্ভবত জগৎ সংসারকেই বুঝা হচ্ছে। অর্থাৎ সংসার,
পরিবার, খানা Household বা জাগতিক বিষয়ই তাদের
ঐতিহ্যগতভাবে গারোরা সর্বপ্রাণবাদে বিশ্বাসী। তারা যে অতিপ্রাকৃতে বিশ্বাস করে তার নাম মিতে বা মাইতে, মাইতে দেবদেবী এবং প্রেতাত্মা উভয়কে বুঝাতেই ব্যবহৃত হয়। গারোদের মতে কিছু মাইতে দয়ালু, পরোপকারী তথা বন্ধুবাৎসল। অপরপক্ষে, কিছু মাইতে নির্দয় এবং শত্রুভাবাপন্ন। গারোরা উভয় ধরনের মাইতেকেই পূজা অর্চনার দ্বারা খুশি করতে চায়।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায়, ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষ দিক থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত বাংলাদেশে গারোদের ৯০% খ্রিস্টান ধর্ম গ্রহণ করেছে। ব্যাপটিস্ট এবং ক্যাথোলিক মিশনারী কর্মীরা গারোদের খ্রিস্টান ধর্মে দীক্ষিত করতে সমর্থ হয়েছে। ময়মনসিংহ অঞ্চলে ব্যাপটিস্টরা সংখ্যায় বেশি। পক্ষান্তরে, মধুপুর গড়ে ক্যাথোলিক সংখ্যাই বেশি, কিছু কিছু
গারো (প্রায় ২%) অবশ্য মুসলিম ও হিন্দুধর্ম গ্রহণ করেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!