গণসংখ্যা নিবেশনের বৈশিষ্ট্য লিখ ।

অথবা, গণসংখ্যা নিবেশনের বৈশিষ্ট্যসমূহ ব্যাখ্যা কর।
অথবা, গণসংখ্যা নিবেশনের বৈশিষ্ট্য তুলে ধর।
অথবা, গণসংখ্যা নিবেশনের বৈশিষ্ট্য উল্লেখ কর।
উত্তরায় ভূমিকা :
গণসংখ্যা নিবেশন একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিসংখ্যানিক পদ্ধতি। উপাত্তকে সংক্ষিপ্তভাবে উপস্থাপনের এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ উপায় । অধিকাংশ ক্ষেত্রেই গণসংখ্যা নিবেশন সংখ্যাত্মক উপাত্ত নিয়ে আলোচনা করে। তাই গণসংখ্যা সন্নিবেশিত উপাত্তসমূহ বিশ্লেষণ করলে এর কতকগুলো সাধারণ বৈশিষ্ট্য লক্ষ করা যায় ।
গণসংখ্যা নিবেশনের বৈশিষ্ট্য : গণসংখ্যা নিবেশন একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিসংখ্যানিক পদ্ধতি। উপাত্তকে সংক্ষিপ্তভাবে উপস্থাপনের এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ উপায়। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই গণসংখ্যা নিবেশন সংখ্যাত্মক উপাত্ত নিয়ে আলোচনা করে। তাই গণসংখ্যা সন্নিবেশিত উপাত্তসমূহ বিশ্লেষণ করলে এর কতকগুলো সাধারণ বৈশিষ্ট্য লক্ষ করা যায় । নিম্নে সেগুলো আলোচনা করা হলো :
১. সংখ্যামানের ক্রমানুযায়ী সজ্জিত : গণসংখ্যা নিবেশনে সংগৃহীত সংখ্যাত্মক উপাত্তসমূহ তাদের মানের ক্রমানুযায়ী সজ্জিত হবে। এ সকল উপাত্ত বিভিন্ন এককে পরিচিত হলেও তাদের মানের পার্থক্য অবশ্যই থাকবে। এমনকি একই মানের একাধিক সংখ্যাও থাকতে পার । যেমন- মানুষের উচ্চতা, তাদের দৈনিক আয়-ব্যয়ের হিসাব প্রভৃতি বিভিন্ন এককে প্রদর্শিত হতে পারে বা তাদের মধ্যে কিছু কিছু সংখ্যা একই মানবিশিষ্ট হতে পারে। যেমন- কোনো কারখানার পাঁচজন
শ্রমিকের দৈনিক মজুরি যথাক্রমে ৭০, ৭৫, ৭৫, ৮০ এবং ৮৫ টাকা। প্রদত্ত উপাত্তসমূহ পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যায় একই আয়বিশিষ্ট একাধিক শ্রমিকও রয়েছে। এরূপ ক্ষেত্রে সর্বনিম্ন এবং সর্বোচ্চ আয় নিরূপণ করে গণসংখ্যা নিবেশন প্রস্তুত করতে হয়।
২. সংখ্যামানের ব্যবধান বা পার্থক্য : গণসংখ্যা নিবেশনে প্রদর্শিত উপাত্তসমূহের মধ্যে তাদের মানের পার্থক্য বা ব্যবধান সৃষ্টি হবে। এ ব্যবধান পরবর্তী পর্যায়ে বিচ্যুতি নামে পরিচিত হবে। দুটি প্রান্তিক রাশির মধ্যবর্তী পরিসরই হলো বিচ্যুতি।
৩. কেন্দ্রাভিমুখ প্রবণতা : গণসংখ্যা নিবেশনের একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হলো কেন্দ্রাভিমুখ প্রবণতা। যে কোন গণসংখ্যা নিবেশনের প্রতি লক্ষ করলে দেখা যায় যে, প্রাত্তদ্বয়ের উপাত্তের মান মধ্যবর্তী উপাত্তের মান অপেক্ষা কম । অর্থাৎ চলকের মধ্যবর্তী উপাত্তের পরিমাণ তুলনামূলকভাবে বেশি এবং মধ্যবর্তী যে কোনো উপাত্তে এর মান সর্বোচ্চ সীমায় পৌঁছে। সর্বোচ্চ মান হতে গণসংখ্যা ক্রমশ উভয় দিকে কমবেশি হ্রাস পেতে থাকে। তবে কোনো কোনো ক্ষেত্রে এর ব্যতিক্রম দেখা যায়। কোন নির্দিষ্ট শ্রেণি বা পরস্পর সন্নিবেশিত একাধিক শ্রেণিতে গণসংখ্যা সর্বাধিক পুঞ্জীভূত হওয়ার
প্রবণতাকে কেন্দ্রাভিমুখ প্রবণতার বিভিন্ন প্রকার মধ্যকমান দ্বারা পরিমাপ করা যায়।
৪. গণসংখ্যার বণ্টন : গণসংখ্যা নিবেশনে প্রদর্শিত উপাত্তের শ্রেণিবিন্যাসের দ্বারা গণসংখ্যার বণ্টন সম্পর্কে ধারণা লাভ করা যায়। গণসংখ্যা বণ্টন প্রতিসম না অপ্রতিসম তা গণসংখ্যার বণ্টনের দ্বারা পরিমাপ করা যায়। গণসংখ্যা যদি কোনো উপাত্তের মান হতে সমান হারে বৃদ্ধি পেয়ে কোনো একটি নির্দিষ্ট মানে পৌঁছে আবার ক্রমান্বয়ে সমানহারে হ্রাস পেতে থাকে তবে তা প্রতিসম চলক এবং গণসংখ্যার এ হ্রাস-বৃদ্ধি অসমান হারে সংঘটিত হলে তা অপ্রতিসম চলক হিসেবে বিবেচিত হবে। গণসংখ্যার এরূপ বণ্টনকে ‘বঙ্কিমতা পরিমাপ’ বলা হয় ।
উপসংহার : উপর্যুক্ত আলোচনা শেষে বলা যায় যে, উপরে উল্লেখিত বৈশিষ্ট্যগুলোই সাধারণত গণসংখ্যা নিবেশনে পরিলক্ষিত হয়।