প্রশ্নের উত্তর

খোদা যাকে শাফা না দেন, তাকে কে ভালো করতে পারে?”— ব্যাখ্যা কর।

উৎস : আলোচ্য অংশটুকু বিশিষ্ট কথাসাহিত্যিক আবুল মনসুর আহমদ রচিত ‘হুযুর কেবলা’ শীর্ষক ছোটগল্প থেকে চয়ন করা
প্রসঙ্গ : উক্তিটি পীর সাহেবের। পীর সাহেব প্রতিবাদী যুবক এমদাদের কর্মকাণ্ডকে হাস্যাস্পদ করার লক্ষ্যে এ আপ্ত বাক্যটি
ব্যবহার করেন।
বিশ্লেষণ : ভণ্ড ও প্রতারক পীর সাহেব নিজের অসৎ উদ্দেশ্য সাধনের জন্য শরিয়ত, খোদা, রাসূল প্রভৃতিকে ব্যবহার করতে দ্বিধা করেন নি। তিনি মোরাকেবা নামক এক পূর্বপরিকল্পিত পাতানো খেলার আয়োজনের মাধ্যমে বাড়িওয়ালার ছেলে রজবের সদ্যবিবাহিতা সুন্দরী স্ত্রী কলিমনকে নিজের জন্য হালাল করিয়ে নেন। আত্মীয়স্বজন ও পাড়াপ্রতিবেশী ও মুরিদদের অসহনীয় চাপ সহ্য করতে না পেরে রজব কলিমনকে তালাক দিতে বাধ্য হয়। এরপর তড়িঘড়ি করে পীর সাহেবের সাথে কলিমনের শুভবিবাহ সুসম্পন্ন হয়ে গেলে এমদাদের ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে যায়। সে অতর্কিতে বরাসনে বসে থাকা পীর সাহেবের দাড়ি ধরে হেচ্‌কা টান মেরে মাটিতে ফেলে দেয়। শাগরেদরা ‘মার’ ‘মার’ শব্দে এমদাদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে কিল ঘুষি মারতে থাকে। এমদাদ চিৎকার করে পীর সাহেবের ভণ্ডামির কথা সকলকে জানানোর চেষ্টা চালায়। কিন্তু কেউ তার কথা কানে না তুলে তাকে গ্রাম থেকে বের করে দেয়ার উদ্যোগ নিলে পীর সাহেব কপট সহানুভূতি প্রদর্শন পূর্বক বলেন- “দেখিস্ বাবারা, ওকে বেশি মারপিট করিস্ না। ও পাগল । ওর মাথা খারাপ। ওর বাপ ওকে আমার হাতে সঁপিয়া দিয়াছিল। অনেক তাবিয দিলাম। কিন্তু কোন ফল হলো না। খোদা যাকে শাফা না দেন, তাকে কে ভালো করিতে পারে?” হুযুরের এ কথাগুলো ছিল ডাহা মিথ্যা কথা।
মন্তব্য : ভণ্ডপীর সাহেব কপট সহানুভূতি প্রদর্শন করে শাগরেদদের নিরস্ত করার নামে এভাবে উৎসাহিত করেছেন।

হ্যান্ডনোট থেকে সংগ্রহীত

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!