কেন্দ্রীয় প্রবণতার আদর্শ পরিমাপক কোনটি এবং কেন? কোন পরিমাপকটি কেন্দ্রীয় প্রবণতার আদর্শ পরিমাপক

অথবা, কোন পরিমাপকটি কেন্দ্রীয় প্রবণতার আদর্শ পরিমাপক?
উত্তর ভূমিকা :
পরিসংখ্যানে তথ্যাবলি সংগ্রহের পর সেগুলো গবেষণা পরিচালনার জন্য বিভিন্নভাবে ব্যবহার করা হয়। কেন্দ্রীয় প্রবণতা পরিসংখ্যানের একটি গুরুত্বপূর্ণ আলোচ্য বিষয়। কেন্দ্রীয় প্রবণতা বলতে বুঝানো হয়। মানসমূহের কেন্দ্রের দিকে ধাবমান হওয়ার প্রক্রিয়াকে। অর্থাৎ, কেন্দ্রীয় প্রবণতায় মানসমূহ মধ্যম মানের দিকে অগ্রসর হয়। কেন্দ্রীয় প্রবণতার উত্তম পরিমাপ হলো গাণিতিক গড়। গাণিতিক গড় কেন্দ্রীয় প্রবণতা পরিমাপের সবচেয়ে উপযোগী। এর ব্যবহারও সর্বাধিক। গাণিতিক গড়ের ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় প্রবণতা পরিমাপের সকল বৈশিষ্ট্য মেনে চলা হয়। এজন্য কেন্দ্রিয় প্রবণতা পরিমাপে উত্তম পদ্ধতি হলো গাণিতিক গড়
গাণিতিক গড় নির্ণয় পদ্ধতি : গণসংখ্যা নিবেশনে বিভিন্ন পদ্ধতিতে উপাত্তসমূহ সারণিবন্ধকরণ করা হয়। উপাত্তসমূহের বিন্যাসের বিভিন্ন ধরনের প্রেক্ষিতে বিভিন্নভাবে গাণিতিক গড় নির্ণয় করা হয়। প্রধানত অশ্রেণিকৃত, বিছিন্ন ও অবিচ্ছিন্ন রাশি থেকে গড় নির্ণয় করা হয়। এসব রাশি থেকে আবার প্রত্যক্ষ পদ্ধতি ও পরোক্ষ পদ্ধতিতে গড় নির্ণয় করা হয়। বিভিন্ন প্রকার রাশির গড় নির্ণয়ের পদ্ধতিগুলো নিয়ে আলোচনা করা হলো :
অশ্রেণীকৃত রাশি বলে।
১. অশ্রেণীকৃত রাশি : রাশিগুলো যদি বিক্ষিপ্ত অবস্থায় অর্থাৎ, শ্রেণিকরণ করা না হয়, তাকে
যেমন- ৭, ৯, ১৩, ২০, ১৯, ২১, ২৫, ২৮, ১৩, ২৩, ৩২ এগুলো অশ্রেণীকৃত রাশি। Xer হলে মোট সংখ্যা
ক. প্রত্যক্ষ পদ্ধতি : কোনো একটি চলককে x ধরা হলে এবং এর ভিন্ন ভিন্ন মান No. Xo. No
হবে N। এর যোজিত গড় বা গাণিতিক গড় হবে :

খ. সংক্ষিপ্ত পদ্ধতি : তথ্যমালায় রাশির সংখ্যা অনেক বেশি বা রাশিগুলো অনেক বড় হলে সরাসরি পদ্ধতির চেয়ে সংক্ষিপ্ত পদ্ধতিতে গড় নির্ণয় করা খুবই সহজ হয়ে থাকে। এ পদ্ধতিতে গড় নির্ণয়ের জন্য প্রথমে প্রদত্ত রাশিমালা হতে একটি মানকে কাল্পনিক বা অনুষিত গড় (Assumed Mean) ধরে নেয়া হয়। উক্ত কাল্পনিক গড়টি অনুমানের উপর ভিত্তি করেই ধরে নিতে হয।

২. বিচ্ছিন্ন রাশি : বিচ্ছিন্ন রাশি ও অশ্রেণীকৃত রাশি। এক্ষেত্রে প্রতিটি রাশি মানের সাথে বিভিন্ন গণসংখ্যা দেওয়া
থাকে। যেমন-

ক. প্রত্যক্ষ পদ্ধতি : বিচ্ছিন্ন রাশির ক্ষেত্রে প্রত্যক্ষ পদ্ধতিতে গড় নির্ণয়ের জন্য রাশি মানসমূহকে তাদের গণসংখ্যার
সাথে তর্ণ করা হয়। এদের সমষ্টিকে গণসংখ্যা দ্বারা ভাগ করা হয়।

খ. সংক্ষিপ্ত পদ্ধতি : এক্ষেত্রে তথ্যরাশি থেকে অথবা অন্য কোনো মধ্যবর্তী মানকে কল্পিত গড় (২) ধরে প্রতিটি তথ্য থেকে তা বিয়োগ করে নিতে হয়। বিয়োগফলকে প্রতিটি শ্রেণির গণসংখ্যা (1) দ্বারা গুণন করে।গুণফলের সমষ্টিকে মোট গণসংখ্যা দ্বারা ভাগ করতে হয়। পরবর্তীতে উক্ত ভাগফলকে কল্পিত (A) গড়ের সাথে যোগ করে গাণিতিক বা যোজিত গড় নির্ণয় করা হয়।

৩. অবিচ্ছিন্ন রাশি : গণসংখ্যা নিবেশনে রাশিমানগুলো শ্রেণিকরণ করা হলে এবং প্রতি শ্রেণির মান পরস্পর অবিচ্ছিন্ন থাকলে তাকে অবিচ্ছিন্ন রাশি বলে। যেমন-

ক. প্রত্যক্ষ পদ্ধতি : অবিচ্ছিন্ন রাশির ক্ষেত্রে প্রত্যক্ষ পদ্ধতিতে গড় নির্ণয়ের জন্য প্রতি শ্রেণির মধ্যমান নির্ণয় করা হয়। মধ্যমানের সাথে নিজ নিজ শ্রেণির গণসংখ্যার সাথে গুণ করা হয় এদের সমষ্টিকে মোট গণসংখ্যা দ্বারা ভাগ করা।

খ. সংক্ষিপ্ত পদ্ধতি : অবিচ্ছিন্ন গণসংখ্যা নিবেশনের ক্ষেত্রে সংক্ষিপ্ত পদ্ধতিতে গাণিতিক গড় নির্ণয়ের সূত্রটি হলো ;

উপসংহার : উপর্যুক্ত আলোচনার পরিশেষে বলা যায় যে, এভাবে বিভিন্ন পদ্ধতিতে গাণিতিক গড় নির্ণয় করা যায়।