কাদারিয়া সম্প্রদায়ের উৎপত্তি ও ক্রমবিকাশ লেখ ।

অথবা, কাদারিয়াদের উদ্ভব ও ক্রমবিকাশ লেখ ।
অথবা, কাদারিয়া সম্প্রদায়ের উৎপত্তি ও ক্রমবিকাশ তুলে ধর।
অথবা, কাদারিয়া সম্প্রদায়ের উদ্ভব ও ক্রমবিকাশ সংক্ষেপে আলোচনা কর।
অথবা, কিভাবে কাদারিয়া সম্প্রদায়ের উদ্ভব ও ক্রমবিকাশ ঘটে?
উত্তর৷ ভূমিকা :
ইসলাম বিশ্বভ্রাতৃত্বের বাণীবাহক। মুসলমানদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টিকে ইসলাম গভীরভাবে ঘৃণা করে। পবিত্র কুরআনে বিভেদ সৃষ্টিকারীদের প্রতি কঠোর সতর্কবাণী উচ্চারিত হয়েছে। মহানবীর জীবদ্দশায় মুসলমানেরা একটি শক্তিশালী জাতি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছিল। কিন্তু তাঁর তিরোধানের পর মুসলমানদের মধ্যে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের সৃষ্টি হয়। এই সম্প্রদায়গুলোর মধ্যে কাদারিয়া সম্প্রদায় অন্যতম।
কাদারিয়া সম্প্রদায়ের উৎপত্তি ও ক্রমবিকাশ : শিয়া ও খারিজি সম্প্রদায়ের উদ্ভবের প্রতিক্রিয়াস্বরূপ জাবারিয়া সম্প্রদায়ের আবির্ভাব ঘটে। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেয়ে জাবারিয়া মতবাদ জনপ্রিয় হতে শুরু করে উমাইয়া আমলে । জাবারিয়া সম্প্রদায়ের প্রতিক্রিয়াস্বরূপ কাদারিয়া সম্প্রদায়ের আবির্ভাব হয়। কারণ জাবারিয়া সম্প্রদায়ের বিরোধী মতবাদ হলো কাদারিয়া সম্প্রদায়ের। ইমাম হাসান আল বসরী (মৃত্যু ৭২৮ খ্রি:) এ মতবাদের উদ্যোক্তা হলেও মাবাদ আল জুহানী (মৃত্যু ৬৯৯ খ্রি:) প্রথমে কাদারিয়া মতবাদ প্রচার শুরু করেন। কাদারিয়া মতবাদ উমাইয়া শাসকদের বিপক্ষে যাওয়ায় উমাইয়া শাসকরা
এ মতবাদ প্রচারের পথ রুদ্ধ করতে সচেষ্ট হন। উমাইয়া খলিফা আব্দুল মালিকের প্ররোচনায় কাদারিয়া মতবাদের প্রচারক মাবাদ আল জুহানীকে হত্যা করা হয়। এরপর বিশিষ্ট কাদারিয়া চিন্তাবিদ ইউনুস আসওয়ারী ও খিলান দামেস্কী কাদারিয়া সম্প্রদায়ের বিকাশে আত্মনিয়োগ করেন। এক পর্যায়ে কাদারিয়া মতবাদ প্রচারের জন্য খিলান দামেস্কীকেও
হত্যা করা হয়।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, কাদারিয়া চিন্তাবিদরা অনেকটাই উগ্রপন্থি। তারা মানুষকে শক্তি স্বাধীনতার স্বেচ্ছাচারিতা প্রদান করে আল্লাহর অপরিসীম শক্তি খর্ব করেন। সুতরাং জাবারিয়া সম্প্রদায়ের প্রতিক্রিয়াস্বরূপ কাদারিয়া সম্প্রদায়ের উদ্ভব ঘটে।