আল্লাহর গুণাবলি সম্পর্কে মুতাজিলাদের মতবাদ লেখ।

অথবা, আল্লাহর সিফাত সম্পর্কে মুতাজিলাদের মতবাদ লেখ।
অথবা, আল্লাহর গুণাবলি সম্পর্কে মুতাজিলাদের মতবাদ কী?
অথবা, আল্লাহর সিফাত সম্পর্কে মুতাজিলারা কী বলেন?
অথবা, মুতাজিলাদের মতে আল্লাহর গুণাবলি কিরূপ?
অথবা, মুতাজিলাদের মতানুসারে আল্লাহর গুণাবলি সংক্ষিপ্তভাবে বর্ণনা কর।
উত্তর৷ ভূমিকা :
ঊনবিংশ শতাব্দীতে মুতাজিলা সম্প্রদায়ের যুক্তিবাদিতা ও উদারনৈতিক চিন্তাধারা বহু পাশ্চাত্য চিন্তাবিদ বিশেষত ইউরোপীয় চিন্তাবিদদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। মুতাজিলা সম্প্রদায়ের প্রতিষ্ঠাতার মূল ছিলেন ওয়াসিল বিন আতা এবং আমর ইবনে উবায়েদের চিন্তাধারা। উভয়েই আল্লাহর গুণাবলি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেন।
আল্লাহর গুণাবলি সম্পর্কে মুতাজিলাদের মত : ইসলামে আল্লাহর একত্বের উপর সর্বাধিক গুরুত্ব দেয়া হয়ে থাকে। কলেমার প্রথম অংশ হলো ‘নেই কোন ইলাহা আল্লাহ ছাড়া। অর্থাৎ আল্লাহ এক ও অদ্বিতীয়। তাঁকে কোন কিছুর সাথে তুলনা করা যায় না। আর তাই ইসলামে দ্বৈতবাদের কোন স্থান নেই। মুতাজিলারা আল্লাহর একত্বকে বুদ্ধির মাধ্যমে প্রমাণ করতে চান। তাদের মতে, আল্লাহর গুণাবলি পৃথক কোন সত্তা নয়। তার সারসত্তা স্বয়ংসম্পূর্ণ এবং তার কোন পৃথক গুণের প্রয়োজন পড়ে না। আল্লাহ যদি তাঁর সারসত্তা থেকে পৃথক হয় তাহলে এ গুণাবলি সহনিত্য বা অনিত্য হয়। এক্ষেত্রে দুটি জিনিস অর্থাৎ একটি আল্লাহ্ ও অপরটি তার গুণাবলি নিত্য হবে। এর অর্থ হলো নিত্যতা পরমসত্তার একমাত্র পার্থক্যকারী উপাদান নয়। পবিত্র কুরআনে বলা হয়েছে “আল্লাহ সবগুণের অধিকারী”। পবিত্র কুরআনে আল্লাহর অসংখ্য গুণাবলির কথা বলা হয়েছে। কুরআনে আরো বলা হয়েছে, পৃথিবীর সমস্ত বৃক্ষকে যদি কলম বানান হয়, পৃথিবীর
সমস্ত সাগর, মহাসাগর ও নদ-নদীর পানিকে যদি কালি বানান হয় এবং এগুলো দিয়ে যদি আল্লাহর গুণাবলি লিপিবদ্ধ করা হয় তাহলে তার গুণাবলি লিখে শেষ করা যাবে না। মুতাজিলা চিন্তাবিদগণ আল্লাহর সমস্ত গুণাবলিকে তাঁর জ্ঞান এবং ক্ষমতার মধ্যে সীমাবদ্ধ করেন।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, আল্লাহ এক ও অদ্বিতীয়। তাঁর কোন শরীক নেই। তাঁরnগুণাবলি ও তাঁর সত্তা এক ও অভিন্ন । পবিত্র কুরআনে আল্লাহর অসংখ্যগুণাবলির কথা বলা হয়েছে। সুতরাং আল্লাহর গুণাবলির গুরুত্ব অপরিসীম।