আত্মবিলাপ ’ কবিতার সারমর্ম লিখ

“মানুষ আশাবাদী, তার জীবন আশার উপর নির্ভর করে। কিন্তু, আশা ছলনাময়ী হতে পারে, সে মানুষকে সতত প্রতারিত করে। এই ছলনাময়ী আশার কুহেলিতে পড়ে, হতভাগ্যবঞ্চিত ও প্রতারিত হয়। এই ছলনায় মানুষ হারিয়ে ফেলতে পারে তার মূল্যবান জীবন এবং সময়।

মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত ব্যক্তিগত জীবনে উচ্চাশার বশবর্তী হয়ে নিজ দেশ, ধর্ম, সংস্কৃতি ও ভাষা পরিত্যাগ করে ভিন্ন ধর্ম, সংস্কৃতি ও ভাষাকে বরণ করেছিলেন। কিন্তু, অচিরেই তাঁর ভুল ভেঙে যায়, এবং তিনি মর্মে মর্মে বুঝতে পারেন যে তাঁর এ উচ্চাশা পোষণ অনুচিত ছিল। মধুসূদন নিজের ভুল বুঝতে পেরে আবার স্বদেশে ফিরে এসে মাতৃভাষায় সাহিত্যচর্চা শুরু করেন। এই সাহিত্যচর্চার মধ্যেই তিনি ‘আত্মবিলাপ’ কবিতাটি রচনা করে আশারূপী ছলনাময়ীর মুখোশ উন্মোচন করেছেন।

খ্যাতি, ধন, এবং প্রতিপত্তির আশায় মানুষ তার মহামূল্যবান সময় অপচয় করে ফেলতে পারে। মানুষ উচ্চাকাঙ্ক্ষার বশবর্তী হয়ে ছলনাময়ী আশার পিছনে ছুটতে পারে, কিন্তু এর পরিণাম হতাশা হতে পারে। তাই, হতাশা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য সবাইকে সজাগ হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। কারণ হতাশা থেকে মুক্ত হতে না পাওয়ার সময়ে জীবন ব্যর্থ ও মূল্যহীন হতে পারে।”

এটি চাইলে নিচের মতো করে পয়েন্ট আকারে লিখতে পারেন:

‘আত্মবিলাপ’ কবিতার সারসংক্ষেপ:

কবিতাটির মূল ভাব:

  • কবি কামনার বশে ভুল করেছেন এবং এখন তার ফল ভোগ করছেন।
  • তিনি বুঝতে পেরেছেন যে কামনা একটি মিথ্যা আশার ছল এবং এটি তাকে শুধুমাত্র দুঃখ এবং বেদনায় ডুবিয়েছে।
  • কবি এখন অনুতপ্ত এবং তিনি তার কৃতকর্মের জন্য ঈশ্বরের কাছে ক্ষমা চাইছেন।

কবিতার প্রধান উপাদান:

  • প্রতীক: কবি বিভিন্ন প্রতীক ব্যবহার করেছেন যেমন ‘মরীচিকা’, ‘পতঙ্গ’, ‘ধীবর’, ‘অম্বুবিম্ব’, ‘স্বপ্ন-সুখ’ ইত্যাদি ।
  • রূপক: কবি জীবনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরার জন্য রূপক ব্যবহার করেছেন ।
  • অলংকার: কবিতাটিতে অনেক অলংকার ব্যবহার করা হয়েছে যেমন উপমা, রূপক, ব্যঞ্জনা ইত্যাদি ।

কবিতার শেষ ভাগে কবি যা বুঝতে পেরেছেন:

  • কামনা একটি অনন্ত পিপাসা যা কখনোই পূরণ হয় না ।
  • ভোগবাদী জীবন শুধুমাত্র দুঃখ এবং বেদনায় ডুবিয়ে ।
  • ঈশ্বরের প্রতি বিশ্বাস এবং ভক্তি ই জীবনের মূল লক্ষ্য ।

‘আত্মবিলাপ’ কবিতাটি বাংলা সাহিত্যের একটি অমূল্য রত্ন। এটি কবির গভীর অনুভূতি এবং চিন্তাভাবনার প্রকাশ।

কিছু গুরুত্বপূর্ণ লাইন:

  • “নারিলি হরিতে মণি, দংশিল কেবল ফণী”
  • “কে না জানে অম্বুবিম্ব অম্বুমুখে সদ্যঃপাতি?”
  • “মরীচিকা মরুদেশে, নাশে প্রাণ তৃষা ক্লেশে”
  • “পতঙ্গ যে রঙ্গে ধায়, ধাইলি অবোধ, হায়!”
  • “ফিরি দিবে হারাধন কে তোরে, অবোধ মন, হায়রে”