
ডিগ্রী অনার্স মাস্টার্স পরীক্ষার রকেট স্পেশাল সাজেশন পেতে পেতে Whatsapp এ ম্যাসেজ করুন। Whatsapp 01979786079
১৯০৬ সালে মুসলিম লীগের গঠন আলোচনা কর।
admin
- 0
অথবা, ১৯০৬ সালে মুসলিম লীগ গঠন সম্পর্কে যা জান লিখ ।
উত্তর৷ ভূমিকা : ব্রিটিশ শাসনামলের শুরুতেই মুসলমানদের প্রতি সরকারের বৈষম্যমূলক নীতি প্রস্ফুটিত হয়ে ওঠে। উনিশ শতকে মুসলমান সমাজ ভারতের মূল জাতীয় প্রবাহ থেকে বিচ্ছিন্ন ছিল। ব্রিটিশ সরকারের বৈষম্যমূলক নীতির কারণে হিন্দু-মুসলমান সম্প্রদায় পারস্পরিক বিরোধে জড়িয়ে পড়ে এবং এ দুই সম্প্রদায় পৃথকভাবে তাদের রাজনৈতিক অধিকার আদায়ের জন্য আন্দোলন শুরু করে। এ অবস্থার প্রেক্ষাপটে মুসলমানদের দাবি ও অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে ১৯০৬ সালে মুসলিম লীগের আত্মপ্রকাশ ঘটে। |
মুসলিম লীগ গঠন : ব্রিটিশ শাসনামলের শুরুতেই হিন্দুরা ইংরেজ শাসনকে সাধুবাদ জানান এবং পাশ্চাত্য শিক্ষা সংস্কৃতি গ্রহণ করে নিজেদের অবস্থার উন্নতি করে। মুসলমান সমাজ ধীরে ধীরে দরিদ্র, অশিক্ষিত ও পশ্চাৎপদ হতে থাকে। আলীগড় আন্দোলনের মাধ্যমে প্রথম মুসলমানদের পৃথকভাবে অধিকার সচেতন করে তোলা হয়। ১৮৮৫ সালে ভারতে অসাম্প্রদায়িক প্রতিষ্ঠান হিসেবে কংগ্রেস প্রতিষ্ঠিত হলেও একচেটিয়াভাবে হিন্দুদের স্বার্থে কাজ করতে থাকে। পরবর্তীতে ১৯০৫ সালের বঙ্গভঙ্গ ও তৎপরবর্তী সময়ে বঙ্গভঙ্গ বিরোধী আন্দোলন সৃষ্টি হয়। বঙ্গভঙ্গ বিরোধী আন্দোলনই মুসলিম লীগ প্রতিষ্ঠায় মুসলিম নেতৃবৃন্দকে সবচেয়ে বেশি আন্দোলিত করে। নবাব স্যার সলিমুল্লাহ মুসলমানদের স্বার্থ সংরক্ষণের জন্য প্রশংসনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করেন। তিনি উপলব্ধি করেন যে, মুসলমানদের মধ্যে সংহতি ও ঐক্য স্থাপন এবং তাদের উন্নতি সাধনের জন্য একটি রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান দরকার। তিনি এ উপলব্ধি বাস্তবায়নের জন্য ১৯০৫ সালের ১৬ অক্টোবর ঢাকায় নর্থব্রুক হলে অনুষ্ঠিত এক সভায় মুসলমানদের স্বার্থ সংরক্ষণের লক্ষ্যে প্রাদেশিক মুসলিম সংঘ প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি ‘সর্বভারতীয় মুসলিম সংঘ’ নামক একটি রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার পরিকল্পনা করেন। ১৯০৬ সালে ব্রিটিশ সরকার নতুনভাবে শাসন সংস্কার চালু করার বিষয় বিবেচনা করে। এক্ষেত্রে মুসলমানরা সক্রিয়ভাবে রাজনীতিতে অংশগ্রহণের ইচ্ছা পোষণ করে। সিমলায় অনুষ্ঠিত বড় লাট লর্ড মিন্টোর সাথে মুসলমান প্রতিনিধিদের এক সাক্ষাৎকারে তাদের পৃথক নির্বাচনের অধিকার ও আইনসভায় তাদের সংখ্যা অনুযায়ী প্রাপ্য আসনের চেয়ে বেশি আসন দেওয়ার দাবি জানানো হয়। ১৯০৬ সালের ৩০ ডিসেম্বর ঢাকায় নিখিল ভারত মুসলিম শিক্ষা সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ভারতের বিভিন্ন প্রদেশ থেকে প্রায় আট হাজার প্রতিনিধি এ সম্মেলনে যোগদান করে। এ সম্মেলনে নবাব সলিমুল্লাহ ‘নিখিল ভারত মুসলিম লীগ’ নামক একটি রাজনৈতিক সংগঠন স্থাপনের প্রস্তাব করেন। এ প্রস্তাব সমর্থন হলে ১৯০৬ সালের ৩১ ডিসেম্বর ঢাকায় মুসলিম লীগের আত্মপ্রকাশ ঘটে। আর. সি. মজুমদার তার গ্রন্থে মন্তব্য করেছেন এভাবে, “হিন্দুদের মধ্যে বঙ্গভঙ্গ বিরোধী আন্দোলন প্রচণ্ডভাবে দানা বেঁধে ওঠে এবং কংগ্রেস তাদের (হিন্দুদের) স্বার্থের প্রতি সমর্থন জানায়। মুসলমানরা উপলব্ধি করেন যে, হিন্দুদের রাজনৈতিক সংগঠনের বিশেষ করে কংগ্রেসের মোকাবিলা করতে হলে মুসলমানদের নিজস্ব কেন্দ্রীয় সংগঠন থাকা উচিত।” তা
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায়, ভারতীয় উপমহাদেশে মুসলিম লীগের অভ্যুদয় ছিল একটি গতি পরিবর্তনকারী ঘটনা। মুসলিম লীগ ছিল ভারতীয় উপমহাদেশে মুসলমানদের স্বার্থ রক্ষার একমাত্র রাজনৈতিক সংগঠন। কংগ্রেস গঠনের শিক্ষা থেকেই মুসলমানরা আলাদা জাতি হিসেবে টিকে থাকার জন্য, দাবি আদায়ের জন্য ১৯০৬ সালের ৩১ ডিসেম্বর সর্বভারতীয় মুসলিম লীগ প্রতিষ্ঠা করে।