অর্জিত মর্যাদা কী?
অথবা, অর্জিত মর্যাদা বলতে কী বুঝ?
অথবা, অর্জিত মর্যাদা কাকে বলে?
অথবা, অর্জিত মর্যাদা বিষয়টি কী?
অথবা, অর্জিত মর্যাদার সংজ্ঞা দাও।
উত্তরায় ভূমিকা : মানবজীবনে মর্যাদা একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। প্রত্যেকে স্বীয় মর্যাদার ব্যাপারে সচেতন। মানুষ সামাজিক জীব। আর এ মর্যাদা হলো সমাজের সৃষ্টি। সমাজের সদস্য হিসেবে প্রত্যেক মানুষেরই একটা সামাজিক পরিচিতি বা সামাজিক অবস্থান রয়েছে। আর এ সামাজিক পরিচিতি বা অবস্থানই হলো মর্যাদা।
অর্জিত মর্যাদা : যে মর্যাদা মানুষ তার ব্যক্তিগত গুণাবলি এবং কীর্তিকলাপের দ্বারা অর্জন করে তাকে অর্জিত মর্যাদা বলে। এরূপ মর্যাদা অর্জনের পিছনে ব্যক্তিগত যোগ্যতা, দক্ষতা, উদ্যোগ, কর্মক্ষমতা, কর্মপ্রচেষ্টা, প্রতিভা প্রবণতা, অন্তর্নিহিত সম্ভাবনা ইত্যাদি বিদ্যমান থাকে। আধুনিক সমাজে অর্জিত মর্যাদার গুরুত্ব ও প্রাধান্য অত্যধিক। এ প্রকার
মর্যাদাকে বর্তমানে অধিক মূল্যায়ন করা হয়। ব্যক্তি ও সমাজভেদে অর্জিত মর্যাদার তারতম্য দেখা যায়। যেমন-সবাই সমান প্রতিভা ও বিদ্যা বুদ্ধির অধিকারী হয় না। কিংবা সবার ব্যক্তিগত গুণাবলি বিকাশ সমান হয় না অথবা প্রত্যেকের দক্ষতা যোগ্যতা কর্মপ্রচেষ্টা সমান নয়। এ কারণেই সবাই একরূপ মর্যাদার অধিকারী হতে পারে না। সমাজে কেউ ডাক্তার, কেউ শিক্ষক, কেউ আইনজীবী, কেউ গায়ক, কেউ শ্রমিক ইত্যাদি। আধুনিক যুগ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির যুগ। এ যুগের সমাজে ব্যক্তিগত প্রতিভা ও কর্মপ্রচেষ্টা বিকাশের সুযোগ যত বেশি উন্মুক্ত এবং অনুকূল, সে সমাজ জ্ঞানবিজ্ঞানে ও প্রযুক্তি বিদ্যায় তত অগ্রবর্তী। আর এরূপ সমাজই উন্নত ও সমৃদ্ধ। এ ধরনের সমাজে ব্যক্তির অর্জিত মর্যাদার গুরুত্ব অত্যধিক।
উপসংহার : উপর্যুক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায় যে, মর্যাদা মানবজীবনের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এর জন্য মানুষের আকুতির শেষ নেই। মর্যাদা মানুষের জীবনের একটি সামগ্রিক বিষয়। মানুষ দুটি উপায়ে মর্যাদা লাভ করে থাকে। সে মর্যাদা মানুষ ব্যক্তিগত কীর্তিকলাপের বা ব্যক্তিগত গুণাবলির মাধ্যমে অর্জন করে থাকে তাই অর্জিত মর্যাদা। অর্থাৎ বলা যায়, অর্জিত মর্যাদা মানবজীবনের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও মূল্যবান বিষয়।