রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্ব বলতে কী বুঝ?
অথবা, রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্বের সংজ্ঞা দাও।
অথবা, রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্ব কী?
অথবা, রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্ব কাকে বলে?
উত্তর৷ ভূমিকা : রাষ্ট্রবিজ্ঞানে কর্তৃত্ব একটি উল্লেখযোগ্য বিষয় হিসেবে পরিগণিত হয়। যে কোন রাজনৈতিক ব্যবস্থায় কর্তৃত্ব বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। রাজনৈতিক ক্ষমতার প্রয়োগ সহজ ও সাবলীল করার জন্য কর্তৃত্ব অপরিহার্য। কর্তৃত্বের অভাবে রাজনৈতিক ব্যবস্থায় অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়। শুধু রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান নয় সমাজের অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের
কার্যনির্বাহের অব্যাহত পরিচালনার কর্তৃত্ব উলেখযোগ্য Role play করে। মূলত পরিবার থেকে শুরু করে রাষ্ট্রযন্ত্রের মতো বৃহৎ পরিসরেও কর্তৃত্বের সাবলীল ও যথাযথ ভূমিকা পরিলক্ষিত হয়।
রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্ব : রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্ব বলতে রাষ্ট্রের ক্ষমতা প্রয়োগের অধিকারকে বুঝায়। রাষ্ট্রকে ক্ষমতার আধার বলা হয়। আর রাষ্ট্র মূলত বৈধ । কেননা গণমানুষের প্রত্যক্ষ সমর্থনের মাধ্যমে রাষ্ট্রে একটি নির্দিষ্ট সরকার গঠিত হয় এবং সরকারি কর্তৃপক্ষ গণমানুষের কল্যাণের স্বার্থে ও রাষ্ট্রের শৃঙ্খলা ও কর্মপ্রবাহের সচলতার স্বার্থে তারা ক্ষমতার প্রয়োগ করে থাকে ।
প্রামাণ্য সংজ্ঞা : বিভিন্ন মনীষী রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্বকে বিভিন্নভাবে সংজ্ঞায়িত করেছেন, যা নিম্নরূপ :
অধ্যাপক ম্যাকাইভার (Prof. MacIver) এর মতে, “রাজনৈতিক কর্তৃত্ব বলতে বুঝায় কোন সামাজিক ব্যবস্থার প্রতিষ্ঠিত অধিকারকে। নীতিনির্ধারণের অধিকার, সংশিষ্ট বিষয়াদির বেলায় সিদ্ধান্ত প্রদানের অধিকার এবং বিরোধ মীমাংসার অধিকার।”
ম্যাক্স ওয়েবার (Max Weber) এর মতে, “রাজনৈতিক কর্তৃত্ব মূলত ক্ষমতা ও বৈধতার অপূর্ব সমন্বয়। আর বৈধতা বলতে নাগরিকদের মূল্যবোধের সাথে সংগতি রক্ষা করে ক্ষমতা প্রয়োগের স্বীকৃতি বুঝায়।”
উপসংহার : উপর্যুক্ত সংজ্ঞাগুলোর আলোকে দেখা যায় যে, রাজনৈতিক ক্ষমতার বৈধ অবয়ব হলো রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্ব। আর রাষ্ট্র তার যথাযথ কর্তৃত্বের মাধ্যমে ক্ষমতার প্রয়োগ, নীতিনির্ধারণ, সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং বিভিন্ন সমস্যার উত্তরণের উলেখযোগ্য দিকনির্দেশনা প্রদান করে।