অথবা, মার্কসীয় তত্ত্বের সমালোচনাগুলো কী কী?
অথবা, সমালোচকরা মার্কস সম্পর্কে কী কী বলেছেন?
অথবা, মার্কসীয় তত্ত্ব কেন সমালোচিত?
উত্তর৷ ভূমিকা : যুগ যুগ ধরে দাসত্বের বা শোষণের শৃঙ্খলে আবদ্ধ শ্রমিক শ্রেণিকে মুক্ত করার প্রয়াসে আলোকবর্তিকারূপে হাজির হন জার্মান দার্শনিক কার্ল মার্কস। তিনি মূলত একজন অর্থনীতিবিদ ছিলেন। তাঁর লেখনীতে সমাজের বিবর্তন ও সমাজকাঠামো সম্পর্কে যে গভীর ধারণা পাওয়া যায় তা সমাজবিজ্ঞানের বিকাশের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ
ভূমিকা পালন করে।
মার্কসীয় তত্ত্বের সমালোচনা : এ পৃথিবীতে কোন কিছুই সমালোচনার ঊর্ধ্বে নয়। মার্কস বর্ণিত তত্ত্ব সমাজবিজ্ঞানে ব্যাপক গ্রহণযোগ্য প্রভাব ফেলেও এ সমালোচনার ঊর্ধ্বে যেতে পারে নি। এ সম্পর্কে নিম্নে আলোচনা করা হলো :
প্রথমত, মার্কসের ধারণা ছিল পুঁজিবাদী সমাজের ধ্বংস অবশ্যম্ভাবী কিন্তু পৃথিবীতে আজও অনেক পুঁজিবাদী সমাজ সফল ও সুশৃঙ্খলভাবে টিকে আছে।
দ্বিতীয়ত, মার্কস মানব ইতিহাসের যে বস্তুবাদী ব্যাখ্যা প্রদান করেছেন তা সম্পূর্ণ সত্য নয়। কারণ সমাজ পরিবর্তনের ধারায় অর্থনৈতিক উপাদানই একমাত্র উপাদান নয়। রাজনৈতিক, ধর্মীয়, সাংস্কৃতিক প্রভৃতি উপাদানও ইতিহাসের এ বিবর্তনে প্রভাব বিস্তার করেছে।
তৃতীয়ত, ধর্মীয় মূল্যবোধ নিয়ে তার ব্যাখ্যা স্বীকৃতি পায় নি। কেননা ধর্মকে কেন্দ্র করে শোষিত শ্রেণি ও ঐক্যবদ্ধ হতে পারে।
চতুর্থত, মার্কস শ্রেণি সংগ্রামকে সামাজিক পরিবর্তনের অন্যতম উপাদান বলে উলেখ করেন। কিন্তু শ্রেণি সংগ্রাম ছাড়াও যুগে যুগে বিভিন্ন সমাজসংস্কারক আইনের মাধ্যমেও সামাজিক উন্নতি সাধন করেছেন।
উপসংহার : উপর্যুক্ত আলোচনার শেষে বলা যায় যে, মার্কস এর বিভিন্ন তত্ত্ব তাঁর জীবদ্দশায় ও জীবনান্তে সমগ্র বিশ্বে আলোচিত হয়েছে। তিনি দরিদ্রদের জন্য বিপবী ভূমিকা পালন করেছেন। তাঁর বিভিন্ন গ্রন্থ ও তত্ত্ব সমাজবিজ্ঞানের উদ্ভব ও বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে সক্ষম হয়েছে।