প্রশ্নের উত্তর

ভিখুর অতীত জীবনের বর্ণনা দাও।

উত্তর : মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত ‘প্রাগৈতিহাসিক’ গল্পে ভিখু নদীর কাছে বিনু মাঝির বাড়ির পাশে মাসিক আট আনার ভাঙা চালা ভাড়া নেয়। নিজের হাতে রান্না করে খাওয়ার ফলে তার শরীর অনেকটা ভালো হয়ে যায়। পেট ভরে খেয়ে ভিখু বটগাছটায় হেলান দিয়ে আরাম করে বিড়ি টানে— এসময়ে পিছনে ফেলে আসা ঘটনাবহুল জীবন ভিখুকে নস্টালজিয়ায় ভোগায়। নার।

সঙ্গবিহীন জীবন তার কাছে নিরুৎসব এবং নিরুত্তাপ মনে হয়। তার স্মৃতিতে ভর করে অতীত উদ্দাম দিনের কথা। তাড়ির দোকানে
ভাঁড় ভাঁড় তাড়ি খেয়ে হল্লা করতো, স্ত্রীর সামনে স্বামীকে মারধর করা, টলতে টলতে বাসির ঘরে গিয়ে উন্মুক্ত রাত্রি যাপন করতো, আর মাঝে মাঝে দল বেঁধে গৃহস্থ বাড়ি চড়াও হয়ে সকলকে মেরে-বেঁধে টাকা গহনা লুট করে আনার দৃশ্য আজও তার চোখে ভাসে। তার ডাকাত দলের অনেকে একাধিকবার ধরা পড়লেও সে একবারের বেশি ধরা পড়েনি। তারপর সে একবার জেলের প্রাচীর ডিঙিয়ে হাতের বালা পালিয়ে এসেছিল। দিনেদুপুরে পুকুর পাড়ে গৃহস্থ বউয়ের মুখ চেপে ধরে গলার হার, কেড়ে নেওয়া, রাখুর বউকে জোর।

করে হাতিয়ার দ্বীপে তুলে নিয়ে যাওয়ার দৃশ্য আজও স্পষ্টভাবে সে স্মরণ করে। সুতরাং, বলা যায় আদিম উন্মত্তায় ভিখুর প্রথম জীবন ছিল ভীষণ দুঃসাহসী এবং বেপরোয়া।

হ্যান্ডনোট থেকে সংগ্রহীত

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!