
ডিগ্রী অনার্স মাস্টার্স পরীক্ষার রকেট স্পেশাল সাজেশন পেতে পেতে Whatsapp এ ম্যাসেজ করুন। Whatsapp 01979786079
ভাষা আন্দোলনের পটভূমি সংক্ষেপে ব্যাখ্যা কর।
admin
- 0
অথবা, ভাষা আন্দোলনের প্রেক্ষাপট সংক্ষেপে আলোচনা কর।
উত্তর৷ ভূমিকা : ১৯৪৭ সালের আগস্ট মাসে দ্বিজাতিতত্ত্বের উপর ভিত্তি করে এক হাজার মাইলের ব্যবধানে পূর্ব ও পশ্চিম অংশের সমন্বয়ে পাকিস্তান নামক এক রাষ্ট্রের জন্ম হয়। ১৯৪৮ সালে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা বাংলা না উর্দু হবে সে ব্যাপারে পূর্ব ও পশ্চিম অংশের মধ্যে মতদ্বৈততা শুরু হয়। ফলশ্রুতিতে পূর্ব পাকিস্তানে শুরু হয় ভাষা আন্দোলন।
ভাষা আন্দোলনের পটভূমি : নিচে ভাষা আন্দোলনের পটভূমি সংক্ষেপে আলোচনা করা হলো :
১. মুসলিম লীগের অধিবেশনে ভাষা বিতর্ক : ১৯০৬ সালে নবাব ভিকারুল মুলকের সভাপতিত্বে ঢাকায় অনুষ্ঠিত এক সভায় মুসলিমদের প্রতিনিধিত্বকারী দল মুসলিম লীগ গঠন করা হয়। মুসলিম লীগের অধিবেশনে বাংলা না উর্দুকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা করা হবে সে ব্যাপারে মতদ্বৈততা দেখা দেয়। তবে সমস্যা তখন তত প্রকট আকার ধারণ করেনি।
২. মুহম্মদ আলী জিন্নাহর উদ্যোগ : ১৯৩৭ সালের নির্বাচনে মুসলিম লীগ সাফল্য পাওয়ার পর দলের সভাপতি মুহম্মদ আলী জিন্নাহ উর্দুকে দলের দাপ্তরিক ভাষা করার উদ্যোগ গ্রহণ করেন। বাংলা ভাষার বিরুদ্ধে এরূপ ষড়যন্ত্র বাংলার বাঘ শেরে বাংলা একে ফজলুল হকের বিরোধিতার কারণে সম্পূর্ণ ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়।
৩. ১৯৪০ সালের লাহোর প্রস্তাবের প্রাক্কাল : ১৯৪০ সালের লাহোর প্রস্তাবের প্রাক্কালে কংগ্রেস নেতৃবৃন্দ হিন্দিকে ভারতের রাষ্ট্রভাষা করার ব্যাপারে উদ্যোগ গ্রহণ করে। মুসলিম লীগ নেতৃবৃন্দ এ প্রস্তাবের বিরোধিতা করে এবং উর্দুকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা তথা ভারতবর্ষের রাষ্ট্রভাষা করার পক্ষে উদ্যোগ গ্রহণ করে। তৎকালীন পূর্ব বাংলার মুসলিম লীগের সভাপতি আবুল হাশিম বাংলাকে উর্দুর পাশাপাশি রাষ্ট্রভাষা করার পক্ষে উদ্যোগ গ্রহণ করেন।
৪. গণআজাদী লীগ ও তমদ্দুন মজলিশ গঠন : ১৯৪৭ সালের জুলাই ও সেপ্টেম্বর মাসে কামরুদ্দীন আহমদকে আহ্বায়ক করে গণআজাদী লীগ ও আবুল কাশেমের নেতৃত্বে তমদ্দুন মজলিশ গঠন করা হয়। এ দুটি সংগঠন প্রতিষ্ঠার পিছনে উদ্দেশ্য ছিল বাংলাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার ব্যাপারে কাজ করা।
৫. মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর ঘোষণা : মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ ১৯৪৮ সালে ঢাকা সফরকালে রেসকোর্স ময়দান ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে উর্দুকে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা হিসেবে ঘোষণা করেন। ফলশ্রুতিতে শুরু হয় ভাষা আন্দোলন।
উপসংহার : সুতরাং আমরা বলতে পারি যে, পশ্চিম পাকিস্তানি শাসক শ্রেণির অনমনীয় মনোভাব, শোষণ, শাসন ও উর্দুকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা করার উদ্যোগই বাঙালি জাতিকে বিক্ষুব্ধ করেছিল । ফলশ্রুতিতে সংঘটিত হয়েছিল ভাষা আন্দোলন।