• March 28, 2023

ভাষা আন্দোলনের ঘটনাপ্রবাহ সংক্ষেপে ব্যাখ্যা কর।

অথবা, সংক্ষেপে ভাষা আন্দোলনের বিভিন্ন ঘটনাবলি মূল্যায়ন কর।
অথবা, ভাষা আন্দোলনের বিভিন্ন পর্যায় সংক্ষেপে ব্যাখ্যা কর।
উত্তর৷ ভূমিকা :
বাঙালির গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাসে ভাষা আন্দোলন এক গুরুত্বপূর্ণ সংযোজন। ১৯৪৭ সালে সৃষ্ট পাকিস্তানের পূর্ব অংশ তথা বর্তমান বাংলাদেশের মধ্যে সংঘটিত এ আন্দোলন বাঙালির মনে বপন করেছিল স্বাধীনতা তথা পৃথক মাতৃভূমির বীজ। এ আন্দোলন একদিনে সংঘটিত হয়নি বরং কয়েকটি ধাপে এটা চূড়ান্ত পরিণতি লাভ করেছিল।
ভাষা আন্দোলনের ঘটনাপ্রবাহ : নিচে ভাষা আন্দোলনের ঘটনাপ্রবাহ সংক্ষেপে আলোচনা করা হলো :
১. ১৯৪৭ সাল পর্যায় : ১৯৪৭ সালের জুলাই মাসে কামরুদ্দীন আহমেদের নেতৃত্বে গণআজাদী লীগ ও সেপ্টেম্বর মাসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞানের শিক্ষক অধ্যাপক আবুল কাশেম এর নেতৃত্বে তমদ্দুন মজলিশ গঠিত হয়। এ সংগঠন দুটির উদ্দেশ্য ছিল বাংলাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করা। এ বছরই আলীগড়
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক জিয়াউদ্দিন আহমদ উর্দুকে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা করার পক্ষে মতামত প্রদান করেন।
২. ১৯৪৮ সাল পর্যায় : ১৯৪৮ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি কংগ্রেসের সদস্য ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত গণপরিষদের এক অধিবেশনে বাংলাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করার দাবি জানান। কিন্তু অন্যান্য সদস্যদের বিরোধিতার কারণে তা বাতিল হয়ে যায়। এর প্রতিবাদে ২৬ ও ২৯ মার্চ ঢাকার সমস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ধর্মঘট পালন করা হয়। ১১ মার্চ ১৯৪৮
সালে শেখ মুজিবুর রহমান, শামসুল আলমসহ অনেককে হরতাল পালনকালে গ্রেপ্তার করা হয়। ১৯৪৮ সালের ২৪ মার্চ
কার্জন হলে মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ উর্দুকে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা হিসেবে ঘোষণা করেন। এর প্রতিবাদে ছাত্ররা ‘না’,‘না’ ধ্বনি উচ্চারণ করেছিল।
৩. ১৯৪৯-৫১ পর্যায় : ১৯৪৯-৫১ সালে বাংলা ভাষা নিয়ে নতুন করে ষড়যন্ত্র শুরু হয়। আরবি হরফে বাংলা লেখা প্রচলনের এক অদ্ভুত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। মওলানা আকরাম খাঁর নেতৃত্বে একটি কমিটি এ ব্যাপারে কাজ করতে থাকে। কিন্তু পূর্ব বাংলায় এর বিরুদ্ধে প্রবল আন্দোলন গড়ে উঠে।
৪. ১৯৫২ সাল পর্যায় : ১৯৫২ সালের প্রথম দিকে খাজা নাজিমুদ্দিন উর্দুকে পুনরায় পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা হিসেবে ঘোষণা করেন। ফলশ্রুতিতে ৩১ জানুয়ারি সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ গঠন করা হয়, যারা ২১ ফেব্রুয়ারি প্রদেশব্যাপী হরতাল পালনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। ২১ ফেব্রুয়ারি ঢাকা মেডিকেল কলেজের সামনে জনতার মিছিলে। পুলিশের গুলিতে রফিক, শফিক ও বরকত শাহাদত বরণ করেন। ২২ ফেব্রুয়ারি শহিদ হন শফিউর রহমান, আওয়াল ও নাম না জানা এক বালক। ২৪ ফেব্রুয়ারি ড. সাঈদ হায়দারের নকশাতে মেডিকেল কলেজের সামনে শহিদমিনার নির্মাণ
করা হয়।
উপসংহার : পরিশেষে আমরা ভাষা আন্দোলনের ঘটনাপ্রবাহ বিশ্লেষণের মাধ্যমে এ সিদ্ধান্তে উপনীত হতে পারি যে, ১৯৪৭ সালে ভাষা আন্দোলনের সূত্রপাত হয়, যার চূড়ান্ত পরিণতি ঘটে ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি।

https://topsuggestionbd.com/%e0%a6%aa%e0%a6%9e%e0%a7%8d%e0%a6%9a%e0%a6%ae-%e0%a6%85%e0%a6%a7%e0%a7%8d%e0%a6%af%e0%a6%be%e0%a6%af%e0%a6%bc-%e0%a6%ad%e0%a6%be%e0%a6%b7%e0%a6%be-%e0%a6%86%e0%a6%a8%e0%a7%8d%e0%a6%a6%e0%a7%8b/
পরবর্তী পরীক্ষার রকেট স্পেশাল সাজেশন পেতে হোয়াটস্যাপ করুন: 01979786079

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!