
ডিগ্রী অনার্স মাস্টার্স পরীক্ষার রকেট স্পেশাল সাজেশন পেতে পেতে Whatsapp এ ম্যাসেজ করুন। Whatsapp 01979786079
বাঙালি দর্শনে সৈয়দ আবুল হোসেনের অবদান কী?
admin
- 0
অথবা, বুদ্ধির মুক্তি আন্দোলনের সদস্য হিসেবে সৈয়দ আবুল হোসেনের ভূমিকা কী?
অথবা, বুদ্ধির মুক্তি আন্দোলনের সদস্য হিসেবে সৈয়দ আবুল হোসেনের গুরুত্ব কী?
উত্তর।৷ ভূমিকা : উনিশ শতকে সারা বিশ্বে বিশেষ করে পাশ্চাত্যে জ্ঞানবিজ্ঞানের ব্যাপক প্রসার ঘটে। বিশ শতকের গোড়ার দিকে তার প্রভাবে বাংলাদেশে বা তৎকালীন পূর্ব বাংলায় এক প্রগতিশীল দার্শনিক আন্দোলন গড়ে উঠে যা বুদ্ধির মুক্তি আন্দোলন নামে পরিচিত। সৈয়দ আবুল হোসেন ছিলেন এ আন্দোলনের অন্যতম একজন সদস্য। তিনি তার চিন্তা ও মনন দ্বারা বাঙালির বৌদ্ধিক মুক্তির পথ নির্দেশ করে গেছেন।
বাঙালি দর্শনে সৈয়দ আবুল হোসেনের অবদান : বিশ শতকের শুরুর দিকে পশ্চাৎপদ বাঙালি সমাজের ধর্মীয় গোঁড়ামি, অন্ধবিশ্বাস ও কুসংস্কার দূরীকরণে যে কয়েকজন চিন্তাবিদ অসামান্য অবদান রেখেছেন সৈয়দ আবুল হোসেন তাদের মধ্যে অন্যতম। বাঙালি দর্শনে তার অবদান সম্পর্কে নিম্নে আলোচনা করা হলো :
১. যুক্তিবাদিতা : প্রগতিশীল ও যুক্তিবাদী লেখক আবুল হোসেন সবরকম কুসংস্কার থেকে মনকে মুক্ত রেখে স্বাধীনভাবে চিন্তা করে বাঙালি মুসলমানদের উন্নতির দিক নির্দেশ করেন! তিনি অন্ধ শাস্ত্রানুগ কাজের বিরোধী ছিলেন। তিনিও আব্দুল ওদুদের মতো যুক্তির উপর প্রতিষ্ঠিত সত্য গ্রহণ করতে বলেন। তিনি ধর্মীয় ও সামাজিক প্রতিটি বিষয়কে বিচারবিশ্লেষণের মাধ্যমে গ্রহণ করার পক্ষে মত দেন; কারণ বিচারহীন চিন্তাচেতনা কখনো সুফল বয়ে আনতে পারে না। বলে বিশ্বাস করতেন । এজন্য দরকার হয় মুক্ত বুদ্ধির । যুক্তিবাদি দৃষ্টিভঙ্গির কারণে ধর্মের অনেক বিষয়ের সাথে তিনি দ্বিমত পোষণ করেছেন।
২. উদারতাবাদ : আবুল হোসেন ছিলেন একজন উদারতাবাদী দার্শনিক। তিনি ধর্ম, বর্ণ বা অন্য কোন দৃষ্টিকোণ থেকে কোন বিষয়ের ব্যাখ্যা পছন্দ করতেন না। যে কারণে তার সাহিত্যে অসাম্প্রদায়িক চিন্তাভাবনার প্রকাশ ঘটেছে লক্ষণীয়ভাবে। এদেশের অসাম্প্রদায়িক সাহিত্য সংস্কৃতি রচনার পথিকৃৎ তিনি। তিনি সকলকে ‘একই স্রষ্টার সৃষ্টি’ এই দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখতেন। তিনি ব্রিটিশদের প্রগতিশীলতা অনুকরণের নির্দেশ দেন। যার কাছে যা ভালো আছে আমাদের তা গ্রহণ করা উচিত বলে তিনি মনে করতেন।
৩. মানবতাবাদ : বাঙালি দর্শনের অন্যান্য দার্শনিকদের মতো তার দর্শনও ছিল মানবতাবাদী। তিনি সমস্ত বাঙালি জাতির কল্যাণ চেয়েছিলেন বলে তিনি কোন ভেদাভেদকে স্বীকার করেননি। মুসলমানদের তুলনায় হিন্দুরা অধিক উন্নতি করায় তিনি পশ্চাদপদ মুসলমানদেরকে উন্নত করার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন। তিনি বলেন, “মুসলিম সাহিত্য সমাজ কোন এক বিশেষ গণ্ডির মধ্যে আবদ্ধ নয়, কিংবা কোন বিশেষ সাম্প্রদায়িক উদ্দেশ্য সিদ্ধির জন্য গঠিত হয়নি।”
উপসংহার : পরিশেষে আমরা বলতে পারি যে, মুসলিম সাহিত্য সমাজের সদস্য হিসেবে বাঙালি জাতির কল্যাণে আবুল হোসেন সারাজীবন কাজ করেছেন। তিনি তার সাহিত্য ও সংস্কৃতি চর্চার মধ্য দিয়ে ধর্মীয় গোঁড়ামি, অন্ধ বিশ্বাস, সাম্প্রদায়িকতা, কুসংস্কার দূরীকরণের চেষ্টা করেছেন। তিনি এমন এক প্রগতিশীল চিন্তা ধারা গঠনের কথা বলেন যার ভিত্তি হলো যুক্তিবাদিতা, উদারতা, মানবতা প্রভৃতি। বাঙালি দর্শনে তার অবদান অনস্বীকার্য।
পরবর্তী পরীক্ষার রকেট স্পেশাল সাজেশন পেতে হোয়াটস্যাপ করুন: 01979786079