General Knowledge

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পাঁচটি কারণ লিখ।

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পাঁচটি কারণ লিখ।
অথবা, কী কী কারণে মুক্তিযুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল? ব্যাখ্যা কর।
অথবা, বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধ সংঘটিত হওয়ার কয়েকটি কারণ সংক্ষেপে আলোচনা কর।
অথবা, ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের কয়েকটি কারণ সংক্ষেপে তুলে ধর।
উত্তর৷ ভূমিকা : ১৯৭১ সালে সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটে। বাংলাদেশ সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীনতাপ্রাপ্ত তৃতীয় বিশ্বের প্রথম দেশ। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের তুলনা ইতিহাসে বিরল। এ মুক্তিযুদ্ধের রাজনৈতিক গুরুত্ব অনেক। মুক্তিযুদ্ধ ছিল বাঙালির শত বছরের আত্ম অধিকার প্রতিষ্ঠা ও স্বাধীন চেতনার চূড়ান্ত
বহিঃপ্রকাশ এবং এর মাধ্যমে বাংলার রাজনৈতিক অঙ্গনে এক মহা ঐক্যের সূচনা ঘটে। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ এক গৌরবোজ্জ্বল ঘটনা। এদেশের ইতিহাসে মুক্তিযুদ্ধ আমাদের প্রেরণা শক্তি। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের কারণ : ১৯৭১ সালের বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ এদেশের সামাজিক ও রাজনৈতিকৎজীবনে এক অনন্য সংযোজন। এ যুদ্ধে জয়লাভের ফলেই বিশ্বের মানচিত্রে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটে।ৎবিভিন্ন আর্থসামাজিক ও রাজনৈতিক কারণে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ সংঘটিত হয়েছে। এর প্রধান কারণগুলো নিম্নে উল্লেখ
করা হলো :
১. ভৌগলিক কারণ : পূর্ব পাকিস্তান ও পশ্চিম পাকিস্তানের মধ্যকার ভৌগোলিক ব্যবধান এই দুই অঞ্চলে বৈষম্যের কারণ হয়। ভৌগোলিক দূরত্ব থাকলেও পশ্চিম পাকিস্তান পূর্ব পাকিস্তানের অধিবাসীদের নানাভাবে শোষণ করতো।
২. সামাজিক কারণ : দুই প্রান্তের অধিবাসীদের মধ্যে সামাজিক পার্থক্য বিরাজমান ছিল। এ সামাজিক কারণ মুক্তিযুদ্ধ সংগঠনে ভূমিকা রেখেছিল।
৩. অর্থনৈতিক বৈষম্য : পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের মধ্যে অর্থনৈতিক বৈষম্য বিরাজমান ছিল। এই অর্থনৈতিক বৈষম্য মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম কারণ।
৪. রাজনৈতিক ক্ষমতা : পূর্ব পাকিস্তানের আওয়ামী লীগ সংখ্যা গরিষ্ঠ আসন পেয়েও শাসন ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হতে পারেনি। এই ঘটনা এদেশের জনগণকে মুক্তিযুদ্ধে উদ্বুদ্ধ করেছিল।
৫. সাংস্কৃতিক কারণ : পূর্ব পাকিস্তানের অধিবাসীরা সাংস্কৃতিকভাবে বৈষম্যের স্বীকার হয়েছিল। পশ্চিম পাকিস্তানি শাসকরা বাংলাকে বাদ দিয়ে উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা করতে চেয়েছিল। রবীন্দ্র চর্চার ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণ আরোপ
করতে চেয়েছিল।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, পশ্চিম পাকিস্তানি শাসক গোষ্ঠী পূর্ব বাংলার বাঙালি জাতির উপর চরম বৈষম্য ও রাজনৈতিক নিপীড়ন শুরু করে। বাঙালি জাতিকে দমনের জন্য বিভিন্ন কূটকৌশল অবলম্বন করে। বৈষম্য ও নিপীড়নের প্রতিবাদে পূর্ব বাংলার মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে মুক্তি সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়ে। স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!